আগেই বলে রাখা উচিত যে কোরবানী ঈদে এখানে দেশের মত মজা, হৈ হুল্লোড় হয় না। "দাম কতো? দাম কতো?" কেউ জিজ্ঞাসা করেনা। দিনভর হাম্বা বা ম্যা-ম্যা ডাকও কানে আসেনা।
বিদেশে অনেকেই কোরবানী দেয়। আমরা প্রথমে ঠিক করলাম অন্য আরো ছয় পরিবারের সাথে মিলে একটা গরু দিব।
এখানে কোরবানী সাধারণত ভাগেই দেয়া হয় কারণ দেশের মত মাংস বিলাবার মানুষ এখানে মিলে না। ভাগ পুরোটাই নিজের পকেটে! তিন ভাগ করবার চিন্তার কোন ব্যপারই নেই। আর এই ভাগ সেই ভাগও না। এখানকার গরু পাহাড়াকৃতির - শুনেছিলাম হাজার পাউন্ডও ছাড়িয়ে যায়।
যাই হোক, কিন্তু যখন বুঝলাম যে প্রায় ৫০ পাউন্ড মাংস আমাদের দু'জনকে খেয়ে হজম করতে হবে তখন মনে মনে প্রমাদ গুনলাম।
আশেপাশের বাঙালী বাড়িতে মাংস পাঠাবার কোন কারণ নেই কারণ তারাও একই গরুর কোরবানীতে সামিল থাকবে। আমি পাঠালে তারাও আমাকে তাদের ভাগ থেকে মাংস পাঠাবে। কিন্তু গরু সেই একই। প্লাসে মাইনাসে জিরো।
শেষ পর্যন্ত এসব ভেবে কোরবানী দেয়ার পরিকল্পনা বাদ দেয়া হলো।
দেশে টাকা পাঠিয়ে দিলাম শ্বশুরবাড়িতে, ওখানেই আমাদের নামে কোরবানী দেয়া হলো। আমার শ্বাশুরী প্রায় সব মাংস বিলিয়ে দিলেন গরীবদের মাঝে। ফোনে শুনেই ব্যপারটা ভাল লাগল।
যারা প্রবাসে কোরবানী দেন তাদের প্রতি কোন বিদ্বেষ আছে এটা কেউ ভাববেন না আবার। এখানে অনেকদিক থেকেই কোরবানী দেয়া সহজ বরং।
গরু ফার্মে গিয়ে পছন্দ করে আসা যায়। পরদিন নির্দিষ্ট সময় গিয়ে মাংস ভাগাভাগিতে উপস্থিত থাকতে হয়। এত সুন্দর করে ফার্মের লোকজন প্যাকেট করে কার্ডবোর্ড বক্সে মাংস দিবে যে বাসায় এসে আর কোন ঝামেলাই করতে হয় না। বাসায় এনে শুধু প্যাকেট ফ্রিজে ভরে রাখা। কিন্তু দু'জন মাত্র মানুষ মিলে এত মাংস কিভাবে খেয়ে শেষ করবো সেই দুঃশ্চিন্তাতেই এখানে কোরবানী দেয়া হলো না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।