হেঁটে হেঁটে যতদূর চোখ যায় আজকে হঠাৎ নিজের ব্লগার পরিসংখ্যানে দেখলাম আমি ৬ বছর ৩ দিন ধরে ব্লগিং করছি! এত দিন! আসলে সময় যেতে সময় লাগে না। আমার মত প্রবীণ ব্লগার আর কি কেউ আছে এখন? অবশ্য এটা ঠিক আমি কখনোই নিয়মিত ব্লগ লিখতে পারি নাই। তবে শুরুতে বেশ রেগুলারই পোস্ট দিতাম। আমার প্রথম পোস্ট ছিল ৬ জানুয়ারি ২০০৬ -তে। তখন আমি রাজশাহী থাকি।
রুয়েটে পড়ি। পদ্মার পাড়ে ঘুড়ি। বিভিন্ন পত্রিকায় ছোট গল্প লেখার চেষ্টা করি। দুই এক টাকা পাই। আর তা দিয়ে সাহেব বাজারে চিলিসে চিকেন বিরানি খাই!
সে সময়টা পর্যন্ত রাজশাহীতে হাতে গোনা কয়েকটা সাইবার ক্যাফে ছিল।
রুয়েটের কাছাকাছি কাজলাতে ছিল একটা। আমি প্রায়ই বিকেলে ওখানে একটু যাবার চেষ্টা করতাম। আসলে একটা ছোট ফটোকপির দোকানে তিনটা কম্পিউটার বসিয়ে ওটাকে সাইবার ক্যাফে বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। আজ এত বছর পর দোকানটার নাম ঠিক মনে আসছে না।
তখন পেন ড্রাইভ রাজশাহীতে একদম ছিল না বললেই চলে।
আমরা তখন ফ্লপি ডিস্ক ব্যবহার করতাম। ইন্টারনেটের লাইন ছিল অনেক স্লো, বলা যায়, এক পেজ লোড দিয়ে তার পুরোটা আসতে যে সময় লাগত সে সময়টাতে অনায়েসে এক ঘুম দিয়ে ওঠা যেত! এ কারণে রুমে বসে পোস্ট লিখে এনে সাইবার ক্যাফেতে বসে ব্লগে দিতাম। এছাড়া আরও একটা কারণও ছিল। এক ঘণ্টা ব্রাউজিং চার্জ ছিল ২০ টাকা। পকেটে টাকা আর নেটের গতি কোনটাই সন্তোষজনক ছিল না বলে রুমে বসে না লেখা ছাড়া আমার কোন উপায়ও ছিল না।
আর হালের ফোর জি বা ব্রডব্যান্ড কি জিনিস তা-ই তখন জানতাম না।
এমন কি স্টিকি পোস্ট কি তা নিয়েও আমার ধারণা স্বচ্ছ ছিল না। সেসময় আমার এক বন্ধু নুরুলের দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওর পরিবারের তার চিকিৎসার ভার বহন করার সামর্থ্য ছিল না। আমরা রুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তখন সমাজের নানান বিত্তবানদের কাছে হাত পেতে ছিলাম।
আমি এ নিয়ে একটা পোস্ট লিখেছিলাম। কিন্তু ওটা যে এই ব্লগে স্টিকি করা হয়েছিল এটাই আমি জেনেছিলাম কয়েকদিন পর। একদিন বিকেলে হাসিন ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, ‘তোমার স্টিকি পোস্টটার আপডেট দাও। ‘ প্রথমটায় আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না স্টিকি কি? পরে উনি বিষয়টা ব্যাখ্যা করলেন, সাইটের উপরে স্থায়ী পোস্ট যা কয়েকদিন নড়েচড়ে না! যাই হোক। ওই লেখার পর দেশ বিদেশের অনেকের সহযোগিতা পেয়েছিলাম।
ফলাফলে বন্ধু নুরুল এখন ভাল আছে।
বলতে বলতে অনেক কথাই বললাম। আসলে নস্টালজিয়া আজব এক জিনিস! যাই হোক। শুভ ব্লগিং! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।