"আমারে ফিরায়ে লহো অয়ি বসুন্ধরে, কোলের সন্তানে তব কোলের ভিতরে"-শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সমসাময়িক বিষয়ে পরে আসি, আগে একটা সত্য গল্প শোনাই। ফ্রান্সে এক লোক নতুন এসেছে। কিছুদিন পরে তার মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট ফ্রি। তো সে মহাখুশি, দুইদিন পর পর ডক্টর দেখায়। বিড়ি-সিগারেট খায়।
চিন্তা করল দাঁত ক্লিন করাবে। সে গেলো ডেন্টিস্টের কাছে। যেহেতু ফ্রেঞ্চ ভাষা ফ্রেঞ্চদের কাছেও শক্ত ভাষা, সেহেতু নতুন যাওয়া সেই লোক তেমন ফ্রেঞ্চ কিছুই বুঝে না। চেম্বারে ডক্টরের কাছে যেয়ে কোন ভাবে শিখানো বুলি বলার মত বলল সে দাঁত ক্লিন করতে চায়। তারপরের ঘটনা হচ্ছে ডেন্টিস্ট তার দাঁত দেখে তাকে জিজ্ঞেস করল,
দাতে ব্যাথা?
-ওই
ডেন্টিস্ট আবার জিজ্ঞেস করল, দাঁত নড়ে?
-ওই
ডেন্টিস্ট শেষ বারের মত জিজ্ঞেস করল, দাঁত ফেলে দিব?
-ওই
সেই লোক শেষ বার 'ওই' বলামাত্র ডেন্টিস্ট মাড়ি অবশ করে তার দাঁত ফেলে দিল।
উঠে দাঁত না দেখে সে মহা খ্যাপা! ব্যাটা দাঁত ক্লিন করতে বলছি দাঁত ফেলে দিলি কেন? সে ডেকে আর বাঙালি ভাই বেরাদার যোগার করল। শেষে যারা ভাষা জানে তারা ডেন্টিস্ট কে জিজ্ঞেস করে জানল যে, ডেন্টিস্ট তাকে জিজ্ঞেস করেছে দাঁত ফেলার আগে, এবং সে সম্মতি দিয়ে 'ওই' বলেছে। আসল কথা হচ্ছে ফ্রেঞ্চ ল্যাংগুয়েজে "ওই" মানে "হ্যা" আর "ন" মানে "না", আর সেই বাঙালি এই দুইয়ের বেশি ফ্রেঞ্চ শব্দ জানত না।
এখানে দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র না বুঝে একটি মত দিয়ে ফেলার জন্য কিংবা ভাষা জ্ঞানের অভাবে সে দাঁত হারাল। এখন সমসাময়িক বিষয়ে আসি।
না বুঝে কিংবা বুঝেও না বুঝার ভান করে কে কে দাঁত হারাচ্ছেন আমাদের আশেপাশে।
আব্দুন নূর তুষারঃ
ছোট থাকতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তাকে দেখতাম 'শুভেচ্ছা' নামের একটা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান উপস্থাপন করতে। 'শুভেচ্ছা' বন্ধের পরে অনেকদিন তেমন মিডিয়াতে চান্স না পেলেও শাহবাগ মুভমেন্টের সময়ে বেশ কিছু ভিডিওতে শাহবাগের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে সবার প্রশংসা কুড়ালেন। হোম পেইজে কিছুদিন তার ছড়ানো ভিডিওর বিপ্লব ঘটে গেলো। কয়েকদিন আগে তার ইসলামী ব্যাংক ক্যালেংকারি দেখে ভাবলাম সে আর তেমন কি! পেট বাঁচাতে মানুষ আরও জঘন্য কাজ করে, সে তো মাত্র বেইমানী করেছে নিজের কথা দিয়ে।
ইসলামী ব্যাঙ্ক যেখানে তার ভাবমূর্তি ভালো করা এবং গ্রাহকের বিশ্বাস অর্জনের জন্যে মরিয়া হয়ে সেলেব্রেটিদের ব্রান্ডিংয়ের অংশ হিসেবে টাকা দিয়ে কিনছে, সেখানে টাকার কাছে নীতি বিকিয়ে দিলেন তুষার। একে একে জাতীয় বেঈমানদের মুখোশ খুলে যাচ্ছে।
