“জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে, আমি বিশ্বাস করি, এতদিনে তিনি পানির দাবিতে ভারতের বিরুদ্ধে একটা আস্ত যুদ্ধই ঘোষণা করে দিতেন । “
- আহমদ ছফা(১০/০৫/১৯৯৪)
বাঙ্গালীর দুর্ভাগ্য বঙ্গবন্ধু বেঁচে নেই নইলে এতদিনে টিপাইমুখ বাধের জন্য ভারতের বারো দুগুণে চব্বিশ বেজে যেতো । তবে এটা ভেবে আফসোস না করে প্রত্যেক বাঙ্গালির/বাংলাদেশীর প্রতিদিন দুই রাকাত শোকরানা নামাজ পড়া উচিত এই ভেবে যে আমাদের বর্তমান দুই মহান নেত্রী প্রাক স্বাধীনতা যুগে দেশের নেত্রীস্থানিয় অবস্থানে যেতে পারেন নি । সত্যি যদি এই দুজন মহিয়ষী তখন থাকতেন তবে কি হতো একবার ভেবে দেখা যাক ।
সাল ১৯৫২
রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য কখনোই কোন দাবী উঠত না!!! কি কারনে উঠত না সেটা দুই নেত্রীর দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে কি দেখা যায় দেখি –
প্রথমেই ধরি শেখ হাসিনা ছিলেন নেত্রীস্থানিয় কেউ ।
১৯৫২ সালে পশ্চিমারা যে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করে ফেলছে সেটা উনি জানতেই পারতেন না প্রথমে । উনার উপদেষ্ঠারা সবসময় উনার সামনে বি(পি)টিভি চালিয়ে রাখতো । আর যথারিতি ঐ টিভিতে দেখানো হত কিভাবে দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে । পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্ঠা টিপু কনি সাহেব সব সময় বিদেশ সফরে ব্যাস্ত থাকতেন । আর বিভিন্ন আমন্ত্রন মূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন রক্ষা করতে করতে কখন বাহান্ন গিয়ে তিপান্ন চলে আসতো বুঝতেই পারতেন না ।
উনি চুয়ান্ন সালে বৃটেন সফর কালে সাংবাদিকরা যখন উর্দুতে প্রশ্ন করা শুরু করবে তখন একটু অবাক হয়ে তাকাবেন । তখন উনার কৌতুহল দেখে উপস্থিত সাংবাদিক্ ততোধিক অবাক হয়ে জিঞ্জেস করবে উনি কি উনার রাষ্ট্র ভাষায় কথা বলতে পারেন না ? রাষ্ট্র ভাষা সম্পর্কে চুক্তি সাক্ষরসহ যাবতিয় বিষয় লন্ডনস্থ উর্দু টাউন(ব্রিক-ল্যান)এর সাংবাদিকদের কাছ জেনে উনি আকাশ থেকে পরবেন । তখনি সফর অর্ধসমাপ্ত রেখে তরিঘরি করে দেশে ফিরে এসে দলনেত্রীকে যাবতিয় বিষয় সম্পর্কে অবগত করবেন । এবং অতিজরুরী সফর বাতিল করে এসে উনার দাপ্তরিক তৎপরতার জন্য বাহবা প্রার্থনা করবেন । এদিকে এনালগ যুগের সাংবাদিক বন্ধুগন বৈকালিক ঘুম থেকে উঠে খবরটা জানতে পেরে তৎক্ষনাৎ ব্যস্ত হয়ে দিস্তার পর দিস্তা কাগজ শেষ করে ফেলবেন ।
এদিকে বুদ্ধিজীবী মহল রাত জেগে আলাপ করতে করতে ফালু মিয়া-সিরাজ আলীর চা-বিড়ির ব্যবসায় বাম্পার বাত্তি জ্বালিয়ে দিতেন । তখন বাধ্য হয়ে আওয়ামী (মুসলিম)লীগ প্রচার সম্পাদক সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে বলবেন এই বিষয়টা নিছকই পশ্চিমাদের আভ্যন্তরীন ব্যপার । এতে পূর্ব বাংলার কোন ধরনের কোন সমস্যা হবে না । আর যেহেতু অনেক দেরী হয়ে গেছে কিছু করার নেই তাই বিবৃতি দেওয়া হবে যে এটা নিছকই একটা পরিক্ষামূলক কার্যক্রম । শুধু দেখা হচ্ছে পূর্ব বাংলার লোকজন সহিহ উচ্চারণে উর্দু বলতে পারে কিনা ।
