[ সরল স্বীকারক্তিঃ চিন্তাগুলো নিজস্ব ... তাই এ লেখাটি পেয়ে অনুবাদ বা সংক্ষেপায়নপূর্বক ভাবানুবাদ ... না করে আর থাকতে পারলামনা .. ধৈর্য্য সহকারে পড়ার আমন্ত্রন রইলো ]
আপনাদের কতগুলো গল্পো বলিঃ
১ম গল্পোঃ
একটা বুড়ো থাকতো উত্তর মেরুতে ...
সাথে বুড়ী বঊ আর কতগুলো এল্ভিস্ .. (ফেরেস্তার মতন কতগুলা পিচ্চি)..
সারাবছর সে আর পিচ্চিগুলা মিলে খেলনা বানায় ..
আর ক্রিস্টমাস্ আসলে সব খেলনা তার যে বিশাল বস্তাটা আছে, তার মধ্যে ভরে ফ্যালে । তারপর বস্তাটা সহ তার অলৌকিক রথে চড়ে বসে ।
রথ'টানা আট/নয়'টা অলৌকিক মেরুহরিণ, উড়ে নিয়ে যায় তাকে লোকালয়ে ... বাড়িঘরের উপর দিয়ে ..
ছাদে রথ নামিয়ে বুড়ো চিমনি বেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢোকে ..
প্রতি বাড়িতে সে বাচ্চাদের জন্য একটা করে খেলনা রেখে তারপর আবার চিমনির ভেতর দিয়ে ছাদে উঠে আসে ... এভাবে সব খেলনা বিলিয়ে দিয়ে সে আবার উত্তর মেরুতে তার বাসায় ফিরে যায় ... আর আগাম বছরের জন্য নতুন করে খেলনা বানাতে থাকে ।
বুঝতেই পারছেন আমি কার গল্পো করছি ... হ্যা স্যান্টা ক্লজ'এর গল্পো এটা ।
এখন আমি যদি একজন প্রাপ্তঃবয়স্ক হয়ে'ও এই গল্পোটাকে শতভাগ সত্যি বলে বিশ্বাস করি এবং আপনার মত একজন সুহৃদ বন্ধু পেয়ে আপনাকে আমার বিশ্বাসের কথা বলি এবং আপনাকে সমবিশ্বাসে বিশ্বাসী হতে প্ররোচিত করি .... তখন আপনি কি করবেন ?
নিশ্চয়'ই আমাকে পাগল ভাববেন !
নিশ্চয়'ই আমাকে ভূতেধরা বা প্রবোধাক্রান্ত ভাববেন !
কেন ভাববেন ? কারন ... যত'ই .. ইনিয়ে-বিনিয়ে .. বানিয়ে বানিয়ে .. বিশ্বাসযোগ্য করে; আমি স্যান্টা ক্লজের কথা বলিনা ক্যানো ... আপনি জানেন এসব রূপকথামাত্র .. উড়ন্ত মেরুহরিণ .. উড়ন্ত রথ .. পিচ্চি-পিচ্চি এল্ভিস .. কখন'ই আপনি দ্যাখেননি .. ছোটবেলায় দাদাদাদির মুখে শুনেছেন মাত্র ।
আর সত্যি বলতে বাস্তবে এদের দ্যাখা পাওয়াটা'ও অসম্ভব বলেই জানেন ।
নিশ্চয়'ই আমাকে ডিলিউশনাল বা ভুত'গ্রস্থ ভাববেন ।
নিশ্চয়'ই বন্ধুত্বের খাতিরে আমাকে সুস্থ্য করে তুলতে চাইবেন ...
কিছু প্রশ্ন করে আমার ভুল ভাঙ্গাতে চাইবেন ... যেমনঃ
- স্যান্টা কিভাবে একটা মাত্র বস্তায় কিম্বা ছোট রথটায় এত খেলনা একসাথে আটায় ?
... আমি উত্তর দিতে পারি - স্যান্টার বস্তা আর রথ যাদুকরী ... সব কিছুই আটানো সম্ভব ।
- যেসব বাড়িঘরের বা এপার্টমেন্টের চিমনি নেই সেসব বাড়িতে স্যান্টা ঢোকে কিভাবে ?
... আমার উত্তর - যাদু দিয়ে স্যান্টা চিমনি তৈরী করতে পারে ...
- ফায়ারপ্লেসে আগুন জ্বলতে থাকলে স্যান্টা চিমনি বেয়ে নামে কিভাবে ?
