আরও একটি খারাপ সপ্তাহ পার করল শেয়ারবাজার। সপ্তাহের চার কর্মদিবসের সব দিনই শেয়ারবাজারে দরপতনের ঘটনা ঘটেছে। এতে দিন দিন আরও নিঃস্ব হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত মাসের ২২ নভেম্বর পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সরকারের পক্ষ বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চার হলেও অব্যাহত দরপতনে তা হতাশায় পর্যবসিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তাকে অনেকাংশে দায়ী করছেন তাঁরা।
বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যথাযথভাবে সক্রিয় থাকলে কিছুটা হলেও বাজারের পতনোন্মুখ প্রবণতা ঠেকান যেত।
গত এক সপ্তাহের বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ সপ্তাহের পাঁচ দিনের মধ্যে চার দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়। আর মঙ্গলবার পবিত্র আশুরার ছুটি থাকায় ওই দিন লেনদেন বন্ধ থাকে। এ চার দিনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ মূল্যসূচক ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ বা ৩০৪ পয়েন্টের মতো কমেছে। এ ক্ষেত্রে রোববার কমে ৭৫ পয়েন্টের সামান্য বেশি।
এ ছাড়া সোমবার ১০৯ পয়েন্টের বেশি, বুধবার ২০ পয়েন্টে ও বৃহস্পতিবার ৯৮ পয়েন্টের মতো সূচক পড়ে। এ সপ্তাহের শুরুতে সূচক ছিল ৫২৩৬.৭৬ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে সূচক ৪৯৩২.৩০ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
সূচক কমার পাশাপাশি মোট লেনদেন ও বাজার মূলধন কমেছে ডিএসইতে। ডিএসইর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, এ সপ্তাহে মোট লেনদেন ৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ কমেছে।
আর বাজার মূলধন কমেছে ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত উল্লাহ ফিরোজ বলেন, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার-ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের পর দু-এক দিন বাজারে এর প্রভাব পড়লেও এরপর থেকে দরপতনের ঘটনা ঘটতে থাকে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়। তবে এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর মতে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা মুখে অনেক কথা বললেও কাজে এর প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।
বাজারে সক্রিয় থাকার কথা বললেও লেনদেন কমে যাওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করে তাঁরা যথাযথভাবে সক্রিয় নয়। এ ক্ষেত্রে তাঁদের কথা ও কাজে মিল রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সম্প্রতি এসইসির পক্ষ থেকে ‘পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ, দেখে শুনে বিনিয়োগ করুন’—এমন স্ক্রল বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। এ বিষয়টিও বিনিয়োগকারীদের আশান্বিত করেছে বলে মনে করেন শাহাদাত উল্লাহ ফিরোজ।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. এ হাফিজ প্রথম আলো অনলাইনকে বলেন, ‘শেয়ারবাজারে এমনিতেই বিনিয়োগকারীদের আস্থা অনেক কমে গেছে।
অন্যদিকে তারল্য সংকটও বিরাজ করছে। আর এ অবস্থায় ব্যাংকগুলো ধীরগতিতে হলেও বিনিয়োগে এগোচ্ছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে তারল্য সরবরাহের ব্যাপারে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় তারল্য সরবরাহে আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ’ তবে শিগগিরই বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।