জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই। রাতে ভালো ঘুম হওয়ার সাথে ভালো স্বাস্থ্যের একটা বিষয় জড়িত। যাদের ঘুম হয় না তারা কখনোই দাবি করতে পারেন না তারা সুস্থ আছেন। বহু গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুম না হলে বা অনিদ্রা হলে মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে। অন্য কথায় ঘুম আপনাকে যে কোনো প্রকার অসুস্থতা থেকে শতকরা ৫০ ভাগ সুস্থ করে তোলে।
কেন ঘুমের প্রয়োজন হয়?
ঘুমের প্রয়োজনীয়তা প্রতি ২৪ ঘন্টায় অন্তত একবার উপলব্ধি করতে হয়। এটি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এটি স্বাস্থ্য এবং আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। অনেক তত্ত্বই উপস্থাপিত হয় যে কেন ঘুম দরকার। তবে সঠিকভাবে বলতে গেলে ঘুম ছাড়া মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য টিকে থাকতে পারে না।
কতটুকু ঘুম প্রয়োজন?
একেকজনের শরীরের চাহিদার ওপর এটা নির্ভর করে। কেউ কেউ আছেন যাদের দিনে রাতে পাঁচ ঘন্টা ঘুমই যথেষ্ঠ বলে মনে করেন। আবার কারো কারো ১৫/১৬ ঘন্টা না ঘুমালে শরীরে এবং মনে অসুস্থতার সৃষ্টি হয়। তবে ভালো নিশ্ছিদ্র ঘুম হলে আট ঘন্টাই যথেষ্ঠ এবং এতোটুকুই যে কারও শরীরের জন্য ভালো।
রাতের ভালো ঘুম
রাতের ঘুম নিশ্ছিদ্র হওয়া বাঞ্ছনীয়।
তা না হলে পরবর্তী দিনে আপনি শারীরিকভাবে নিজেকে অবসন্ন ভাবতে পারেন। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন রকমের ঘুমের অভ্যাস থাকে। অনেকেই এবং অধিকাংশই ৮ ঘন্টার দৈনন্দিন ঘুমকে উপযুক্ত এবং যথেষ্ঠ মনে করেন। কিন্তু আপনার যতক্ষণ প্রয়োজন ততোক্ষণ ঘুমানোই কিন্তু আদর্শ।
রাতের ভালো ঘুম মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
তা না হলে দিনের বেলায় যে কোনো কাজ কর্মে আপনি মনোযোগী হতে ব্যর্থ হবেন। কেননা ঘুম না হলে মানসিক উদ্বিগ্নতা বেড়ে যায়। কাজেই রাতের ঘুমের প্রতি যত্নশীল এবং সতর্ক থাকা উচিত।
অনিদ্রা কি?
কোনো কোনো সময় সবারই ঘুমের একটা সমস্যা চলে। প্রায়শই এটা সাধারণ এবং ছোট ঘটনা বলে এটি তেমন গুরুত্ব পায় না।
কিন্তু ক্রমাগত এই সমস্যা চলতে থাকলে এটি ক্রনিক হয়ে দাঁড়ায় এবং তখন এটি অসুখে পরিণত হয়। ক্রমাগত ঘুম না হওয়ার এই অসুখের নাম ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা।
মূলত তিন ধরনের অনিদ্রা রয়েছে- স্বল্পকালীন, ক্ষণস্থায়ী এবং ক্রনিক।
স্বল্পকালীন অনিদ্রার নানা কারণ দায়ী। যেমন- ডিভোর্স, চাকরিতে সমস্যা, গুরুত্বপূর্ণ অসুস্থতা, টাকার সমস্যা বা কোনো আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের মৃত্যুজনিত কোনো শোকের জন্য ঘুম না হওয়া।
আবার ক্ষণক্ষায়ী অনিদ্রার জন্য ঘুমের সময় বা স্থানের কিছু পরিবর্তন, অধিক চিত্তচাঞ্চল্য বা অসুস্থতা দায়ী। আর ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি অনিদ্রার জন্য নানান ডাক্তারি কারণ জড়িত থাকে।
অনিদ্রার কিছু কারণ
জীবনযাত্রার বিষয়ে
অনেকে প্রচুর পরিমাণে মদ্যপানে অভ্যস্ত থাকে যার ফলে অনিদ্রার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় ক্যাফেইন গ্রহণ করলেও রাতে ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে।
পরিবেশগত বিষয়ে
কোলাহল এবং প্রতিবেশীর টেলিভিশন বা গানের আওয়াজ, উচ্চশব্দে গাড়ি চলাচল ইত্যাদি কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
শারীরিক বিষয়ে
আর্থ্রাইটিস, বুকজ্বালা, নারীদের ঋতুকাল, মাথাব্যথা ইত্যাদি শারীরিক সমস্যাতেও ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে।
মনোদৈহিক বিষয়ে
মানসিক অবসাদ ঘুম না হবার প্রধান কারণ। এটি একটি মনোদৈহিক সমস্যা। মানসিক অবসাদ ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
রাতে ভালো ঘুমের জন্য কিছু বিশেষ টিপসঃ
যতটুকু ঘুমে আপনি সন্তুষ্ট ততটুকু ঘুমান ।
প্রতিদিন ঘুমের একটা নির্দিষ্ট সময় বের করুন ।
ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত কাজ করবেন না।
অযাচিত কোলাহল এবং আলো অপছন্দ করুন।
ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যাবেন না।
সন্ধ্যার সময়ে ক্যাফেইন পরিত্যাগ করুন।
এ্যালকোহল পানে বিরত থাকুন।
সন্ধ্যার সময়ে ধমপান করবেন না।
কর্মমুখর জীবনযাপন করুন।
ঘুম নিয়ে সমস্যা হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ঘুম, এটা কোনো স্বপ্ন নয়
দীর্ঘদিনের অনিদ্রা অনেকের মনে ভয়াবহ রকমের দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করে।
তারা একটু নিশ্ছিদ্র ঘুমের জন্য উতলা হয়ে পড়ে। মনে রাখবেন, অধিকাংশ ঘুমের সমস্যাই সাময়িক। আপনি নিজের প্রতি একটু যত্নবান হলেই এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন। ডাক্তারের কাছে পরামর্শ গ্রহণ করলে আপনি এ ব্যাপারে আরো বেশি জানতে পারবেন এবং আপনার কাছে ঘুমকে স্বপ্নের মতো মনে হবে না।
সুত্রঃ
http://www.khobor24.com/?p=13568 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।