আজকে তার ইসলামী ব্যাঙ্কে অনুষ্ঠান উপস্থাপনার বিষয়ে সে সাফাই গাইলো, হাস্যকর কিছু যুক্তি দেখাল। বোকার মত 'তারা আঙ্গুল চুষলে আমি কেন দন্ড চুষিব ন" ধরনের প্রশ্ন রাখল সবার কাছে। তিনি আর বললেন, পর্দার আড়ালে সে শুধু দৈহিক শ্রম দিয়ে ইসলামী ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করেছে মাত্র সে মন দিয়ে সমর্থন করেনি।
হাস্যকর বটে! তো শাহবাগ নিয়ে বাসি মুখে ভিডিও বের করার সময় ঋণের কথা কি তার মাথায় ছিল না? ব্যাপারটা এমন যে, "শয়তান তুই আমার দেহ পাবি, কিন্তু মন পাবি না। "
যাইহোক, একবার দাঁত চলে গেলে শত চেস্টাতেও সেই দাঁত আর দাতের জায়গায় বসানো যায় না। কোথায় আছে বুলেট আর মুখের কথা একবার বেরুলে তা আর ফিরিয়ে আনা যায় না। তুষার সাহেব, আপনাকেও জাতীয় বেঈমানের তালিকায় ফেলতে দ্বিধা করছি না আজ।
আন্দালিভ রহমান পার্থঃ
গতকাল বিজিপি নেতা আন্দালিভ শহীদ রুমি স্কোয়াডের অনশনকারীদের নিয়ে বলেন, "কোন ভালো ঘরের ছেলেমেয়ে অনশনের নাম করে রাতে একসাথে রাস্তায় ঘুমুতে পারে না।
" ছেলেমেয়ে গুলো দেশপ্রেম নিয়ে অনশন করে যাচ্ছে আর চোরের ছেলে আন্দালিভটুগেদার পার্থ নিজেকে জামায়াতের কাছে বিকিয়ে দিয়ে ক্ষ্যান্ত হননি, এখন এই অনশনের নামে তিনিও কুৎসা রটাতে ছারছেন না। তার মুখস্ত বুলিতে মুরিদ হওয়া ভক্তের তো অভাব নাই, নিশই এতক্ষনে তার ভক্তরাও পিরের বুলি আওড়ে যাচ্ছে। ওহে আন্দালিভটুগেদার, তুমিও আজ জাতীয় বেঈমান। তোমাকেও সময়ে চেনা গেলো। দাঁত তোমার আগেই গেছে, এখন বাকি গুলাও যাচ্ছে।
অমি রহমান পিয়ালঃ
পিয়াল ভাই তার নিতিতে ঠিক আছেন। তিনি একবার যা বলে ফেলেছেন, তা হালাল করতে ব্যাস্ত আছেন। সে জানে দাঁত আর দাঁতের জায়গায় লাগবে না, শুধু মানুষের মনে ভ্রান্ত ধারণার জন্ম দিয়ে দাঁতের ব্যাপারটা চাপা দেয়া যাক। সে এখনো বজলুল হুদার ভাতিজা বলে চিল্লায় গোলা ফাটাচ্ছে, অথচ শহীদ রুমি স্কোয়াডের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এখনো বজলুল হুদার ভাতিজাকে আবিস্কার করতেও পারলেন না, ক্ষমাও চাইলেন না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাথে আওয়ামী শক্তির মিশ্রণ ঘটালেও তার প্রতি শ্রদ্ধা ছিল, কিন্তু এখন সে যখন স্বার্থের জন্যে মাতালের মত বক্তব্য দিতে শুরু করল, সেই শ্রদ্ধাবোধ নাই।
দেশপ্রেম পুজি করে আজকে যারা ব্যাবসা করে নিল, তাদের যদি জাতীয় বেঈমান বলি, পিয়াল ভাইও যে সেই ক্যাটাগরি থেকে বাদ যান না! তবে পিয়াল ভাইয়ের দাঁতটা একটু ডিফ্রেন্ট ছিল, ডেন্টিস্ট হাফ তুলে বাকি হাফ মাড়ির সাথে ঝুলায় রাখছে।
আরও কে কে আছেন এই জাতিয় বেঈমানের তালিকায় তা আর কারো অজানা না। যে যার মত ভেবে নেন, সব কিছু কেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে ধরায় দিতে হবে? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।