আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চারুকলার ‘দাদু’ মোমিন আলী মৃধা মারা গেছেন

আমি চাষার ছেলে, আমার গা দিয়ে কয় মাটির গন্ধ.... চারুকলার ‘দাদু’ মোমিন আলী মৃধা মারা গেছেন। চারুকলার সবার প্রিয় দাদু গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিন টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারনে সাভারে নিজ বাসায় মারা গেছেন। গতকাল সন্ধ্যায় চারুকলার শিক্ষার্থীর তার লাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইন্সটিটিউট চত্ত্বরে নিয়ে আনে। সেখাতে অসংখ্য মানুষ লাশের শ্রদ্ধা জানান। প্রায় ১০৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যু রবন করলেন।

তিনি চারুকলায় মডেল হিসেবে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রায় ৬০ বছর। যারা চারুকলার সকল শিক্ষাথীর কাছে দাদু ছিলেন নিজের পরিবারের একজন হিসেবে। চারুকলার প্রতিটি শিক্ষর্থী, শিক্ষক সবার কাছেই পরিচিত প্রিয়মুখ ছিল এই দাদু। ১৯৪৮ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন তাকে চারুকলায় মডেল হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর থেকে চারুকলায় যারা পড়েছেন তারা প্রত্যেকেই মোমিন আলী মৃধার পোট্রেট একেই শিল্পি হয়েছেন।

বৃদ্ধ মোমিন আলী মৃধার দিনের অধিকাংশ সময়ই কাটতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইন্সটিটিউট চত্ত্বরে৷ মোমিন আলী মৃধার জন্ম শরিয়তপুর হলেও কাজের সন্ধানে ৬০ বছর আগে ঢাকা আসেন। ঢাকায় এসে কাজ নেন তখনকার ঢাকা ডিসট্রিক ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়িতে মালি হিসেবে। ম্যাজিস্ট্রে সাহেবের বাসায় শিল্পী জয়নুল আবেদীন প্রায়ই আসতেন। সেই থেকেই জয়নুল সাহেবের সাথে তার পরিচয়। শিল্পী জয়নুল আবেদীন তাকে খুব ভালবাসতেন।

জয়নুল সাহেবই তাকে চারুকলায় এনে মডেলের কাজ দেন। মডেল হওয়ার জন্য সরকারি টাকা ছাড়াও যখন যে গ্রুপের মডেল হতেন তখন সে গ্রুপের শিক্ষার্র্থীরা ১৫/২০ টাকা করে দিত। আয় বাড়াতে থাকায় চারুকলায় মডেল হওয়ার পাশাপাশি তিনি মালা বিক্রি শুরু করেন। নিজেই মাটি দিয়ে নানা রকম মালা তৈরি করতেন আর বিক্রি করতেন বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরেই। মডেল হওয়া আর মালা বিক্রি করে সারাদিন চারুকলায় কাটিয়ে দিতেন তিনি।

তবে গত কয়েক বছর তিনি মালা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। চারুকলার ছাত্রদের সঙ্গে মোমিন আলী মৃধার এমন একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল যে সবাই তাকে বন্ধু মনে করতেন। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি তিন সন্তানের জনক। বড় ছেলে একটা মোবাইল কোম্পানিতে চাকরি করে, ছোট ছেলে চারুকলায় কিছুদিন লেখাপড়া করে আর করেনি। সেও একটা ছোটখাট ব্যবসা করে৷ আর একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েন অনেক আগেই।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.