দেশের তরে পানিশূন্য পুকুরের বুকটা এখন শুধু খাঁ খাঁ করে। এখন এটিকে পুকুর না বলে জলহীন ডোবা বলাটাই হয়তো মানানসই হবে। জঙ্গল আর উচ্ছিষ্ট আবর্জনায় ভরে গেছে পুকুরটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার গোল পুকুরটির বর্তমান চিত্র এটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একসময় আটটি পুকুর ছিল।
কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পূর্ব দক্ষিনের পুকুরটি ভরাট করে তৈরী করা হয়েছে মাঠ। গুরুদুয়ারা নানক শাহীর পশ্চিমের পুকুরটির এখন অস্তিত্বই নেই। রোকেয়া হলের ভেতরের পুকুরটিও ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে মাঠ। ঐতিহাসিক আমতলার পূর্ব-দক্ষিণের পুকুরটিতে এখন হাসপাতাল। কবি জসীম উদ্দীন হলের পেছনের পুকুরটি কোনমতে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারলেও এখন মৃত প্রায়।
রমনা মাঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মা আনন্দময়ী মাঠসংলগ্ন এলাকার পুকুরটিও এখন অস্তিত্বহীন। শহীদুল্লাহ হলের পুকুরটি টিকে থাকলেও তাতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আর চারুকলার গোল পুকুরটি তো জীবন্ত ডোবা।
চারুকলার ভাষ্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হামিদুজ্জামান খান চারুকলার গোলপুকুরের ব্যাপারে জানান, ১৯৭১ সালের পর এই পুকুরটি খোঁড়া হয়। প্রথম অবস্থায় এই পুকুরের যতœ নেওয়া হলেও এখন অযতেœ আর অবহেলায় দিন দিন এটি নোংরা হয়ে গেছে।
চারুকলার শিক্ষার্থী শরিফুল হাসান অভিযোগ করেন, পুকুরটি ময়লা আবর্জনার কারণে এখন মশার জন্মভূমিতে পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যা হলে পুকুরের পাড়ে ও নিচে নেমে মাদকসেবিরা আসর বসায়। সরিজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পুকুরের মাঝখানে অনেক ফেনসিডিলের বোতল আর কয়েকশ সিগারেটের উচ্ছিষ্ট পড়ে আছে। দিনের বেলা একটি সাপ পুকুরের জঙ্গলের জলে দেখা গেছে। দুর্গন্ধে পুকুরের পাড়ে বসাও দায় যদিও পুকুরের চারপাশে পাড় বাধা।
কবি জসীম উদ্দীন হলের ছাত্র বিবেক নাঈম বলেন, আমরা গ্রাম থেকে এসেছি, ক্যাম্পাসে ভালো পুকুর থাকলে আমাদের পুকুরে সাঁতার কেটে গোসল করার আশা পূরণ হতো।
ক্যাম্পাসের পরিবেশও ভালো থাকতো। চারুকলার ছাপচিত্র বিভাগের পেছনে অবস্থিত এই গোল পুকুরটির কিংবদন্তি আছে বলে জানা যায়। এ কৃত্রিম পুকুরটি নবাবি আমলে ছিল। সেখানে সিঁড়ি র্ছিল এই পুকুরের মাঝখানে বাঈজিরা নাচগান করতো।
পরে এই পুকুরটি বন্ধ হয়ে যায়। আবার পুনরায় খনন করা হয়। বর্তমানে পুকুরটি মৃত প্রায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।