অপরদিকে পূর্ব-পাকিস্তান(তৎকালীন) জাতীয়তাবাদি দলে এ নিয়ে তেমন কোন উচ্চবাচ্চ হবে না কারন তখন তারা দলনেত্রীর বাড়ি নিয়ে কঠোর কর্মসুচিতে ব্যস্ত থাকবে । পূর্ব-পাকিস্তানের মতো পশ্চিম-পাকিস্তানেও সেনানিবাসের ভেতর দল নেত্রির একখানা বাড়ি চেয়ে লাগাতার হরতাল দিয়ে দেশ অচল করে দেওয়া হবে । বদরুদ্দুজা চৌধুরীর ব্যপারটা প্রথমে নজরে আসলে উনি তার পুত্র এবং পুত্র বধুকে সঙ্গে নিয়ে নেত্রীর বাড়ি যাবেন । কিন্তু সাকা চৌধুরী একথা শুনেই অট্টহাসিতে ফেটে পরবে । এবং তার কুক্ষাত সেই বাণীর ক্লাসিক ভার্সনটা উদ্গিরন করবে – “কোথাকার কোন রবিঠাকুর এবং মালাউনদের অপবিত্র ভাষা নিয়ে কেনো এত মাথা ব্যাথা? জাতীয় সংগীত ‘পাক সর জমিন’ আমরা উর্দুতে লিখতে পারব, সহিহ উচ্চারনে বলতে পারব এটা শোনেই তো আমার লালা ঝরছে” ।
তবুও যেহেতু নেত্রীর উপদেষ্ঠা এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার শফিক রেহমান উর্দু জানেন না তাই নেত্রীও একটু দুনোমনা করবেন । তার উপর উনি নিজেও কিছুদিন আগেই মাত্র সর্ট-ওয়েব(এফ,এম নয়) মেথডে ইংলিশ শিখে ভাষাগত ক্লান্তিতে ভুগছেন এখন আবার নতুন ভাষা শিখতে হবে বলে দূশ্চিন্তা শুরু করলেন । এহেনো অসুবিধা ব্যক্ত করে এই বাবদ পশ্চিমে উনি একখানা চিঠিও লিখে পাঠাবেন । তবে চিঠির বাহক হিসেবে নিজামীকে পাঠিয়েই উনি বড় ভুল করলেন । নিজামি চিঠি না পাঠিয়ে উনাকে প্রস্তাব দিবেন তার কাছে যদি উনি উর্দু শিখেন তাহলে উনি তাকে ফ্রী শিখিয়ে দিবেন ।
বিনিময়ে হাদিয়া হিসেবে তাকে শুধু তার জন্য বরাদ্যকৃত আসনের ২টা বাড়িয়ে দিতে হবে । এতো সহজ সর্তে তক্ষুনি নেত্রী রাজি হয়ে গেলেন । গুল্লায় গেলো রাষ্ট্র ভাষা বাংলার আন্দোলন । এদিকে ব্যাকাপ না পাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করে কিছু ছাত্র মারা যাওয়ায় এটাকে টোকাইদের আন্দোলন বলে ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হলো ।
সাল ১৯৭০
যেহেতু ভাষা আন্দোলন হয় নি সেহেতু ৫৪, ৬৯, ৬ দফা কোন কিছুই হতো না ।
সোজা চলে যেতে হতো সত্তুরের নির্বাচনে । সত্তুরের ন্যাশনাল এসেম্বলি নির্বাচনে ফলাফল আগের মতোই হতো কিন্তু ভুট্টোর পিপলস পার্টি জিতে যেতো । সেটা কিভাবে হতো দেখা যাক । দুই নেত্রি স্বাভাবিকভাবেই একমত হতে পারতেন না । তাই অবশ্যম্ভাবি ঘটনাই ঘটতো অর্থাৎ তারা তাদের দুই দল নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে নির্বাচন করতেন ।
তাদের সাথে যোগ দিত কিছু আগাছাপার্টী, জামাতী এবং নুন আনতে পান্তা ফুরোনো সমাজতন্ত্রীরা । জামাত এবং আরো দু’একটা প্রতিবন্ধী দল নিয়ে জাতীয়তাবাদী দল গড়বে সাড়ে চার দলিয় ঐক্যজোট । আর বাদবাকি আগাছা পার্টী, সমাজতন্ত্রী, ১২ দলীয় ইসলামি দল, কামিনী, ব্রজগামিনীদের নিয়ে আওয়ামিলীগ গড়তো মহাজোট । নির্বাচন হতো এবং যথারিতি ভুট্টু আসন পেতো শতকরা ৩০ ভাগ, মহাজোট পেতো পেতো ৩৬ ভাগ, চারদলীয় ঐক্যজোট পেতো ৩৪ ভাগ । তখন আসল নাটকের শুরু ।
