ihzaka@yahoo.com হুপফূল মানসিক স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী.. কিছুটা বাদর কিছুটা নিরিহ কিসিমের! তবে, অনেক বড় স্বপ্ন দেখে এদেশটাকে নিয়ে, যেখানে একদল শিক্ষিত তরুন ঘূণে ধরা রাজনীতিকে সত্যিকারের পরিবর্তণের পথে চালিত করতে নোংরা, হিংস্র সামপ্রদায়িকতামুক্ত, প্রকৃত দেশপ্ তখন আমি ক্লাস থিরিতে পড়ি,
অজপাড়াগায়ের শেষ সীমানাটায় ছোট্ট একটা নদী, নদীর পারে বঅঅড় একটা বট গাছ। গাছটার ঠিক নীচেই তিন চার গায়ের ছেলেমেয়েদের একমাত্র শিক্ষালয় টিনশেড পিরাইমারি ইস্কুলঘর।
কিলাস ক্যাপ্টেন হিসেবে হুপুর তখন কি ভাবটাই না ছিল! নিজেকে কেমন নায়ক নায়ক মনে হত। পুরা কিলাস জুড়েই তার রাজত্ব। ক্লাসের সব ছেলে মেয়েরা তার কথায় উঠে বসে।
এমনকি অংকের মাতুব্বর আলী স্যারও প্রশ্নপত্র করা সোমায় তার পরামর্শ নেয়।
হাটের দিন প্রিয় হেডমাস্টার স্যার যখন অনেক মানুষের সামনে উচ্চস্বরে ডেকে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করত "কেমন পরীক্ষা দিচ্ছিসরে হুপু"? "তোর লেখাপড়া চলছে কেমন"? নিজেকে তখন কিইইইযে হিরো হিরো লাগত! মাথা উচু করে নিজেকে সবার কাছে আরেক্টু তুলে ধরার চেস্টা করতাম~
একদিন (সমাজবিজ্ঞান ক্লাস শেষে) ছুটির পর পরই হেডমাস্টার স্যার আমারে ডাইকা কয় এই মাত্র হুনলাম কাইলকা ইস্কুল পরিদর্শনে টি এন ও আইবু। তুমি আইজকা রাইতের মইধ্যে তোমার কিলাসের হগল্তেরে এই খপর পৌছাইয়া দিবা। সকাল সকাল যেন সবাই ষুন্দুর জামা গায় দিয়া সোমায় মত ইস্কুলে আহে।
শত হৌক হেডমাস্টারের অনুরোধ শিরোধার্য! তাও আবার আমার সবচাইতে প্রিয় হেডমাস্টর!
[এই স্যারের আবার ছোট্ট একটা নাদুস নুদুস মাইয়াও আছিল আমাগো ক্লাসে একসাথেই পড়ত! হেতিরে লৈয়া কিলাস থ্রি তে পড়ার সোমায়ই পরিবেশ বিজ্ঞান ক্লাসে আমি একটা তিনলাইনের ফ্রেমপত্রও লিকছিলাম ~
"লক্ষা জলে তিমি মাছ
কাইপ্পা উঠে বরই গাছ
তুই একটু কাছে আস" ]
পরদিন টিএনও যথারীতি পরিদর্শনে এল, আমাদের ক্লাসে হেডস্যার আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন! টিএনও স্যার আমাকে বেশ গুরুত্ত দিয়ে কয়েকটা প্রশ্নও করলেন, গড়গড় কইরা সব উত্তর ঠিক ঠিক বলে দিলাম! হেডস্যার সহ সবার চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক বয়ে গেল! উফ রাজ্য বিজয়ের আনন্দ।
শেষ মেষ টিএনও স্যার জিজ্ঞেস করলেন "তোমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ কে?"
আমি যথারীতি আত্ববিশ্বাসের সাথে শান্ত দৃঢ় গলায় বলে দিলাম "তাহমিনা" তাহমিনা আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ।
হেডস্যার সহ সবার চেহারার কি দশা হয়েছিল কিচ্ছু মনে নাই~ শুধু এইটুকু এখন মনে পরছে উপস্থিত সবাই হু হু করে হেসে দিল! সবাই যখন পিট পিট করে বারবার আমার আর তাহমিনার দিকে তাকাচ্ছিল, মিনিট দুই পরে তাহমিনা ভে---- করে কেদে দিল! মেয়েটা নাদুস নুদুস হলেও মনটা ছিল তার অকৃপণ সারল্যতায় ভরা, খিল খিল করে হাসলে মনে হত সারা গা হেসে উঠছে, চেহারা বড্ড মায়াবী। ক্লাস ফাকি দিয়ে তার জন্য পাশের বেতঝোর থেকে কতবার পাকা পাকা বেতফল এনে দিয়েছি, মাছরাঙ্গা পাখির গর্ত থেকে ডিম আনতে যেয়ে ভরদুপুরে সাপের ফোসফোস তাড়ানী খেয়ে ভয়ে দৌড়ে পালিয়েছি, স্কুলড্রেস, বই ফেলে ঝাপিয়ে পড়েছি নদীর বুকে ওই সুন্দর হাল্কা বেগুনী রংয়ের কচুরীপানা ফুলটা তুলে আনব বলে, বনে বনে ঘুড়ে হরেকরকম বুনু ফুল................ তার কি কোন ইয়ত্তা আছে?
ছোট্ট বেলার হারিয়ে যাওয়া বন্ধুটাকে উত্সর্গ করে অসম্ভব প্রিয়, নস্টালজিক একটা গান
শুনাতে ভীষন ইচ্ছে করছে এখন!
বন্ধু তুমি যেথায় আছো যেভাবে আছো হৃদয় দিয়ে অনুভবের আরেকটি প্রিয় গান শুনে যাও যদি একটা সময় পাও
থাক সে এক বিরাট ইতিহাস!................ গপ্প লিখতে বইসা ডালে ডালে দৌড়াইলে আর পুকুর পাড়ের লিচু গাছটায় যেই পাখির বাসা আছে সময়মত ওইখানে পৌছাইতে পারুম না নে~ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।