আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রশ্নহীন সুযোগ কালো টাকায়

শনিবার রাতে জাতীয় সংসদে অর্থবিল ২০১৩ পাশ হয়।
অর্থমন্ত্রী তার প্রস্তাবিত বাজেটের উপর বেশ কিছু সংশোধনী আনেন। তার মধ্যে জরিমানাসহ কর দিয়ে কোনো প্রশ্ন ছাড়া যে কোনো খাতে অপ্রদর্শিত আয় বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী সংশোধনীতে বলেছেন, “যদি কোনো কারণে কোন করদাতা অতীতে তার আয় কম প্রদর্শন করে থাকেন বা কোন কারণে প্রাপ্ত অর্থ সম্পদ বিবরণীতে প্রদর্শন করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে তিনি তার সে আয় বিদ্যমান আইন অনুযায়ী স্বেচ্ছামূলকভাবে প্রদর্শন  করতে পারবেন।
“এজন্য শুধু প্রদেয় করের ১০ শতাংশ অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হয়।

এভাবে জরিমানাসহ কর প্রদান করে একজন করদাতা তার অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করার পর তা শিল্প-বাণিজ্যসহ অপরাপর ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারবেন। ”
তিনি বলেন, “যথানিয়মে কর প্রদান করলে এরূপ ঘোষিত আয় ও বিনিয়োগ সম্পর্কে কর বিভাগ থেকে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না। বিনিয়োগে উৎসাহ দেবার স্বার্থে এই সংশোধনীটি প্রস্তাব করছি। ”
অর্থমন্ত্রীর এ প্রস্তাবসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংশোধনীসহ পাশ হয় অর্থ বিল।
তবে প্রস্তাবিত বাজেটে জমি কেনার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আয়কর পরিশোধ সাপেক্ষে অপ্রদশিত আয় বা কালো টাকা বিনিয়োগের যে ‘বিশেষ’ সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল অর্থবিলে তা বাতিল করা হয়েছে।


শনিবার সন্ধ্যায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের উপর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমাপনী বক্তব্যে বলেন, অর্থ বিল ২০১৩ এর মাধ্যমে জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে অপ্রদর্শিত আয় ১০ শতাংশ আয়কর পরিশোধ সাপেক্ষে বিনোয়োগ বিবেচনা করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ খাতে প্রস্তাবিত সুবিধা দেয়া হলে অনুৎপাদনশীল খাতে অযথা খরচ হবে এবং জমির দাম বৃদ্ধি পাবে।
"অপ্রদর্শিত আয় বিনোয়োগকে নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি বাতিল করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন। আমি এ প্রস্তাবটি বাদ দিচ্ছি। "
শনিবার বিকেল সোয়া ৩টায় অধিবেশন শুরু হয়।

বিরোধীদলীয় নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের পর রাত ৮টায় অর্থমন্ত্রী তার সমাপনী বাজেট বক্তব্য শুরু করেন।
বিভিন্ন সংশোধনীসহ অর্থমন্ত্রী রাত পৌণে ১০টায় তার বক্তব্য শেষ করেন। রাত ১০টা ৫০ মিনিটে অর্থ বিল পাশ হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতার শেষে প্রস্তাবিত বাজেটের কর ও শুল্ক বিষয়ে আটটি প্রস্তাব পরিবর্তনের জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের পর আরও কিছু বিষয়ে সংশোধনী এনে অর্থ বিল পাশের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন।


বিলে সংবাদপত্র শিল্পে ১০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে নিউজপ্রিন্ট আমদানির সুযোগ দেয়া হয়।
বিদায়ী ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে ৩ শতাংশ শুল্ক দিয়ে এ নিউজপ্রিন্ট আমদানি করা যেত।
প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী তা বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছিলেন। আর প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে অর্থমন্ত্রী তা কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।
একইসঙ্গে সংবাদপত্র শিল্পে ব্যবহৃত প্রিন্টিং প্লেট আগের মতো মূলধনী যন্ত্রপাতি প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।


ফলে এখন ২ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করে প্রিন্টিং প্লেট আমদানি করা যাবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে পণ্যের বাজারজাতকরণের জন্য একজন পরিবেশককে প্রদত্ত কমিশন বা ফি এর উপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছিল। সংশোধনীতে তা ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
সংশোধনীতে প্লাস্টিকের তৈরি তৈজসপত্র ও গৃহস্থালী সামগ্রী এবং অ্যালুমিনিয়াম ও এনামেলের তৈরি কিচেন সামগ্রী ও তৈজসপত্রের উপর মূসক (ভ্যাট) অব্যাহতি সুবিধা অব্যাহত রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এ সব খাতে মূসক অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছিল।


বাজেট প্রস্তাবে আসবাবপত্র ও মিষ্টির দোকানকে সেবা খাতের আওতা থেকে বের করে পণ্য হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। সংশোধনীতে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
বিড়ির জন্য আরোপিত সংশোধিত ট্যারিফ মূল্যের প্রস্তাব বহাল রেখে বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক (১০ শতাংশ ও ৫ শতাংশ হারে) প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে ফিল্টার ছাড়া ২৫ শলাকা বিড়ির করসহ হ্রাসকৃত মূল্য দাঁড়াবে ৫ টাকা ৩৬ পয়সা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার মূল্য ৬ টাকা ০৬ পয়সা।
ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যয়বহুল দুটি ওষুধ Imatinib Capsule (Glivec) এবং Nilotinib (Tasigna) এর আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম মূসক প্রত্যাহার করা হয়েছে।


মধ্যবর্তী কাঁচামাল নয় এবং চূড়ান্ত পণ্য হিসাবেও বিবেচ্য নয়- এমন ৪৩টি পণ্যের উপর ১০ শতাংশ আমদানি শুল্কের অতিরিক্ত ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি আরোপের যে প্রস্তাব করা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
পোশাক শিল্পে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এ কাজে ব্যবহৃত পণ্যের আমদানি শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।