ভালো থেকো বন্ধুরা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য তাঁকে পাথর ছুড়ে মারার নির্দেশ জারি হয়েছিল। এ বার সেই শাস্তি ‘কমিয়ে’ ফাঁসি করা হতে পারে বলে জানাল ইরান।
ইরানের বাসিন্দা, ৪৪ বছর বয়সী সাকিনা মহম্মদি আশতিয়ানিকে তাঁর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য ২০০৬ সালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তখন থেকে তিনি পশ্চিম ইরানের তাবরিজ কারাগারে বন্দি। দিন দুয়েক আগে পূর্ব আজেরবাইজানের বিচারবিভাগীয় প্রধান মালেক আজদার শরিফি জানান, পাথর ছুড়ে মারার বদলে আশতিয়ানির ফাঁসি হতে পারে।
আইনি ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে এই পরিবর্তন সম্ভব কি না, সে বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তাদের রিপোর্ট পেশ করলেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শাস্তি বদলের কথা কেন ভাবা হচ্ছে, সে বিষয়ে শরিফি কিছু না বললেও একটি ইরানি সংবাদসংস্থার খবর, তাবরিজ জেলে পাথর ছুড়ে মারার ব্যবস্থা নেই বলেই এই সিদ্ধান্ত।
গত বছর জুলাইয়ে সাকিনার দুই ছেলে তাদের মায়ের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পরে ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মহলের নজরে আসে। পৃথিবী জুড়ে যে সব মানবাধিকার সংস্থা পাথর ছুড়ে মারার বিরোধিতা করছে, তাদের কাছে ইরানি অত্যাচারের ‘প্রতীক’ হয়ে ওঠেন আশতিয়ানি।
এই মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার মানবাধিকার কর্মী। তাঁরা পাশে পেয়ে যান বেশ কয়েক জন রাষ্ট্রনেতাকেও।
তার পর আন্তজার্তিক চাপের মুখেই গত দেড় বছর ধরে এ বিষয়ে ইরানি কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে চলেছে। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ সাফ অস্বীকারই করেন যে, আশতিয়ানিকে এ ধরনের কোনও দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আবার ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু আলি খামেনেইয়ের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, আশতিয়ানির মৃত্যুদণ্ড মকুব করে দেওয়া যেতে পারে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ইরানি কর্তৃপক্ষের আজকের ঘোষণায় ফের নড়েচড়ে বসেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। অনেকেই মনে করছেন, আন্তর্জাতিক চাপের মুখেই মত বদল করতে হয়েছে ইরানকে। ফাঁসির কথা শোনার পরে আন্তর্জাতিক মহল এখন কি বলে, সেটাও দেখতে চাইছে তারা।
এমনিতেই ইরানে মৃত্যুদণ্ডের হার অত্যন্ত বেশি। গত বছরে অন্তত ৬০০ জনের ফাঁসি হয়েছে এ দেশে।
আন্তজার্তিক স্তরে তীব্র সমালোচনার পরেও মৃত্যুদণ্ডের হার বিশেষ কমেনি। কমেনি পাথর ছুড়ে মারার ঘটনাও। গত পাঁচ বছরে সাত জনকে পাথর ছুড়ে মারা হয়েছে ইরানে। আরও চোদ্দো জনকে এই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া রয়েছে। এক মাত্র বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ‘অপরাধেই’ এই বিশেষ মৃত্যদণ্ড দেওয়া হয়।
স্বামীকে খুন করার জন্য আশতিয়ানির শুধু পাঁচ বছরের জেল হয়েছিল। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।