আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিউজিক ভিডিও রিভিউ - তেরি মেরি বাংলা ভার্সন

আই লাভ দ্যা স্মোক, আই লাভ দ্যা স্মোকি লাইফ। সব ধোয়াটে থাকবে। ইচ এন্ড এভরিথিং। তেরি মেরির বাংলা ভার্সনের একদম শুরুতেই একটা বড়সড় হোচট খাইলাম। নীচে লেখা সৈয়দ রাসেল।

ভাবলাম, ক্রিকেটে ভূমিকম্পের শিকার হয়ে রাসেল ভাই কি ঢালিউডে পা রাখলেন নাকি। প্রথমে ভাবলাম টাইপিং মিচটেক। শাহাদাত রাজীব লিখতে গিয়া সৈয়দ রাসেল লিখসে। পরে দেখি একটা লুক গামছা ঝাড়তে ঝাড়তে গেন্জি গায়ে দিয়া লুংগি পইড়া পিছনে কার জানি দৌড়ানি খাইয়া আমার দিকে আইতাসে। চেহারা দেইখা বুঝলাম, এইটা সৈয়দ রাসেল ও না, শাহাদাত রাজীবও না।

এ নবাগত এক্টর। মেজাজ বিলা হইয়া গেলু। আরে বেডা ডিরেক্টর, দেশে কি রাজীব ভাই ছিলোনা। বললেই তো শাহরুখ খানের মতন এক্টিং কইরা দিতো। যাই হোক, তারপরে দেখি একটা শাড়ি পড়া ওম্যান = মখিলা মুখ কুচকাইয়া তাকাইয়া আছে আর নায়ক ভাইজান তার দিকে অবজ্ঞার দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে করতে তার থেকে ভাগতাসে।

নেক্সট শটে দেখি নায়কের বামহাত লুংগির একটি বিশেষ স্থানে আর নায়িকা আগের মতই নাক মুখ কুচকাইয়া আইসা একটা গাছের গায়ে হেলান দিলো। তারপর চোখমুখে কৃত্রিম সেন্টিমেন্ট আইনা নায়কের দিকে হাত বাড়ায়া দিসে। বুঝলাম, ঘটনা ভয়াবহ। নায়ক তাহার সহিত অর্থের বিনিময়ে কুকর্ম করিয়া অর্থ পরিশোধ তো করেই নাই বরং তাড়াতাড়ি ভাগতাসে। তাই এই বেদনা।

কিন্তু তাই বইলা তুই এমন অশ্লীলভাবে মুখ কুচকাবি? বলি, তোর ঘরে কি পারসুনা মার্কা ভিডু ক্যামেরা ছিলোনা? ব্ল্যাকমেল করতি। সুরসুর কইরা টাকা দিয়া যাইতো। সাথে বখশিশ। বুকা বাংগালী নারী। বুদ্ধিশুদ্ধি নাই।

তারপর কি হইতে কি হইয়া গেলু। নায়িকা নায়কের হাত পা ধইরা কানতে কানতে কইলো, “ হাতে ধরি পায়ে পড়ি যাইয়ো নাগো ময়নার বাপ আমারে তালাক দিয়া যাইয়ো না” তারপর মাটিতে বইসা একটু বেদনার এক্সপ্রেশান দিয়াই একটা বাচ্চারে কুলে নিলো। বুঝলাম ঘটনা খ্রাপ। নিজেরে দুইটা গালি দিলাম। নাউজুবিল্লাহ, কি কাহিনীরে কি মনে করলাম।

গালে দুইটা চপেটাঘাত করলাম। এরা স্বামী-স্ত্রী। স্বামী কোনো কারনে মাইন্ড খাইয়া ঘর থেইকা ভাগতাসে আর বুকা মহিলা তার পিছনে মুখ কুচকাইয়া দৌড়াইয়া মরতাসে। তারপর যেই ভংগিতে হাটতে হাটতে কইলো, “ছোড ছোড পোলামাইয়া লইয়া আমি কই যামু, আমারে ফালাইয়া দিয়া যাইয়োনা” তাতে আমি টাশকি খাইলাম। এই বয়সেই দুই বাচ্চার মা? বাল্যবিবাহের গুষ্টি কিলাইলাম কতক্ষণ।