গো-আজম, নিজামীরা তাদের আসন গুনে দেখলো ৩৪ আসনের মধ্যে ৯ আসন তারা পেয়েছে । “একবার রাজাকার চিরকাল রাজাকার” । তারা দেখলো ৪ দলে থাকলে তাদের কপালে সরকার গঠন কখনই সম্ভব না । আওয়ামীলীগ যেহেতু হিন্দুর দল সেখানে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না এবং তাদের কোনভাবেই জিততে দেওয়া যাবে না । আর যেহেতু তাদের মুখে বাংলা বুকে পাকি(পী)স্তান সেহেতু ডিগবাজী দিতে সময় লাগল না ।
তারা দল বেধে বাক্স-পেটারা নিয়ে ‘সুপ্ত মনের গুপ্ত বাসনা’ চরিথার্ত করতে করাচীর উদ্ধেশ্যে যাত্রা করবে । অতএব ফলাফল দাড়াবে পিপলস পার্টী ৩০ + জামাত ৯ = ৩৯ + সাকার আরো এক আসন = ৪০ আসন, সাড়ে ৪ দলীয় জোট ৩৪ – ১০ = ২৪ আসন এবং মহাজোট ৩৬ আসন । অর্থাৎ পিপলস পার্টী নির্বিঘ্নে সরকার গঠন করে করে সাকা, গো-আজম, নিজামীদের নিয়ে সুখে-শান্তিতে সম্পুর্ণ পাকি(পী)স্তানকে শাসন করতে থাকবে । ফল সরুপ জনাব রকিবুল হাসানের মতো সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, আশরাফুল, মাশরাফীকেও পাকিস্তান দলের টূয়েল্বথ ম্যান হিসেবে আফ্রিদীদের জন্য স্যালাইন পানি টেনে টেনে বর্নাঢ্য ক্যারিয়ার শেষ করতে হতো । ইনোসেন্ট বয় শাহদাত হোসেন’কে সালমান বাট বাধ্য করে নো বল করিয়ে এখন খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে পঁচাতো ।
সর্বোপুরি মুস্তফা জব্বার ‘বিজয়’এর পরিবর্তে ‘ইনকিলাব’ বের করতেন আর ‘অভ্র’ হতো ‘শীসা’ ।
ভাগ্যিস
“জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে, আমি বিশ্বাস করি, এতদিনে তিনি পানির দাবিতে ভারতের বিরুদ্ধে একটা আস্ত যুদ্ধই ঘোষণা করে দিতেন । “
- আহমদ ছফা(১০/০৫/১৯৯৪)
বাঙ্গালীর দুর্ভাগ্য বঙ্গবন্ধু বেঁচে নেই নইলে এতদিনে টিপাইমুখ বাধের জন্য ভারতের বারো দুগুণে চব্বিশ বেজে যেতো । তবে এটা ভেবে আফসোস না করে প্রত্যেক বাঙ্গালির/বাংলাদেশীর প্রতিদিন দুই রাকাত শোকরানা নামাজ পড়া উচিত এই ভেবে যে আমাদের বর্তমান দুই মহান নেত্রী প্রাক স্বাধীনতা যুগে দেশের নেত্রীস্থানিয় অবস্থানে যেতে পারেন নি । সত্যি যদি এই দুজন মহিয়ষী তখন থাকতেন তবে কি হতো একবার ভেবে দেখা যাক ।
সাল ১৯৫২
রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য কখনোই কোন দাবী উঠত না!!! কি কারনে উঠত না সেটা দুই নেত্রীর দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে কি দেখা যায় দেখি –
প্রথমেই ধরি শেখ হাসিনা ছিলেন নেত্রীস্থানিয় কেউ । ১৯৫২ সালে পশ্চিমারা যে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করে ফেলছে সেটা উনি জানতেই পারতেন না প্রথমে । উনার উপদেষ্ঠারা সবসময় উনার সামনে বি(পি)টিভি চালিয়ে রাখতো । আর যথারিতি ঐ টিভিতে দেখানো হত কিভাবে দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে । পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্ঠা টিপু কনি সাহেব সব সময় বিদেশ সফরে ব্যাস্ত থাকতেন ।
