রাস্তায় যানজট, অফিসে কাজের চাপ বা বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা— এ রকম বহু কারণে বাসায় ফিরতে দেরি হয়। ফলে রাতের খাবার খেতেও দেরি। তারপর ঘুম। প্রচলিত ধারণা রয়েছে দেরিতে খাওয়া আর ভরা পেটে ঘুমাতে যাওয়া শরীরকে স্থুল বানিয়ে দেয়।
ডান নিউট্রিশন সেন্টার অ্যান্ড অরিগন হেলথ অ্যান্ড সাইন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই তথ্যে বিপরীত মত দিয়েছেন।
তাদের গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, রাতে দেরিতে খেলে মানুষ মুটিয়ে যায় তা শুধুই কুসংস্কার। আসলে মোটা বা চিকন হওয়ার কারণ মানুষের খাওয়ার সময়ের উপর কখনও নির্ভর করে না।
ছোটবেলায় রাতে চাদরের নিচে শুয়ে টর্চলাইট জ্বালিয়ে গল্পের বই পড়েছেন অনেকেই। কিংবা আপনার বাচ্চার আছে কাছ থেকে টেলিভিশন দেখার অভ্যাস। বড়রাও অনেক সময় এই কাজ করে থাকেন।
প্রচলিত ধারণা এই কারণে চোখ নষ্ট হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি অফ মেডিসিনের গবেষকরা বলছেন, “এসব কারণে চোখ কখনও নষ্ট হয় না। শুধু সাময়িক সময়ের জন্য চোখে শুষ্কতা দেখা দিতে পারে। চোখ খারাপ হয় ভিটামিনের অভাবে। আর যারা কাছ থেকে টিভি দেখেন বা ক্যালেন্ডারে তারিখ দেখেতে গিয়ে কাছে এগিয়ে যান, তাদের দৃষ্টিশক্তি আগেই কমে গেছে।
তাই দেরি না করে ডাক্তার দেখিয়ে চশমা নিন।
অনেকেই পুরো সপ্তাহে ঘুম হারাম করে কাজ করেন। ফাঁকে দু-চার ঘণ্টা ঘুমান। আর ছুটির দিনে ১০-১২ ঘণ্টা ঘুমিয়ে ভাবছেন, বাকি থাকা ঘুমগুলো পুষিয়ে নিলাম। তাদের জন্য দুঃখের সংবাদ হচ্ছে, এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ।
প্রতিদিন অন্তত ৬ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। সারা সপ্তাহ না ঘুমান আর ছুটির দিনে ঘুম পুষিয়ে দেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। জানা গেল ইউনিভার্সিটি অফ পেনসেলভেনিয়া অফ মেডিসিনের গবেষকদের কাছ থেকে।
ভিটামিন-সি ঠান্ডা, সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা করে। তবে গবেষণার ফল অন্যরকম।
কক্রেন লাইব্রেরির গবেষণাধর্মী প্রকাশনা থেকে জানা যায়, প্রতিদিন ভিটামিন-সি খেলে পুরোপুরি না, কিছু পরিমাণ সর্দি-কাশি দূর করতে সাহায্য করে।
অনেকেই মনে করেন মোটা শরীরে রোগ হয় বেশি। এটাও জেনে রাখুন স্থুল দেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও অধিক। জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০ কেজি বেশি তারা দীর্ঘদিন বাঁচেন। এছাড়া চিকন মানুষরাই সাধারণত হৃদরোগ আর নিউমোনিয়াতে ভোগেন বেশি।
আবার যারা মোটা তারাই শুধু স্বাস্থ্য কমাতে ব্যায়াম করেন। তবে পাতলা মানুষদেরও শরীরচর্চার প্রয়োজন আছে। মোটা-চিকন বলে কোনো কথা নেই। স্বাস্থ্যকর আর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খাওয়া সবার জন্যই জরুরি। ফাস্টফুড বা ক্যালরিযুক্ত খাবার চিকন স্বাস্থ্যের মানুষদেরও হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
তাই কী খাচ্ছেন সেটা বুঝেশুনেই খাওয়া দরকার।
প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি পান করা ভালো— কথাটা আমরা সবাই জানি। তবে উল্টো ব্যাপারও আছে। অতিরিক্ত পানি পান করলেও শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এমন কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি যে বেশি পরিমাণ পানি শরীরে যেতেই হবে।
সরাসরি পানি পান করা ছাড়াও প্রতিদিনের খাবার থেকেও শরীর পানি পায়। তাই সারাদিন ঠিকমতো পানি পান করতে না পারলেও, বিভিন্ন খাবার থেকে শরীর পানির চাহিদা পূরণ করে নেয়। তাছাড়া তাপমাত্রা, মানুষের কাজের ধরন, ঘামের পরিমাণ ইত্যাদির উপরেও পানি গ্রহণের মাত্রা নির্ভর করে। এই জন্যই বলে পরিমাণমতো পানি পান করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।