সাম্প্রতিক কালে আমাদের দেশে প্রতারণার নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র মানুষের ধর্মীয় ও মানসিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নানা ভাবে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এব্যাপারে দেশের প্রচলিত আইনও যথাপোযুক্ত নয়। তাই সচেতন হতে হবে আমাদেরকেই। আমার পৈতৃক নিবাস গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়।
আর এখানকার কিছু গ্রামে বাস করে মানুষরূপি জ্বীনের বাদশারা। অনেকটা কৌতুহলী হয়ে খোজ-খবর নিয়ে ছিলাম জ্বীনের বাদশাদের কাজ কর্মের। শিহরণ জাগানো তাদের প্রতারণার কৌশল। দেশবাসির সচেতনতার জন্য বিষয়টি উপস্থাপন করছি।
কৌশল- ১
প্রতারণার জন্য তারা বেছে নেয় তুলনামূলক আর্থিক দিক দিয়ে স্বচ্ছল পরিবারকে।
সেই পরিবারের আশ-পাশের কোন ব্যক্তিকে তারা হাত করে তার মাধ্যমে ঐ পরিবারের খুটিনাটি বিষয় জেনে নেয়। এক্ষেত্রে তারা গৃহকর্তা বিদেশ থাকে এবং তার অনুপস্থিতিতে বাড়ীর গৃহকর্তী যদি পরিবারের প্রধান হন তবে সেই পরিবারকেই তারা বেছে নেন প্রতারণার সুবিধার জন্য।
কৌশল- ২
প্রথমে ভিক্ষক বা আত্নীয় পরিচয় দিয়ে বাড়ীতে প্রবেশ করে কৌশলে পিতল বা কাসার তৈরী মূর্তি ঘরের কোণা বা আসবাব পত্রের নিচে লুকিয়ে রাখে। ঐ মূর্তির হাতের যেকোন একটি আঙ্গুল সোনা দিয়ে বানানো।
কৌশল- ৩
কথা বলায় পারদর্শী ও কন্ঠস্বর ভৌতিক ধরণের করতে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত লোকদিয়ে মোবাইল ফোনে কল করে প্রথমে দ্বী-দুনিয়া, আখেরাত, হাদীস, কোরআন ইত্যাদি সম্পর্কে কথা বলা হয়।
এর পর গুপ্তধন পাইয়ে দেয়া ও নানা বিষয়ে লোভ দেখানো হয়। এছাড়াও তাদের নির্দেশ মত না কাজ করলে শিশুসন্তান/স্বামী মারা যাবে বলে ভয় দেখানো হয়। পরবর্তীতে ২/১ দিন পর তার ঘরে জ্বীনের বাদশা তাকে ভালবেসে একটি সোনার মূর্তি পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে মোবাইল ফোনে জানানো হয়। তবে এক্ষেত্রে পরীক্ষা করতে চাইলে সোনা দিয়ে বানানো বিশেষ আঙ্গুলটি ভেঙ্গে পরীক্ষা করতে বলা হয়। অন্য কোন আঙ্গুল ভাঙ্গলে মূর্তিটি তার কাছে থাকবে না বলে জনানো হয়।
ঘটনাটি পরীক্ষার জন্য মানুষ তখন মূর্তি খুজে বের করে সেই আঙ্গুল ভেঙ্গে স্বর্ণকারের কাছে পরীক্ষার পর জানতে পারে এটি খাঁটি সোনা। এর পর তার মধ্যে আরও লোভের সঞ্চার হয় এবং আরও গুপ্তধন পাওয়ার আশায় জ্বীনের বাদশার কথা মত মাজারে ওরশ করার জন্য মোটা অংকের টাকা দেয়। এভাবে বিভিন্ন অজুহাতে নগদ টাকা ও দামী স্বার্ণালংকার নিয়ে মানুষকে সর্বশান্ত করে দেয়।
এসকল ঘটনা এখনরপত্রিকার দৈনন্দিন খবর। আগামীতে এই বিষয়ে আরও লেখার ইচ্ছা আমার রয়েছে।
প্রচলিত আইন:
আমার জানা মতে উল্লেখিত প্রতারক চক্রকে নির্মূল করতে আমাদের দেশের প্রচলিত আইন যথেষ্ট নয়। ৪২০ ধারায় প্রেফতার করে গুরুপাপে লঘু দন্ড হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও তারা এই একই অপকর্ম শুরু করে। তাই......... বাঁচতে হলে জানতে হবে........... আমাদেরকেই সচেতন হতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।