আর বিভিন্ন আমন্ত্রন মূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন রক্ষা করতে করতে কখন বাহান্ন গিয়ে তিপান্ন চলে আসতো বুঝতেই পারতেন না । উনি চুয়ান্ন সালে বৃটেন সফর কালে সাংবাদিকরা যখন উর্দুতে প্রশ্ন করা শুরু করবে তখন একটু অবাক হয়ে তাকাবেন । তখন উনার কৌতুহল দেখে উপস্থিত সাংবাদিক্ ততোধিক অবাক হয়ে জিঞ্জেস করবে উনি কি উনার রাষ্ট্র ভাষায় কথা বলতে পারেন না ? রাষ্ট্র ভাষা সম্পর্কে চুক্তি সাক্ষরসহ যাবতিয় বিষয় লন্ডনস্থ উর্দু টাউন(ব্রিক-ল্যান)এর সাংবাদিকদের কাছ জেনে উনি আকাশ থেকে পরবেন । তখনি সফর অর্ধসমাপ্ত রেখে তরিঘরি করে দেশে ফিরে এসে দলনেত্রীকে যাবতিয় বিষয় সম্পর্কে অবগত করবেন । এবং অতিজরুরী সফর বাতিল করে এসে উনার দাপ্তরিক তৎপরতার জন্য বাহবা প্রার্থনা করবেন ।
এদিকে এনালগ যুগের সাংবাদিক বন্ধুগন বৈকালিক ঘুম থেকে উঠে খবরটা জানতে পেরে তৎক্ষনাৎ ব্যস্ত হয়ে দিস্তার পর দিস্তা কাগজ শেষ করে ফেলবেন । এদিকে বুদ্ধিজীবী মহল রাত জেগে আলাপ করতে করতে ফালু মিয়া-সিরাজ আলীর চা-বিড়ির ব্যবসায় বাম্পার বাত্তি জ্বালিয়ে দিতেন । তখন বাধ্য হয়ে আওয়ামী (মুসলিম)লীগ প্রচার সম্পাদক সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে বলবেন এই বিষয়টা নিছকই পশ্চিমাদের আভ্যন্তরীন ব্যপার । এতে পূর্ব বাংলার কোন ধরনের কোন সমস্যা হবে না । আর যেহেতু অনেক দেরী হয়ে গেছে কিছু করার নেই তাই বিবৃতি দেওয়া হবে যে এটা নিছকই একটা পরিক্ষামূলক কার্যক্রম ।
শুধু দেখা হচ্ছে পূর্ব বাংলার লোকজন সহিহ উচ্চারণে উর্দু বলতে পারে কিনা ।
অপরদিকে পূর্ব-পাকিস্তান(তৎকালীন) জাতীয়তাবাদি দলে এ নিয়ে তেমন কোন উচ্চবাচ্চ হবে না কারন তখন তারা দলনেত্রীর বাড়ি নিয়ে কঠোর কর্মসুচিতে ব্যস্ত থাকবে । পূর্ব-পাকিস্তানের মতো পশ্চিম-পাকিস্তানেও সেনানিবাসের ভেতর দল নেত্রির একখানা বাড়ি চেয়ে লাগাতার হরতাল দিয়ে দেশ অচল করে দেওয়া হবে । বদরুদ্দুজা চৌধুরীর ব্যপারটা প্রথমে নজরে আসলে উনি তার পুত্র এবং পুত্র বধুকে সঙ্গে নিয়ে নেত্রীর বাড়ি যাবেন । কিন্তু সাকা চৌধুরী একথা শুনেই অট্টহাসিতে ফেটে পরবে ।
এবং তার কুক্ষাত সেই বাণীর ক্লাসিক ভার্সনটা উদ্গিরন করবে – “কোথাকার কোন রবিঠাকুর এবং মালাউনদের অপবিত্র ভাষা নিয়ে কেনো এত মাথা ব্যাথা? জাতীয় সংগীত ‘পাক সর জমিন’ আমরা উর্দুতে লিখতে পারব, সহিহ উচ্চারনে বলতে পারব এটা শোনেই তো আমার লালা ঝরছে” । তবুও যেহেতু নেত্রীর উপদেষ্ঠা এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার শফিক রেহমান উর্দু জানেন না তাই নেত্রীও একটু দুনোমনা করবেন । তার উপর উনি নিজেও কিছুদিন আগেই মাত্র সর্ট-ওয়েব(এফ,এম নয়) মেথডে ইংলিশ শিখে ভাষাগত ক্লান্তিতে ভুগছেন এখন আবার নতুন ভাষা শিখতে হবে বলে দূশ্চিন্তা শুরু করলেন । এহেনো অসুবিধা ব্যক্ত করে এই বাবদ পশ্চিমে উনি একখানা চিঠিও লিখে পাঠাবেন । তবে চিঠির বাহক হিসেবে নিজামীকে পাঠিয়েই উনি বড় ভুল করলেন ।