... উত্তর হতে পারে - স্যান্টার স্যুটটি বিশেষ আগুন'নিরোধোক স্যুট ।
- কখন'ও সিকিউরিটি সিস্টেমে স্যান্টাকে দেখা যায় না কেন ?
... স্যান্টা এক্ষেত্রে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে ।
- স্যান্টা একরাতের মধ্য এত দ্রুত পৃথিবীর সব জায়গায় যেতে পারে কিভাবে ?
... স্যান্টা সময়ের ঊর্ধে ... নিমেষের মধ্য সে সব জায়গায় যেতে পারে ।
- খেলনা গুলো বিতরনের সময় স্যান্টা বৈষম্য বা শ্রেনীপ্রভেদ করে কেন ? ধনীর বাচ্চারা দামী খেলনা পায় আর গরীবের বাচ্চারা সস্তা খেলনা পায় কেন ?
... আমি এক্ষেত্রে বলতে'ই পারি - স্যান্টার কার্যপ্রকার মরনশীল আমরা কখন'ই বুজতে পারবনা ... স্যান্টার অবশ্য'ই কোন কারন আছে ... হতে পারে ... "গরীব বাচ্চাদের দামী ইলেক্ট্রিক খেলনা দিলে পরবর্তীতে তার জন্য ব্যাটারী কিনতে আরো পয়সা লাগবে ... গোদের উপর বিষফোড়া .. তাই স্যান্টা গরীবদের এই বিষফোড়া থেকে বাচাতে তাদের সস্তা খেলনা দেয় । "
প্রশ্নত্তর পর্ব শেষ । আপনার প্রশ্ন গুলো খুব'ই যৌক্তিক আর আমি'ও সবগুলোর উত্তর দিয়েছি।
আমি ভেবে পাচ্ছিনা আমি যা দেখি আপনি কেন তা দেখতে পাচ্ছেননা ..
আর আপনি'ও ভেবে পাচ্ছেননা আমি এমন ভূত'গ্রস্থ পাগলা হলাম কি করে !
কারন আমার উত্তর গুলো আপনাকে তৃপ্ত করতে পারেনি ।
কারন আমার উত্তর গুলো আপনার কাছে পাগলের প্রলাপ সমতুল্য ।
কারন আপনি জানেন .. আগুননিরোধোক স্যুট, যাদুকরী বস্তা, রথ, উড়ন্ত মেরুহরিণ ইত্যাদি একমাত্র ঠাকুর'মার ঝুলি আর হলিউডের মুভিতে'ই সম্ভব .. বাস্তবে না ।
এবার আসি ২য় গল্পেঃ
একরাতে ঘরে বসে আছি ..
হঠাত্ ঘর প্রচন্ড আলোকিত হয়ে উঠলো ..
ঠিক তখন এক ফেরেস্তা এসে আমাকে এক অদ্ভুত গল্পো শোনায় ..
" নিউ'ইয়র্কের এক পাহাড়ের পাশে, প্রাচীন কিছু সোনার প্লেট মাটির নিচে
চাপা পরে আছে .. তারমধ্যে একটি বই ইহুদীদের একটি বিলুপ্ত জাতির যারা উত্তর আমেরিকায় থাকতো । প্লেটগুলোতে বিজাতীয় ভাষায় তাদের বর্ননা আছে । " .. এমনকি ফেরেস্তাটি আমাকে সেই প্লেট গুলোর কাছে নিয়ে গেলো এবং আমার বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসতে সাহায্য করলো .. দুর্বোধ্য বিজাতীয় ভাষার বর্ননা উদ্ধারে আমাকে সাহায্য করলো এবং আমি অবাক হয়ে জানতে পারলাম ... দু হাজার বছর আগে ইহুদীদের বিশাল এক সভ্যতা এই যুক্তরাষ্ট্রে ছিল ।
এমনকি আমি সোনার প্লেটগুলো স্বর্গে ফেরত পাঠানর পুর্বে আমার নিজের কিছু মানুষকে দেখালাম যেন তারা প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে থাকে এবং তাদের স্বাক্ষরিত প্রমান রাখলাম যে তারা দেখেছে ।
এসবের উপর একটা বই'ও বের করলাম ।
এখন এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কি ?যদি আপনি সুস্থ্য মানুষ হন অবশ্য'ই কিছু প্রশ্ন করবেন ... যেমনঃ
- আমেরিকায় দুহাজার বছর আগেকার ইহুদী সভ্যতার নুন্যতম কোন'ও আলামত বা ধংস্বস্তুপ কোথায় যা আমার গ্রন্থে বর্ণিত আছে?
