মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবি ডা.সুরাইয়া হেলেন মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবি,রাজীবপুরের, সিভিল সার্জন অফিসে এলেন কুড়িগ্রামের। শুনে হন্তদন্ত ছুটে গেলাম একবার দেখতে, স্যারের পাশের চেয়ারে পরম যত্নে বসানো হয়েছে তাঁকে। ধার করা শাড়ি আর সোয়েটারের আড়ালে, সারা শরীর আবৃত করে রেখেছে জরা ঢাকতে! রুগ্ন,জুবুথুবু,রাজরোগ যক্ষায় আক্রান্ত, গাল দুটো বসা,চক্ষু কোটরাগত। মুখে কালো কালো ছোপ,দারিদ্রতার ছোবল বড় করুণভাবে উঠেছে ফুটে! দু’চোখে আর্তি,জল টলমল। সিভিল সার্জন,নিজেও এক মুক্তিযোদ্ধা। খুক খুক কাশীর আর্তনাদে, সন্তর্পনে সরে যান গ্রহণযোগ্য দূরত্বে। পাছে এক মুক্তিযোদ্ধার রোগ ছড়িয়ে না পড়ে আরেক মুক্তির শরীরে! যক্ষা তো রেয়াত করবে না আর যেই হও,মুক্তিযোদ্ধা বা ডাক্তার। ক্লান্ত কণ্ঠে আবেদন উপযুক্ত চিকিৎসার, আর সামান্য একটা চাকুরী ছেলের! দিলে দয়া মায়া আছে সিভিল সার্জনের, চিকিৎসা আর ব্যবস্থা করলেন ওষুধ-পত্রের। কিন্তু এ রোগে আর ও প্রয়োজন খাদ্য-পথ্যের। আনুষঙ্গিক কোথায় পাবে?প্রশ্ন তারামন বিবির! উত্তর আর হতাশাকে ঢাকতে,পত্রিকার ক্যামেরাম্যান, সৌখিন ফটোগ্রাফারের ক্লিক ক্লিক! মুহূর্তে প্রতিযোগিতা শুরু, কে কতটুকু নিকটবর্তী হতে পারে তাঁর! মুখে সমবেদনার হাসি নিয়ে, যক্ষার ব্যাপারটা সাময়িক ভুলে! পরদিন পত্রিকার পৃষ্ঠায়,সবাই ছবি দেখে, তাঁর ডানে বামে,সামনে পেছনে কতটুকু কাছে কে কে? কেউ কেউ পেপার কাটিং রাখে, কেউ বা স্টিল ফটো সংগ্রহ করে, গর্বিত স্মৃতির ইতিহাস জমা রাখে! তারামন বিবির এতে কিছু যায় আসে না! আমি,মুক্তিযোদ্ধা সিভিল সার্জন আর সেদিনের উপস্থিত কেউই তাঁর খবর জানেও না বা রাখেও না!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।