শহীদের খুন লেগে, কিশোর তোমার দুই হাতে দুই, সূর্য উঠেছে জেগে। -------হাসান হাফিজ
শুনতে কিছুটা অদ্ভুত লাগলেও মৃতের দিন আসলে একটা উৎসবের নাম। প্রতিবছর নভেম্বর মাসের ১ ও ২ তারিখে মেক্সিকোতে এ উৎসব উদ্যাপিত হয়ে থাকে। এ দুই দিন দেশটিতে সরকারি ছুটি থাকে। মেক্সিকো ছাড়াও ব্রাজিল, স্পেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মৃতের দিনটি পালিত হয়ে থাকে।
মূলত ৩১ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে উৎসব শুরু হয়। মেক্সিকানরা মনে করেন, মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, বরং মৃত ব্যক্তি বা অন্ততপক্ষে মৃত ব্যক্তির স্মৃতিকে হাসি-আনন্দের মধ্য দিয়ে উপভোগ করতে হবে। দিনটিতে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুরা এক হয়ে তাঁদের মৃত প্রিয়জনদের জন্য প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি মৃতদের কবরে বিভিন্ন ধরনের খাবার ও পানীয় উপহারস্বরূপ রেখে আসেন। শিশুদের কবরের পাশে রাখেন খেলনা।
মৃতদের সম্মান দেখানোর জন্য তাঁরা বেদি তৈরি করেন, যেখানে চিনির তৈরি কঙ্কাল ও ম্যারিগোল্ড ফুল থাকে। মেঙ্কিানদের এ উৎসবটির ইতিহাস বেশ পুরনো। প্রায় তিন হাজার বছর ধরে মৃতদের সম্মানার্থে এ প্রথা চলে আসছেন। অ্যাজটেকদের সময়ে মাসব্যাপী এ উৎসব চলত। অ্যাজটেকরা মৃত্যুর নারী নামে পরিচিত তাদের দেবীকে উৎসবটি উৎসর্গ করতেন।
পরে স্পেন অ্যাজটেক দখল করে নিলে সেখানে ক্যাথলিকরা প্রধান হয়ে ওঠে। তখন থেকে প্রথাটি খ্রিস্টানদের 'অল সেইন্টস ডে'-এর সঙ্গে মিশতে শুরু করে। উৎসবটি যাঁরা পালন করেন তাঁদের বিশ্বাস, এভাবে তাঁরা তাঁদের প্রিয়জনদের আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে পারেন। প্রিয়জনদের আত্মা তাঁদের আরো কাছে আসবে ও তাঁদের প্রার্থনা শুনতে পাবে। অনেকে মনে করেন, কবরে যে খাবারগুলো রাখা হয়, আত্মারা তার মূল উপাদান খেয়ে থাকে।
ফলে এসব খাবার পরে যখন আয়োজকরা খান তখন এতে কোনো পুষ্টিগুণ থাকে না। অনেকে দিনটি উদ্যাপন করেন যাতে ভাগ্য তাঁদের সহায় হয়। দুদিনের এ উৎসবের প্রথম দিন মৃত শিশুদের এবং দ্বিতীয় দিন প্রাপ্তবয়স্কদের সম্মান দেখানো হয়। প্রথম দিনটি তাই নিষ্পাপদের দিন নামেও পরিচিত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।