- একটা পুর্ণ সভ্যতার সাম্ভাব্য জিনিষপত্র ... দৈনন্দিন ব্যবহার্য্য হাড়ি-পাতিল, রথ, যুদ্ধাস্ত্র, এসবের কোন'ও নুন্যতম নিদর্শন নাই কেন ?
... আমার উত্তরঃ এখন'ও এগুলোকে খুজে পাওয়া যায়নি, কিন্তু কোন এক নিকট ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে ।
এরকম গন্ডাখানেক প্রশ্ন আপনি করলেন .. এবং প্রতিটির'ই উত্তর আমি দিলাম । বলাবাহুল্য কোনটাই মানষিকভাবে সুস্থ্য আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারলনা ।
পুরো ব্যাপার'টাই আপনার কাছে একটা "ফাপোড়" ছাড়া আর কিছু না ।
এবং বেশিরভাগ সুস্থ্য মানুষের কাছে এটা ভুত'গ্রস্থ প্রলাপ ছাড়া আর কিছু নয় ।
আর এই একই গল্পো যদি অন্যকোন সুস্থ্য মানুষের কাছে বলি, তো স্বাভাবিকভাবে'ই তারা আমাকে ডিলিউশনাল বলবে ... কারন তারা কখন'ই সোনার প্লেটগুলো কিম্বা ফেরেস্তা কোনটাই দেখেনি, এবং ধরে নিবে যে কাহিনিপুরোটা'ই আমার বানানো .. এমনকি প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষর করাটা'ও তারা ভাববে আমি ঘুষ দিয়ে তাদের প্রত্যক্ষদর্শী বানিয়েছি .. আসলে তারা কিছুই দেখেনি ..
সুস্থ্য মানুষমাত্র'ই এরকমটা ভাবা স্বাভাবিক .. তাই নয় কি ?
মজার ব্যাপার হচ্ছে; পৃথিবীতে লক্ষাধিক মানুষ .. হুবহু ঠিক আমার এই গল্পোটার মত একটা গল্পো মনেপ্রানে বিশ্বাস করে .. তাদের ধর্মের মূলভিত্তি বলে মানে - তারা হচ্ছে মর্মন .. আমেরিকার ইয়ুটাহ্ অঞ্চলের সল্টলেক সিটিতে তাদের প্রধান কার্যালয়, মর্মন চার্চ্ ।
আর আমার মত গল্পোটি যে ফেদেছিলো তার নাম - জোসেফ স্মিথ, আমেরিকাতে ১৮০০ সালের দিকে থাকতো .. মাত্র দুশো বছর আগে ।
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, মাত্র দুশো বছর আগে সে এই গল্পোটি বলেছিল আর তার লেখা বইটিতে উল্লেখ করেছিল, " প্লেট থেকে অনুবাদকৃত অংশ" যা আপনি পাবেন " বুক অব মর্মন"-এ ।
এখন আপনি কোন'ও মর্মন'কে জিজ্ঞেস করলে তারা ঘন্টার পর ঘন্টা ইনিয়ে বিনিয়ে একের পর এক উত্তর দিতে পারবে ।
যদি'ও পৃথিবীর বাকি ৫.৯৯ বিলিয়ন মানুষ তাদের এই প্রচেষ্টা নিতান্ত হাস্যকর, বানোয়াট, এবং মিথ্যাপূর্ণ বলেই ধরে নেবে ।
বস্তুতঃ স্যান্টার গল্পের মতো মর্মন'দের গল্পোটি'ও অসাড় ।
এবার ৩য় গল্পোঃ
একবার এক লোক একটি গুহায় বসে আপন ধ্যানে মগ্ন ছিলো ..
হঠাত্ চারদিক আলোয় ভরে গেলো ।
একটি দৈব আওয়াজ আসলো, " পড়ো " !
ধ্যানরত মানুষ'টি অনুভব করলো কে যেনো তাকে জাপটে ধরে পিষে ফেলতে চাইছে ..
কয়েকবার এরকম হল ।
তখন মানুষটি প্রশ্ন করলো, আমি কি পড়বো ?
