নূতনের মাঝে তুমি পুরাতন সে কথা যে ভুলে যাই। পশ্চিম মেদিনীপুরের জিরা গ্রাম থেকে মা পুষ্পিতাকে চিকিত্সা করানোর জন্য কলকাতায় এসেছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা বিশ্বনাথ দাস। ভর্তি করিয়েছিলেন কলকাতার ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে। গল ব্লাডারের সফল অস্ত্রোপচারের পর ৬০ বছরের বৃদ্ধা মাকে নিয়ে কাল সোমবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু গত শুক্রবারের আগুন কেড়ে নেয় তাঁর মাকে।
মাকে হারিয়ে এখন অসহায় বিশ্বনাথ। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আচরণ তাঁকে অবাক করেছে। আগুন লাগার খবর পেয়ে মাকে বাঁচানোর জন্য ভেতরে ঢুকতে চাইলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে আগে হাসপাতালের দেনা পরিশোধ করতে বলেন। বারবার মাকে বাঁচানোর আকুতি মন ভোলাতে পারেনি তাঁদের।
বিশ্বনাথ বলেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী হাসপাতালের কাছেই একটি রুম ভাড়া করে ছিলাম।
আগুন লাগার খবর শুনে আমরা সেখান থেকে দৌড়ে হাসপাতালে যাই। সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীদের জানাই, আমি আমার মাকে উদ্ধার করতে চাই। তখন তাঁরা আমাকে জানান, আগুন তেমন ছড়ায়নি। আর মাকে যদি নিয়ে যেতে চান, তাহলে আগে হাসপাতালের সব দেনা পরিশোধ করতে হবে। আমি তাঁদের বলি, ইতিমধ্যে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি।
বাকি ১৫ হাজার টাকা না দিয়ে আমি পালিয়ে যাচ্ছি না। মাকে উদ্ধারের কথা বারবার তাঁদের বললাম। কিন্তু তাঁরা আমার কথা শোনেননি। ’
হতবাক বিশ্বনাথের জিজ্ঞাসা, ‘এমন দুঃসময়ে মানুষ কীভাবে এমন কথা বলে? কীভাবে এমন হূদয়হীন হতে পারে?’ বিশ্বনাথ বারবার এক কথাই বলছেন, একবার যদি নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে ভেতরে ঢুকতে দিতেন, তিনি হয়তো তাঁর মাকে বাঁচাতে পারতেন।
গত শুক্রবার আমরি হাসপাতালে আগুন লেগে এ পর্যন্ত ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া
সংগ্রহ- প্রথম আলো পত্রিকা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।