আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অধিনায়কের ব্যাটে চড়ে নাটকীয় জয় বাংলাদেশের

রফিকুল ইসলাম ঃঃঃ----- ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে ১৩২/৮ বাংলাদেশ ১৯.৫ ওভারে ১৩৫/৭ ফল : বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী সাইদুজ্জামান যেন স্বপ্নে আঁকা পথ ধরে শেষ হওয়া ম্যাচ! অধিনায়কত্বের প্রথম দিনে টসটা জিতলেন। বোলারদের সাজানো বাগান যখন ব্যাটসম্যানরা লণ্ডভণ্ড করে দিতে বসেছেন, তখন সেটি এক লহমায় ফুলেল করে তুললেন মুশফিকুর রহিম। রবি রামপালের করা ম্যাচের শেষ ওভারের পঞ্চম বল গ্যালারিতে আছড়ে ফেলে ৩ উইকেটে জয়ের সঙ্গে যেন আগের দিনের ঘোষণাই দিলেন নতুন অধিনায়ক, 'সব কিছু নতুন করে শুরু হোক। ' সেই 'নতুন শুরু'টাও হলো কি না টোয়েন্টি টোয়েন্টির অচেনা জগৎ পেরিয়ে! যে খেলাটা বলতে গেলে খেলেই না বাংলাদেশ। যে খেলা ২৪ ঘণ্টা আগেও রহস্যাবৃত মুশফিকদের কাছে।

যে ধরনের ক্রিকেটে প্রতিপক্ষকে ৮ উইকেটে ১৩২ রানে আটকে ফেলেও হারতে বসেছিল বাংলাদেশ। আইপিএলের বাজারে এটা লড়াই করার মতো কোনো পুঁজিই না। কিন্তু মিরপুরের উইকেট বিবেচনায় এতে পর্যাপ্ত অনুপ্রেরণা আছে। ইনিংসের মাঝপথে মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে ক্যারিবীয়দের অনুপ্রাণিত হওয়ার বাড়তি উপাদানও জুগিয়েছে বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসা ইমরুল কায়েস বিদায় নেওয়ার পরের বলেই আউট টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের 'নিউক্লিয়াস' সাকিব আল হাসান।

মারলন স্যামুয়েলসের সে বলটির ফ্লাইটই বুঝতে পারেননি জাতীয় দলের সদ্য সাবেক এ অধিনায়ক। পরের ওভারে আকাশে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অলক কাপালীও। শীতের দিনে ঝুপ করে সন্ধ্যা নামার মতো ৪৯ রানে ১ উইকেট থেকে ৫২ ছুঁতেই চার বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান সাজঘরে। সে চোট তবু মেনে নেওয়া যাচ্ছিল ক্রিজে মোহাম্মদ আশরাফুলের উপস্থিতির কারণে। ২০০৭ টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বধের পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা তখন মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাটে।

অপর প্রান্তে টপাটপ উইকেট পতনের চাপেই কি না, স্যামুয়েলসের করা দূরের বল তাড়া করতে গিয়ে তাঁর দেওয়া ক্যাচটা অ্যান্থনি মার্টিন ধরতেই উল্লাসে মেতে ওঠে ক্যারিবীয়রা। উপচেপড়া গ্যালারিতে তখন শোকের নিস্তব্ধতা। এ প্রজন্মের নাসির আছেন। প্রয়োজনে নাঈম ইসলামেরও ছক্কা-টক্কা মারার সুনাম আছে। এ দুজনের আগে ব্যাটিংয়ে নামা মুশফিককে নিয়ে সে তুলনায় আশার বৃত্তটা ছোট।

দেশীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়েও যে নতুন অধিনায়কের টোয়েন্টি টোয়েন্টি সামর্থ্য নিয়ে মৃদু সংশয় আছে! কানাঘুষাটা মুশফিকের কানেও গিয়ে থাকবে। এ জাতীয় গুঞ্জন থামিয়ে দেওয়ার জন্য গতকালের মতো ভালো উপলক্ষ্য আর কী হতে পারে! হাত খুলে খেলার জন্য একটু সময় নেন। কাল সে সময় পর্যাপ্তই ছিল। রান রেটের তাড়া নেই। তবে প্রয়োজন ছিল এমন একজন ব্যাটসম্যানের, যিনি দায়িত্ব নিয়ে দলের ইনিংসের হাল ধরবেন।

