আই লাভ দ্যা স্মোক, আই লাভ দ্যা স্মোকি লাইফ। সব ধোয়াটে থাকবে। ইচ এন্ড এভরিথিং। অতীত দ্যা পাস্ট
বেশ কয়েক বছর আগের কথা।
চীনদেশের এক বিশাল দৌড় প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়ে বাংলাদেশের যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন জনাব আবুল হোসেন AKA আবুইল্যা।
মাথায় তার চুল কম থাকলেও ছিলো মুখভরা হাসি। কথায় কথায় বলতেন তিনি দেশকে ভালবাসি। যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাওয়া মাত্রই তিনি দেশে আমূল পরিবর্তন সাধিত করলেন। তিনি ছিলেন বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে জনদরদী, বিচক্ষণ, সৃষ্টিশীল এবং গতিময় নেতা এবং সৎ রাজনীতিবিদ। দেশের মানুষের কষ্ট তিনি একদম সহ্য করতে পারতেননা।
রাস্তায় গাড়ির কালো ধোয়ায় মানুষ শারিরীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভেবে তিনি মনে মনে ডুকরে কেদে উঠতেন। তার কান্নায় পদ্মায় উঠত ঝড়। রাস্তাঘাটে হত ভূমিকম্প। তিনি চাইতেন বাংলাদেশের মানুষ দূষণমুক্ত পরিবেশে যাতায়াত করুক। মানুষজন ঘোড়ার গাড়িতে চলাচল করুক।
কিন্তু দেশের সাধারণ জনগণ ছিলো মহাবোকা। তারা তো আর নিজেদের ভালো চায়না। আবুলের এই কথা বুঝতে পারার ক্ষমতা তার ছিলোনা। তারা চাইতো বাস, ট্রাকে চড়তে। তাই বাধ্য হয়ে এই মহান নেতাকে নিতে হয় এক ভয়ংকর সিদ্ধান্ত।
তিনি জোড়ে জোড়ে কান্নাকাটি শুরু করলেন। তার কান্নায় আকাশে বাতাসে ঝড় উঠলো। রাস্তাঘাটে গর্ত সৃষ্টি হতে লাগলো। পদ্মা নদী কেদে বললো, “প্রিয় আবুল আমার, আর কাদিস না বাবা। আমার উপর ব্রিজ করিস না বাবা।
আমি যে তোর মা। মায়ের বুকের উপর দিয়ে ব্রিজে গাড়ী চলবে এটাই কি তুই চাস?” মাতৃভক্ত আবুল বললো, “না মা, যতদিন আমার মাথায় চুল আছে ততদিন তোমার উপর কেউ ব্রিজ করবেনা। ” তখন আবুল পদ্মা নদীর উপরে ব্রিজ করার জন্য যত টাকা বরাদ্দ ছিলো সব টাকা গরীব দু:খীদের মাঝে বিলিয়ে দিলেন। তার এই সততায় মুগ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুই আমার কাছে কি চাস আবুল?” আবুল কেঁদে বললো, “মা আমার, শুধু রাস্তাঘাট দিয়ে পোষায় না। আমি বেশী কাজ করতে পারিনা।
আমাকে বিমানমন্ত্রীও বানিয়ে দেন। আমি বিমানের মতই দ্রুতগতিতে কাজ করি। ” প্রধানমন্ত্রী বললেন, “ঠান্ডা হও বৎস। তোমার জন্য আরো উত্তম স্থান আছে আমার কাছে। ” আবুল বললো, “মা আমার, লোকে মোরে দুর্নীতিবাজ কয়।
আমার একটা ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দরকার। ” প্রধানমন্ত্রী বললেন, “সার্টিফিকেট লাগবেনা রে পাগলা। আমি তো জানি তোর ক্যারেক্টার। আর কারো জানতে হবেনা”
এর কদিন পর প্রধানমন্ত্রী আবুলসহ আরো দুজন নেতাকে নিয়ে আমেরিকায় সিলিকন ভ্যালিতে গেলেন। প্রধানমন্ত্রী আবার রসিক মানুষ।
