ক্লান্ত মানুষের কর্মযজ্ঞ গেছে থেমে, সান্ধ্য শহুরে আকাশ বিনয়ে কিছুটা নেমে পৃথিবীর আদিম কোনো এক দিন ডেকে আনে। মানুষের সভ্যতার জন্ম হয় নি তখনও, মৃত্যু অচেনা বলে জীবনকে অশেষ বলে হয় ভ্রম। গাছের অসুখ হয়ে শাখাময় ছিটিয়ে উঠেছে ফুলের শিকার। আর এই সান্ধ্য নগরে, সভ্যতার কৃতজ্ঞ চাদরে রাত নামে।
পৃথিবীর শুরুর এক প্রান্তে উন্মুক্ত মাঠে দাঁড়ানো কোনো আমি বেঁচে থাকার প্রবল প্রাচুর্যে বাহু মেলে জীবনকে প্রশ্রয় দিতে জানি।
হেঁটে যাওয়া একমাত্র কাজ জেনে
পেরুবার একমাত্র স্বপ্নে
দিন জুড়ে হেঁটে যাই পুড়ে ভস্ম ভস্ম রোদে।
যেখানে গাছের ছায়ায় ক্ষুধার্ত শত্রুরা আছে ওঁত পেতে।
তোমার জন্ম হয় নি তখন।
কী এক অদ্ভূত আবেগে জন্মলগ্ন থেকে বেঁচে গেছি পেরুরার প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষায়।
কী পেরুতে হবে
কেন পেরুতে হবে
কিছুই জানি না।
তবু দৌড়ে গেছি
সুড়ঙ্গ উৎরে গেছি
সাঁতার না জানায় কাঠ ধরে ভেসে চলেছি অজানায়।
আর বাতাসের স্পর্শে ফুলে উঠেছে আমার সবল হৃৎপিন্ড।
দৌড়ে গেছি, কোথাও পৌঁছাতে পারি নি।
তোমার আগমন হয় নি তখন।
অবশেষে তোমার জন্ম হল
ক্ষীয়মাণ সুড়কির সুরম্য নগরে।
আনন্দক্লান্তির মানবিক মড়কে।
জন্মেছো কোথাও তুমি পৌঁছাতে পারিনি।
শুধু দৌড়েছি সোৎসাহে বসন্তের রোদে।
তুমিও হেঁটে গেছো পৃথিবীর ওপর
নিয়ম মেনে
ঘাঁটি গেঁড়ে বসে থাকা স্বাভাবিক গন্তব্য মুলুকে।
সময়মত পৌঁছাতে চেয়েছো নিজের আবাস স্থানে।
সময়ের সমস্ত সূত্র মেনে হয়ে উঠেছো বর্তমান।
তবু অপেক্ষার তীর কোথাও লাগে নি।
ক্ষুধায় তৃষ্ণায় বিস্ময়ে ঘৃণায়
সপ্রশ্ন বিবেকের তীর্যক হানায়
গুঞ্জনে গুঞ্জনে আমরা কাঁপি।
পৃথক এ বিস্তৃত যাত্রায় সমাপ্তির এখনও ঢের বাকি।
আমি উৎসাহে হতাশায়
অপ্রাসাঙ্গিক ভালোবাসায় দাঁড়িয়ে
চাঁদ দেখি
আর চাঁদের জলকম্পিত ছায়ার জোনাকি।
অন্ধকারে শিকার হবার আশংকায় থাকি
আর অপেক্ষায় অপেক্ষায় থাকি
দূর নক্ষত্রকে জানিয়ে রাখি আমার দুর্নিবার বাসনা।
আজ নিরেট সভ্যতায় শুয়ে তুমি নিজেও বোঝো না
অনাবৃত ভ্রমনের গান।
হায় চিরায়ত অভিমান!
নিশ্ছিদ্র ছাদের অতলে
ত্রাণকর্তাহীণ পাখা মেলে
অনিরাপত্তায়।
অথচ অজান্তে গেছে
তোমার জীবনে
সমগ্র নিরস্ত্র রাত
সমস্ত নক্ষত্রের প্রহরায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।