এতদিন শুনে এসেছি উত্তরবঙ্গের মানুষজন খুব ভালো, এবার দেখে আসলাম। সত্যিই তাঁদের ব্যবহারে আমি মুগ্ধ। আমার প্রথম উত্তরবঙ্গ যাওয়া। প্রথমে রংপুর, লালমনিরহাট, সৈয়দপুর হয়ে দিনাজপুর। দিনাজপুরে দেখার মতো বেশ কয়েকটা ভালো জায়গা (রামসাগর,রাজবাড়ী,কান্তজীর মন্দির, বড়োপুকুরিয়া কয়লা খনি, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে, সপ্নপুরি) আছে।
রামসাগর যাওয়ার রাস্তার দু ধারে রাশি রাশি ধানক্ষেত। ধানক্ষেতে নেমে কথা বলছিলাম এক কৃষকের সাথে। তিনি বলছিলেন দিনাজপুরে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপন্ন হয়। এবার ভালো ফলন হয়েছে কিন্তু কৃষক দাম পাচ্ছে না।
"পাকিতেছে ধান, কাটিতেছে কৃষক
বাঁধিতেছে ধানের আঁটি,
সোনার মাটিতে, সোনার ফসল,
ফলাইতেছে, তাঁদের হাত দুটি।
"
স্যালুট জানাই কৃষকদের। রামসাগরে একটা বিশাল দিঘি আছে। আমি আগে কখনও এতবড়ো দিঘি দেখি নাই। রামসাগরের উপকথাঃ অনেক বড়ো দিঘি কাটার পরও পানি উঠছিল না। সপ্নাদেশ অনুযায়ই যুবরাজ রাম দিঘিতে জীবন বিসর্জন দিলেন।
দিঘি পানিতে ভরে উঠলো। রামসাগর থেকে যাই পুরাতন জমিদার বাড়ি(রাজবাড়ী)।
রক্ষানাবেক্ষন এর অভাবে বাড়িটার অনেক অংশ ভেঙ্গে পরছে। কয়েকশ বছরের পুরাতন কাঠের দরজা দেখে অবাক হলাম।
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বেশ সুন্দর পরিপাটি।
আরও ভালো লাগত যদি পরিচিত কাওকে খুজে পেতাম। ওখান থেকে গেলাম কান্তজীর মন্দিরে। মন্দিরে প্রবেশ করতেই একজন দিদিমা এসে চন্দন কাঠের তিলক কপালে দিয়া দিলেন। মন্দিরের দেয়ালে সুক্ষাতি সুক্ষ কারুকাজ দিয়ে ওই সময়ের ইতিহাস ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। মন্দিরটা তৈরি করতে ৪৮ বছর সময় লেগেছিল।
বোনাস হিসাবে পাওয়া মন্দির প্রাঙ্গনে রাস মেলা। মেলায় বন্ধুদের সাথে ঘুরতে ভালই লাগছিল।
পরেরদিন পার্বতীপুরের খোলাহাটি ঘুরে বড়োপুকুরিয়া কয়লা খনিতে যাই। সাইফুল ভাই পুরা খনি এলাকা ঘুরে দেখান। কন্ট্রোলরুম, খনির নিচে যাওয়া আসার লিফট, কয়লা উত্তোলন ঈত্ত্যদি গানিত্যিক ব্যাখ্যাসহ বুঝাইতে থাকলেন।
এই কয়লা দিয়ে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপন্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ। জনি বন্ধু আমাদের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিয়ে দেখাইতে ছিল কিভাবে এখানে কয়লা আনা হচ্ছে এবং কিভাবে প্রছেস করে বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়লা খনির পাশেই অবশ্তিত।
আমাদের ভ্রমণের শেষ ছিল সপ্নপুরি। বাংলাদেশে আর্টইফিসিয়াল বিনোদন কেন্দ্রের মধ্যে সপ্নপুরি সবচেয়ে বড় ও সুন্দর।
এখন যারা জান নাই, তারা হয়ত বুঝতে পারবেন না। সুন্দর সুন্দর কোর্টেজ, বাগান, মুরাল, বন্য ও মৎস্যপল্লি আরও অনেক কিছু। এককথায় অসাধারণ। রাতে থাকতে পারলে আরও ভালো লাগতো কিন্তু সময় সংক্ষেপের কারনে থাকা হয় নি।
দিনাজপুরে প্রচুর লিচুবাগান দেখে এসেছি।
লিচুর সময়ে আবার যাব আশা রাখি। (সংক্ষেপিত)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।