দৈব আওয়াজ উত্তর দিল, " পড় তোমার প্রভুর নামে .. যে তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ..
মানুষটি ঘোরের মধ্যে দৌড়ে বাড়ি ফিরল .. ফেরার পথে আকাশে বিশাল একটি মুখ দেখতে পেলো .. যেটি বললো যে " আপনি এখন থেকে ঈশ্বরের দূত, ( বা প্রেরিত পুরুষ বা নবী ) আর মুখা'বয়বটি নিজেকে জীব্রায়েল বলে পরিচিতি দিলো ..
রাত্রে স্বপ্নে জীব্রায়েল আরো'ও কয়েকবার আসলো ... এমনকি দিনের বেলায় রক্ত মাংসের শরীরে'ও আসতে লাগলো .. যদি'ও সেই মানুষ'টি ছাড়া আর কেউ কখন'ও জীব্রায়েলকে দেখেনি বা তার আওয়াজ শোনেনি ।
এরপর জীব্রায়েলের সাথে পরিচয়ের প্রায় ১১ বছর পর জীব্রায়েল একটি ঘোড়া সহ মানুষটির কাছে আসলো .. ঘোড়াটির পাখা ছিলো ..
ঘোড়ায় চড়িয়ে তাকে নিয়ে উড়ে চললো ..
জেরুজালেম গেলো, সাত আসমান পেরিয়ে বেহেস্তে গেলো, বেহেস্তোবাসীদের সাথে সাক্ষাত্ করলো ..
এরপর জীব্রায়েল আবার তাকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে দিয়ে গেলো ।
মজার ব্যাপার হচ্ছে এই পুরো ভ্রমনটা হতে এক সেকেন্ডের'ও কম সময় লেগেছে ..
পরবর্তিতে মানুষটি এই উড়ন্ত ঘোড়ায় চড়ার অভিজ্ঞতা সবাইকে বলেছে .. এমনকি জেরুজালেম এর ঘরবাড়ি, বিশেষ স্থাপনা; বেহেস্তের অবস্থা বিস্তারিত বর্ননা করেছে ।
এভাবে প্রায় ২৩ বছর ধরে জীব্রায়েলের সাথে তার সাক্ষাত্ হয় .. এবং ঈশ্বর প্রদত্ত জীব্রায়েলের বানীসমুহ একটি বইয়ে লিপিবদ্ধ হয়।
এখন তাহলে এই গল্পোর ব্যাপারে আপনি কি বলবেন ?
আগে কোথাও এ গল্পো শুনে না থাকলে .. আপনার কাছে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক যে এটাও আগের স্যান্টা, সোনার প্লেট - গল্পো গুলোর মত অসাড়, বানোয়াট, মিথ্যাপূর্ণ এবং অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত উর্বর মস্তিস্কের কল্পনাজাত ..
কিন্তু সাবধান !এরকম একটা গল্পোর উপর ভিত্তি করেই দাঁড়িয়ে আছে ইসলাম ধর্ম .. তথা কয়েক বিলিয়ন মানুষ - মুসলিমদের ধর্ম ।
আর যে মানুষটি গুহায় ধ্যান মগ্ন ছিল তার নাম মুহাম্মদ ।
আর তার বইটির নাম আল- কোরআন ।
আর এই সেই .. কোরআন নাজিলের পবিত্র কাহিনি যা নাজিল হয়ে ছিল মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে ।
যদি'ও কয়েক বিলিয়ন মুসলিম ব্যতিত .. পৃথিবীর আর সবাই এই গল্পোটাকে নিছক " উর্বর মস্তিস্কের কল্পনাজাত " কোন স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয় বলে মনে করে ।
আর তারা এটাও জানে কোরআন মানুষ্য রচিত বই ছাড়া আর কিছু হতে'ই পারেনা ...
এখন আপনি যদি খৃষ্টান হন তো আপনাকে একটু ফিরে তাকাতে অনুরোধ করছি .. মর্মন এবং মুসলিমদের গল্পো আপনি খুব সহজেই ধরে ফেলেছেন যে মিথ্যা, বানোয়াট .. খানিকটা রূপকথার গল্পো'ও বটে ..