এতক্ষণে নায়কের ধৈর্যের বাধ ভাঙ্গলো। নৌকায় উঠতে উঠতে জানায়া দিলো যে এই মেয়ের সাথে সে ঘর করবেনা। হাতে ধরলেও লাভ নাই, ঠ্যাং এ পড়লেও লাভ নাই। নায়কের বয়স দেইখা আমি আবারো টাশকি খাইলাম। নিজের চাইতে কয় বছরের সিনিয়ররে বিয়া করসে আল্লাহ মালুম।

আবার এই বয়সেই দুই বাচ্চার বাপ। নারে ভাই, ডিজুস যুগের পুলাপাইন। কয়দিন পর মনে হয় দেখমু জন্মের সময়ই একটা গার্লফ্রেন্ড আরেকটা বাচ্চা নিয়া পয়দা হইসে। তবে গান গাওয়ার সময় নায়কের এক্সপ্রেশান দেইখা ভালো লাগলো। আমার খালাত বোন সাকিব খানের মত অভিনয়।

কিন্তু তার বউ আবার তার হাতে পায়ে ধরার কথা কইলো। তবে এইবার আর হাতে পায়ে পড়েনাই। হাত পা ঘুরায়া পেচায়া চোখ ডইলা পানি বাইর করার চেষ্টা করতে করতে কইলো। ভালোই করসে। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় বেশী উঠাবসা ভালোনা।

তবে পরিচালকরে একটা মাইর লাগাইতে ইচ্ছা করসিলো। আরে বেডা কিপটা, তোর পকেটে কি একটু গ্লিসারিন কিনার টাকাও নাইরে? মাইয়াডারে এই বয়সে দুই বাচ্চার মা বানায়া দিলি। আবার তোর লাইগা চোখ দিয়া পানিও বাইর করবো নাকি? শালা ছ্যাচরা ডিরেক্টর। তারপর একটা মর্মস্পর্শী সোলো আরম্ভ হইলো। সোলোর সাথে সাথে নায়িকা নদীর পার ধইরা হাটতে হাটতে নায়কের নৌকার দিকে আগাইলো।

এই দৃশ্য দেইখা কষ্টে আমার বুকটা ফাইট্টা গেলো। কানতে কানতে চোখ লাল কইরা ফালাইলাম। এমন সময় খেয়াল করলাম কান্নাডা হয়নাই। চোক্ষে গ্লিসারিন দিতে ভুইলা গেসি। যাইহোক, ততক্ষণে সন্ধ্যা নামসে।

অন্ধকারে যা দেখলাম তাতে উম্মাই গড। নৌকার উপর নায়ক না এইটা? শালা এহনো যায়নাই। নায়িকা শাড়ী চেন্জ কইরা ফালাইলো আর তুই বেটা একটা নৌকাই স্টার্ট দিতে পারলিনা? তরে লগি বৈঠা দিয়া বাইড়াইতে মুনচায়। অথর্ব। এরপরেই শুরু হইলো ক্লাইমেক্স।

ক্লাইমেক্সে আমার গায়ের লোম পুরাই খাড়ায়া গেলো। এই পোলায় দেখি পুরা পরিমল। স্বভাব চরিত্রে ব্যাপক মাত্রার প্রবলেম। কোন এক মেম্বার মাইয়া নাকি তারে বিয়া করার আশ্বাস দিছে। জমিও নাকি লেইখা দিবো।

তবে রে শালা লোভী, ধান্দাবাজ। তোর ঘরে কি জমি নাই, মা- বোন নাই? সামান্য জমির লুভে তুই বউ-বাচ্চা ছাইড়া দৌড় দিলি। অই মেম্বার মাইয়ার নাম জানোস তুই? সাহারা খাতুন। যাহ, বিয়া কর। সুখে থাক।

২৪ ঘন্টা ফেয়ার এন্ড লাভলী মাখ। বিয়ায় দাওয়াত দিস। মাগনা খানা ভালু পাই। কিন্তু এরপরই যা ঘটলো তাতে বুঝলাম নায়কের চোখে সমস্যা আছে। নিজের বউরে সাহারা খাতুন মনে কইরা কয়লার মতন কালো কইয়া দিলো।