নিজামি চিঠি না পাঠিয়ে উনাকে প্রস্তাব দিবেন তার কাছে যদি উনি উর্দু শিখেন তাহলে উনি তাকে ফ্রী শিখিয়ে দিবেন । বিনিময়ে হাদিয়া হিসেবে তাকে শুধু তার জন্য বরাদ্যকৃত আসনের ২টা বাড়িয়ে দিতে হবে । এতো সহজ সর্তে তক্ষুনি নেত্রী রাজি হয়ে গেলেন । গুল্লায় গেলো রাষ্ট্র ভাষা বাংলার আন্দোলন । এদিকে ব্যাকাপ না পাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করে কিছু ছাত্র মারা যাওয়ায় এটাকে টোকাইদের আন্দোলন বলে ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হলো ।
সাল ১৯৭০
যেহেতু ভাষা আন্দোলন হয় নি সেহেতু ৫৪, ৬৯, ৬ দফা কোন কিছুই হতো না । সোজা চলে যেতে হতো সত্তুরের নির্বাচনে । সত্তুরের ন্যাশনাল এসেম্বলি নির্বাচনে ফলাফল আগের মতোই হতো কিন্তু ভুট্টোর পিপলস পার্টি জিতে যেতো । সেটা কিভাবে হতো দেখা যাক । দুই নেত্রি স্বাভাবিকভাবেই একমত হতে পারতেন না ।
তাই অবশ্যম্ভাবি ঘটনাই ঘটতো অর্থাৎ তারা তাদের দুই দল নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে নির্বাচন করতেন । তাদের সাথে যোগ দিত কিছু আগাছাপার্টী, জামাতী এবং নুন আনতে পান্তা ফুরোনো সমাজতন্ত্রীরা । জামাত এবং আরো দু’একটা প্রতিবন্ধী দল নিয়ে জাতীয়তাবাদী দল গড়বে সাড়ে চার দলিয় ঐক্যজোট । আর বাদবাকি আগাছা পার্টী, সমাজতন্ত্রী, ১২ দলীয় ইসলামি দল, কামিনী, ব্রজগামিনীদের নিয়ে আওয়ামিলীগ গড়তো মহাজোট । নির্বাচন হতো এবং যথারিতি ভুট্টু আসন পেতো শতকরা ৩০ ভাগ, মহাজোট পেতো পেতো ৩৬ ভাগ, চারদলীয় ঐক্যজোট পেতো ৩৪ ভাগ ।
তখন আসল নাটকের শুরু । গো-আজম, নিজামীরা তাদের আসন গুনে দেখলো ৩৪ আসনের মধ্যে ৯ আসন তারা পেয়েছে । “একবার রাজাকার চিরকাল রাজাকার” । তারা দেখলো ৪ দলে থাকলে তাদের কপালে সরকার গঠন কখনই সম্ভব না । আওয়ামীলীগ যেহেতু হিন্দুর দল সেখানে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না এবং তাদের কোনভাবেই জিততে দেওয়া যাবে না ।
আর যেহেতু তাদের মুখে বাংলা বুকে পাকি(পী)স্তান সেহেতু ডিগবাজী দিতে সময় লাগল না । তারা দল বেধে বাক্স-পেটারা নিয়ে ‘সুপ্ত মনের গুপ্ত বাসনা’ চরিথার্ত করতে করাচীর উদ্ধেশ্যে যাত্রা করবে । অতএব ফলাফল দাড়াবে পিপলস পার্টী ৩০ + জামাত ৯ = ৩৯ + সাকার আরো এক আসন = ৪০ আসন, সাড়ে ৪ দলীয় জোট ৩৪ – ১০ = ২৪ আসন এবং মহাজোট ৩৬ আসন । অর্থাৎ পিপলস পার্টী নির্বিঘ্নে সরকার গঠন করে করে সাকা, গো-আজম, নিজামীদের নিয়ে সুখে-শান্তিতে সম্পুর্ণ পাকি(পী)স্তানকে শাসন করতে থাকবে । ফল সরুপ জনাব রকিবুল হাসানের মতো সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, আশরাফুল, মাশরাফীকেও পাকিস্তান দলের টূয়েল্বথ ম্যান হিসেবে আফ্রিদীদের জন্য স্যালাইন পানি টেনে টেনে বর্নাঢ্য ক্যারিয়ার শেষ করতে হতো ।
ইনোসেন্ট বয় শাহদাত হোসেন’কে সালমান বাট বাধ্য করে নো বল করিয়ে এখন খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে পঁচাতো । সর্বোপুরি মুস্তফা জব্বার ‘বিজয়’এর পরিবর্তে ‘ইনকিলাব’ বের করতেন আর ‘অভ্র’ হতো ‘শীসা’ ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।