তিনি মজা করতে পছন্দ করেন। গুগলের অফিসের টাওয়ারের উপর একটা লাইট দেখে তার ভালো লাগায় তিনি তিন নেতাকে বলেন, “যে আমাকে ওই লাইটটা এনে দিতে পারবে তাকে আমি আইসিটি মন্ত্রী বানাবো”। বাকীরা কেউ পাত্তা না দিলেও সুবোধ বৃদ্ধ আবুল দৌড় দেয় লাইটের জন্য। ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যায়, আবুল আর আসেনা। দৈনিক মগবাজারে নিউজ এলো “আবুল পালিয়ে গেছে”।
মন্ত্রীসভাসহ সারাদেশে শোকের মাতম ছেয়ে গেলো। কদিন পর হঠাৎ করে কোথা থেকে যেন উদয় হয় আবুল। তার অন্তর্ধানের রহস্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ লাইটটা হাতে নেয়ার পরই এলার্ম বেজে উঠে আর গার্ডরা তাকে চোর ভেবে গুগলের কিশোর সংশোধন কারাগারে পুরে দেয়। সেখানে তিনি মাল্টিপ্লাগ পরিষ্কার করতেন। গুগলের প্রোগ্রামারদের চা কফি দিতেন।
একদিন এক সুন্দরী রমণীকে লুল প্রস্তাব দেয়ায় তাকে ইলেকট্রিক ব্লেড দিয়ে ন্যাড়া করে পাঠিয়ে দেয়া হয় দেশে। ” ফিরে এসে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে তার প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীও তার কথা রাখেন। আবুল হয়ে যায় আইসিটি মন্ত্রী।
বর্তমান দ্যা প্রেজেন্ট
আবুল মন্ত্রী হবার সাথে সাথেই দেশে বিপুল আলোড়ন দেখা দেয়।
কথিত আছে আবুলের গতি নাকি ইন্টারনেটের চেয়েও বেশী। তাই তার সাথে পাল্লা দিতে না পেরে সবার কম্পিউটারের নেট ডিসকানেক্ট হয়ে যায়। ঘনঘন লোডশেডিং হতে থাকে দেশে। পেনড্রাইভগুলো ডাটা ট্রান্সফার বন্ধ করে দিতে থাকে। প্রিন্টারগুলোর কালি শেষ হয়ে যায়।
মোবাইল নেটওয়ার্ক ড্যামেজ হয়ে যায়। ফেসবুকে রোমান্টিক অবস্থায় চ্যাটরত জুটিদের মধ্যে ব্রেকাপ হয়ে যায়। ডিশের লাইনে আগুন ধরে যায়। সফটওয়ার কোম্পানীগুলো বন্ধ হয়ে যায়। আইটি স্পেশালিস্টরা রাস্তায় ফুটা থালা নিয়ে ভিক্ষা শুরু করে।
ভবিষ্যত দ্যা ফিউচার
সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রকৌশলের সিলেবাসে পড়ানো হবে “ডিজিটাল উপায় ভিক্ষাবৃত্তি”, “ক্লাউড বেগিং সিস্টেম” নামক কোর্সগুলো। কারণ, দেশের আইসিটি খাতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হবে। আবুল হোসেন নিজ কাধে সেই গর্ত খোড়ার ভার নিয়েছেন। পুরা দেশে গর্ত হবে। গর্ত হবে ফেসবুকে, গুগলে।
গর্ত হবে ভার্চুয়াল প্রেমে। বাংলাদেশে আবার সেই অতীতের সুদিন ফিরে আসবে। পোষ্টঅফিস, টেলিগ্রাম অফিস আবার হারানো জৌলুশ ফিরে পাবে। দেশে কোন কম্পিউটার না থাকায় বিদ্যুৎ খাত ওভার প্রডিউসিংএর কারণে গর্ভবতী হয়ে যাবে। আবুল হোসেন নোবেল পুরস্কার পাবেন শান্তির জন্য।
মোবাইলের এলার্মের বদলে মোরগের ডাকে সবার ঘুম ভাঙবে।
সবই আবুলের দোয়া.........। বলেন কবুল।
অফটপিক : এটাই মনে হয় দেশের প্রথম আর্টস ফিকশন। ফিকশন মানে কিন্তু ফিকশনই।
প্রথম আর্টস ফিকশন কেমন লাগলো জানান।
বুজাইতারসি???????
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।