আফসুস। বেটায় মনে হয় রাস্তায় কখনো ক্যানভাসার দেখে নাই। দেখলে জানতো যে অল্প বয়সে টুটটুট বেশী করলে চোখ নষ্ট হয়। যাই হোক, তারপর গাইতে লাগলো “তুই কয়লার মত কালো তোরে লাগেনাযে ভালো বাড়াইস না এ বুকেতে জ্বালাআআআআআআআ” আআআআআ কইয়া পুলায় যে টান দিলো তাতে গরু, ছাগল, আবুল সবার চোখ দিয়া পানি বাইর হইতে বাধ্য। আমি তো কোন ছাড়।

আহহহহহহ, কষ্ট। নায়িকা আবার মুখ কুচকাইয়া শুকনা চোখ মুইছা আরো শুকনা বানানোর ট্রাই কইরা মাটিতে গড়ান দিয়া আল্লার কাছে ভিখ মাঙতে লাগলো। তার কষ্টে আকাশ পাতাল কাদিয়া উঠিল। দৈববাণী হইলো, “মাটিতে পড়িস না গাধী। তুই না প্রেগন্যান্ট?” দৈববাণী শুনিয়া নায়িকা আবার নায়কের পিছে পিছে হাটতে লাগলো।

নায়ক যতই বলে, “এক তালাক দুই তালাক দিলাম বাইন তালাক দিলাম তোরে তোরে নিয়ে সংসার আমি করবোনা” – ততই নায়িকা মুখ কুচকাইয়া ওভারএকটিং করিয়া শুষ্ক চোখ মর্দন করিয়া আরো শুষ্ক বানাইতে লাগিলো। তাদের বিরহে প্রকৃতি বিরক্ত হইয়া গেলো। ফলাফলস্বরুপ সন্ধ্যার অন্ধকার হঠাৎ বিকালের আলোয় ভরে গেলো। রাত ঘনাইলো। নায়িকাও খেপিয়া গেলো।

হারিকেন হাতে নিয়া নায়কের কাছে গেল। নায়ক গাধাটায় তখনো সাহারা খাতুনের কাছে না গিয়া গাছের নীচে বইসা কলা চুসতেসিলো (গবেট কুনখানের। খালি সময় নষ্ট করে। ) নায়িকা আসলো। চোখে চোখে একটু ডিস্টিং ডিস্টিং করার পর নায়িকা নায়করে হুমকি দিলো।

তার অনুমতি না নিয়ে বিয়ে করলে সে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবে। আমি আনন্দে চিক্কুর মারলাম। “সাব্বাস । এই না হইলে বেডি। দে আরো হুমকি দে।

” হুমকি খাইয়া ভয়ে নায়কের লুংগি ভিজে গেলো (যদিও অন্ধকারে দেখা যায়নাই)। সে তখন নায়িকার পায়ে পইড়া ক্ষমা চাইলো। আআআআ কইরা আবারো কঠিন চিক্কুর। তাতে নায়াগ্রা জলপ্রপাতে ধূলিঝড় উঠল। সাহারা মরুভূমিতে বন্যা হইয়া গেলো।

নায়িকাও টাল্টি পাল্টি না কইরা ক্ষমা কইরা দিলো। আমি আশায় ছিলাম অন্তত একটা থাপ্পড় অন্তত মারবো। তাইলে নায়কের নকল মোচটা খুইলা যাইতো। কিন্তু আমারে হতাশ কইরা হ্যাপি এন্ডিং হইলো। এইটুক হইলেও চলত।

কিন্তু এরপর হালকা একটু রুমান্স হইলো তাদের মধ্যে। তা হতেই পারে। কিন্তু তারপর যা দেখাইলো তা ভয়ংকর। নায়ক নায়িকা নীচের দিকে চলে গেলো আর একটা হারিকেন ঝুলানো দেখা গেলো। পুরা গানে নায়িকার হাটাচলায় মনে হইসে ৭-৮ মাস চলে।

এই সময়ে.... নাহ। অশিক্শিত জনগোষ্ঠীরে নিয়া আর পারা গেলোনা। এইবার যদি উল্টাপাল্টা কিছু হইসে শালার পুত নায়ক তোর একদিন কি আমার দশদিন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.