*****
নিশ্চয়ই তোমার জাতধর্মে এমন কিছু দেওয়া হয়নি যা ধারণ করে তুমি কোনে ব্যক্তিকে তোমার চেয়ে কিম্বা অন্য কারো চেয়ে সার্বিক বিবেচনায় কম ভাবতে পারো। জাতধর্মের সাথে স্বভাবধর্মের এখানেই বিরোধ, হে করণিক,যদি আজ বুঝতে না-পারো তো আগামীতে নিজে নিজেই বুঝতে পারবে ভেবে স্মরণে রেখো। আর বুঝলেই তখন তুমি দেখবে যে, তোমার ব্যক্তিস্বভাব কোথায় কোনক্ষণে কিভাবে মনুষ্য-স্বভাবে পরিণত হয়েছে, তুমি তা’ ভেবে পাচ্ছ না।
প্রত্যেকেই তোমার মতোই শ্রেষ্ঠত্বকে ধারণ করে, তাই তারা আত্মরক্ষা করে চলে, নইলে আত্মসম্মানিতদের জন্যে কেবল আত্মহত্যার পথটাই ছিল খোলা।
এখানে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থানে অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর।
(জনে জনে ভিন্ন মাত্রায় তবে চূড়ান্তে সমান) ঐ শ্রেষ্ঠত্বটি হচ্ছে, একটি বিশেষ অভাব, স্বনির্ভরতার অভাব, হে করণিক, এখনো নির্বোধ তুমি না-বুঝলেও মনে রেখো, তোমার মতোই প্রত্যেকে শ্রেষ্ঠতম এখানে তার পরনির্ভরতা নিয়ে।
এখানে প্রত্যেককে, নিজের অস্তিত্বের স্বার্থেই, প্রত্যক্ষ কিম্বা পরোক্ষভাবে, অন্যান্যদের (ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের উপস্থিতির) উপর অনিবার্য ভাবেই নির্ভর করতে হয় হে করণিক, অন্যকে অশ্রদ্ধা করে সজ্ঞানে নিজেকে অস্তিত্বহীনতার দিকে ঠেলে দেবে না তুমি, এটাই ধর্মের শাসন।
তোমার পক্ষপাতদুষ্ট স্বভাবটাই তোমাকে অন্যদের বিচারাধীন হতে বাধা দেয় আর সমকালে অন্যদের বিচারক হওয়ার জন্যে তাড়না জাগায়। নিজের স্বভাবটাকেই দমিয়ে রাখতে পারো না, হে অক্ষম করণিক, নিজেকে অন্যদের বিচারাধীনে রেখে রেখে নিজের নিরপেক্ষতাকে প্রমাণ করে দেখাতে যদি পারতে তো, তাদের বিচারের গুরুভারও তোমার উপর দিতে পেরে তারা মুক্ত হতে পারতো। নিজে নিজে বিচারক সাজার ঘৃণ্য তোমার ঐ স্বভাবটির তাড়না থেকে তুমিও মুক্তি পেতে, যে-স্বভাবটি তোমার মানুষে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠতম বাধা।
তোমার সহজাত স্বভাবধর্ম, যেটাকে প্রশ্রয় দিলে তুমি মনুষ্য-স্বভাব নিয়ে মানুষ হয়ে উঠতে পারো না হে ভঙ্গুর করণিক, তোমার জাতধর্ম সেক্ষেত্রে, -তুমি যদি স্বেচ্ছায় চাও তো, তোমার স্বভাবের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, তোমাকে মানুষে পরিণত হওয়াতে সাহায্য করতে পারে। যদিও নিশ্চিত ভাবে ব্যক্তিস্বভাব-বিরোধী প্রত্যেকের নিজেদের সম্প্রদায়ের জাতধর্ম, আত্ম-অনিয়ন্ত্রতদের স্বভাব নিয়ন্ত্রণে জাতধর্মের সামাজিক শাসন, নিত্য সহযোগী হিসেবেই সর্বজনমান্য।
রঙ্গপুর : ২১/১১/২০১১
করণিক : আখতার ২৩৯
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।