সেই একই কারনঃ
কারন আপনি ভালো করেই জানেন, স্যান্টা মিথ্যা, বানোয়াট বুড়া ।
কারন আপনি ভালো করেই জানেন রূপকথার ব্যাং কিম্বা রাক্ষসের মত উপরোক্ত গল্পের ভৌতিক চরিত্রগুলোর কোন বাস্তবিক প্রমান নেই ।
পূর্বপরিচিত বা পূর্বপ্ররোচিত না হলে যে কার'ও পক্ষে'ই সম্ভব এটি বোঝা যে এই গল্পোগুলো উর্বর মস্তিস্কের কল্পনাজাত ফসল ।
অপরদিকে ... কি হাস্যকর ব্যাপার দেখুন;
মুসলিমরা দেখছে এবং বলছে মর্মন'রা ভুত'গ্রস্থ .. তাদের ধর্মটা রুপকথার উপর আশ্রয় ছাড়া আর কিছু নয় ...
আর মর্মন'রাও বলছে মুসলিমরা ভুত'গ্রস্থ কারন তাদের ধর্মটাও রূপকথার উপর দাঁড়িয়ে আছে ।
আর আপনি ... খৃষ্টান হয়ে দিব্যি দেখতে পারছেন, মুসলিম মর্মন উভয়েই ভুত'গ্রস্থ .. কারন দুটো ধর্মই দাঁড়িয়ে আছে রূপকথার উপর ।
এবার আপনার দিকে একটু তাকাই ..
এটা আমার শেষ গল্পোঃ
ঈশ্বর তার সন্তানকে পৃথিবীতে আনবে বলে এক কুমারী- ম্যারী'কে সন্তানসম্ভবা করল ..
ম্যারী আর তার হবু বর- জোসেফ বেথেলহেমে গেলো অনাগত ঈশ্বর পুত্রের জন্ম এবং জন্ম পরবর্তী নথিভুক্তকরনের জন্য ... সেখানে ম্যারী ঈশ্বর পুত্রের জন্ম দিল ।
ঈশ্বর তারকা দিয়ে পথ দেখিয়ে কিছু মানুষকে সেখানে আনলো ।
স্বপ্নে ঈশ্বর জোসেফকে পরিবার নিয়ে ইজিপ্ট যেতে বললো ।
আর ঈশ্বর দেখলো, হেরড ইস্রায়েলের হাজার হাজার সদ্যভুমিষ্ট শিশুদের হত্যা করতে যেনো ঈশ্বরের পুত্র'ও তাদের মধ্যে মারা যায় ।
বড় হয়ে ঈশ্বরের পুত্র দাবী করলো সে স্বয়ং ঈশ্বর প্রেরিতঃ " আমি'ই পথ, আমি'ই সত্য, আমি'ই জীবন । "
সে অনেক যাদুকরী দৈব ঘটনা ঘটালো .. যেমনঃ অসুস্থ্যকে সুস্থ্য করা, পানিকে শুরায় পরিনত করা , মৃত ব্যক্তিকে জীবন দান .. এই দৈবকান্ডে নিজেকে ঈশ্বর বলে প্রমান করলো ।
কিন্তু শেষতক .. মৃত্যপরোয়ানা নিয়ে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা যান ।
তার শবদেহ রাখা হয় একটি কবরে । তিন দিন পর দেখা যায় কবরটি ফাকা পড়ে আছে, শবদেহটি নেই ।
এবং মানুষ'টি আবার'ও বেচে উঠে, তার দেহের ক্ষতগুলো তখন'ও ছিল যাতে করে সবাই নিঃসন্দেহ হয় , আর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মানুষের সামনে উপস্থিত'ও হয় ।
এরপর স্বর্গে চলে যায় আর ঈশ্বরের ডান হাতের উপর বসে .. তাকে আর পরবর্তিতে দেখা যায়নি ।
আজ এই সময়ে আপনি সেই ঈশ্বর পুত্রের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরী করতে পারবেন .. আপনি যদি প্রার্থনা করেন তো সে আপনার প্রার্থনার জবাব দিবে । সে আপনাকে রোগমুক্ত করবে, দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াবে ইত্যাদি ইত্যাদি ।
ঈশ্বর পুত্র আপনাকে বেহেস্তি জীবন'ও দিতে পারে আপনার .. আর পুণ্য করলে মৃত্যুর পর আপনাকে বেহেস্তে তার পাশেই জায়গা করে দিতে পারে।
হ্যা, অবশ্য'ই এটা যীশু খৃষ্টের গল্পো ।
আপনি কি এই গল্পোটা বিশ্বাস করেন ?
যদি খৃষ্টান হন তো অবশ্য'ই এটা বিশ্বাস করেন .. তাই না ?
আর আমি যদি সন্দেহঃবশত আপনাকে প্রশ্ন করতে থাকি .. তার বিপরীতে আপনার হাজার হাজার উত্তর'ও আছে ...
ঠিক যেমনটাঃ ১ম গল্পের ক্ষেত্রে, স্যান্টার ব্যাপারে এই আমি'ই আপনাকে হাজার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম ।
সত্যি বলতে কি ... আমাকে যেমন আপনি পাগল ঠাউরেছেন .. এ ক্ষেত্রে আমি'ও আপনাকে পাগল ছাড়া আর কিছুই ঠাউর করতে পারছিনা ... কারন একজন খৃষ্টান হয়ে আপনি উপরের শেষ গল্পোটি মনেপ্রানে'ই বিশ্বাস করেন ।
আপনার সাহায্যার্থে বলছি, পৃথিবীর বাকি ৪ বিলিয়ন মানুষ যারা খৃষ্টান নয় তারা ঠিক সেভাবেই আপনার খৃষ্টিয় গল্পোটাকে দেখে,
ঠিক যেভাবে এই আপনি আমার স্যান্টার গল্পোটাকে দেখেছেন ...
ঠিক যেভাবে আপনি মর্মন আর মুসলিমদের গল্পোটাকে দেখেছেন ...
ঠিক সেভাবেই সত্য এবং বাস্তব চোখে আমি, মর্মন কিম্বা মুসলিমরা আপনার খৃষ্টিয় গল্পোটাকে নিছক উর্বর মস্তিস্কের কল্পনাজাত একটি ভৌতিক গল্পো বলেই স্থির করি ।
কারন .. ঐশ্বরীক ( যাদুকরী) বীর্য্যে ম্যারীর পেটে সন্তান আসা, ঐশ্বরীক (যাদুকরী) তারকার পথ দেখানো .. কিম্বা মৃত্যুর পর পুনরায় যীশুর পুনরুত্থান সব'ই স্রেফ চাপাবাজী ছাড়া আর কিছু না ...
দুনিয়ার অখৃষ্টান ৪ বিলিয়ন মানুষ সবাই কিন্তু আমার সাথে একমত ।
খৃষ্টীয় বিশ্বাসের বাইরের লোকজন কিন্তু এই গল্পের ফাক কোকর গুলো ঠিক'ই খুজে পায় ... শুধু আপ্নি'ই পাননা ।
ঠিক যে কমন সেন্স দিয়ে আপনি বুঝেছেন আমার স্যান্টার গল্পোটা বানোয়াট রুপকথা ..
ঠিক যে কমন সেন্স দিয়ে আপনি বুঝেছেন মর্মন আর মুসলিমদের গল্পোটা বানোয়াট রুপকথা ..
ঠিক এক'ই সুস্থ্য স্বাভাবিক চিন্তা দিয়ে আমি বা একজন মর্মন বা একজন মুসলিম বুঝতে পারছি আপনার খৃষ্টীয় কাহিনীগুলো সম্পূর্ণরূপে ...
" উর্বর মস্তিস্কের কল্পনাজাত রূপকথা " ।
দুঃখজনকভাবে শুধু আপনি আমাদের সত্যোপলব্ধিটাকে গ্রহন করতে পারছেন না । কারন অবশ্য'ই ধর্মের প্রতি অন্ধবিশ্বাস যা হয়তো কিছুটা পিতৃপ্রদত্তভাবে আপনার মাঝে ঢুকে আছে ... যা আপনার সত্য- স্বাভাবিক চিন্তা দিয়ে বস্তুর বিচার করা থেকে বিরত রাখছে ।
... অথচ আপনি ঠিক'ই অন্যদের গল্পের ফাক ধরে ফেলছেন শুধু নিজের বেলায় না ।
... নিজের এই দ্বৈতাচরন থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে .. হয় আপনাকে আমার স্যান্টার গল্পো, জোসেফের সোনার প্লেটের গল্পো এবং মুহম্মদের জীব্রায়েলের গল্পোগুলো'কেও বিশ্বাস করতে হবে .. নয়তো সবগুলোকেই ( আপনার খৃষ্টীয় গল্পোগুলো সহ) প্রত্যাখ্যান করতে হবে ।
কোনটা করবেন সেটা আপনার অভিরূচি ।
[মূল লেখাটিঃ http://godisimaginary.com/i7.htm ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।