অধিনায়কত্ব শুরুর আগের দিনই বলেছিলেন, 'আমাদের বোলাররা ভালো করছে। কিন্তু জিততে হলে ৬০ ভাগ দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটসম্যানদের। ' সে দায়িত্ব নেব-নিচ্ছি করেও শেষমেশ সে দায়িত্ব কেউ নেননি। অগত্যা অধিনায়ক তাঁর সরু কাঁধেই বইলেন দলকে। তরুণ নাসিরকে সঙ্গী করে ৩৫ রানের মহামূল্যবান সপ্তম উইকেট জুটি ভাঙতেই মুশফিক আবারও একা।

তখনো জয় থেকে ৫ রান দূরে বাংলাদেশ। স্ট্রাইকিং এন্ডে আবদুর রাজ্জাক। আর বোলার রবি রামপাল। ফাস্ট বোলিংয়ের সামনে রাজ্জাকের অসহায়ত্বের কথা কে না জানে। তাই ওই ওভারের চতুর্থ বলটা রাজ্জাক কোনোরকমে ব্যাটে-প্যাডে খেলে প্রান্ত বদল করতে নেচে ওঠে গ্যালারি।

মুশফিকুর রহিমের মনে কি তখন জিম্বাবুয়ে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডের স্মৃতি ভেসে উঠেছিল? যে ম্যাচে অসাধারণ সেঞ্চুরি করেও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। ২ বলে ৪ রান_ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাটেই অসম্ভব কোনো অঙ্ক নয়। তবু একটি ডট বল কিংবা মুশফিকের বিদায়ে হারারের সেই ম্যাচ ফিরে আসতে পারে মিরপুরে। সে ভাবনা পরের বলেই উধাও! রামপাল মুঠো থেকে বল ছাড়ার মুহূর্তে একটু শাফল করে অফস্টাম্পের ওপরে গিয়ে অন সাইডে খেলার জায়গা বানিয়ে নেন মুশফিক। পজিশন নিয়েই একটু ওপরে আসা বলে টোয়েন্টি টোয়েন্টির মানানসই স্লগ করেই দুই হাত ওপরে তুলে উল্লসিত বাংলাদেশ অধিনায়ক।

ব্যাটে-বলের আওয়াজেই বলের গন্তব্য সম্পর্কে মুশফিকের নিশ্চিত হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সে বলটা উড়ে গিয়ে পড়ে ভিআইপি গ্যালারিতে জয়ের আনন্দে উন্মাতাল দর্শকের ওপর। যে উৎসব চার বছর ২৮ দিন পর আবারও টোয়েন্টি টোয়েন্টি জয়ের। প্রতিপক্ষ সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যে দলের বিপক্ষে শেষবার এ ফরম্যাটে জিতেছিল বাংলাদেশ।

যে দলের কাছে ছয় মাস আগে এ মাঠেই ৫৮ রানে বিধ্বস্ত হয়েছিল প্রিয় দল। উৎসবের আবহটা অবশ্য তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররাই। একেবারে দর্জির দোকানে মাপ দিয়ে বানিয়ে আনা উইকেট। টসভাগ্যও সহায় মুশফিকের। উইকেট যতই চেনা থাক, অভিজ্ঞতায় মাইলখানেক এগিয়ে থাকা ক্যারিবীয় ইনিংসের দৈর্ঘ্য দেখে নেওয়াকেই যৌক্তিক মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

যদি নাগালের মধ্যে আটকে রাখা যায় প্রতিপক্ষকে। ম্যাচের প্রথম ওভারে সে রকম ইঙ্গিতই দেন আবদুর রাজ্জাক। রুবেল হোসেনের ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারটি (১৭ রান) বাদ দিলে নৈপুণ্যের পুরস্কার হিসেবে বোলারদের সম্মানে একটা 'ডিনার' দিয়েই দিতে পারেন মুশফিক। ধীরগতির উইকেটে বড্ড অসহায় মনে হয়েছে ক্যারিবীয়দের। একমাত্র ব্যতিক্রম প্রস্তুতি ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মারলন স্যামুয়েলস।

৪২ বলে ২ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় তাঁর ৫৮ রানই ক্যারিবীয় ইনিংসের প্রাণ। অফস্পিনে মাত্র ১৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে সেই স্যামুয়েলসই ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। অধিনায়ক মুশফিকের স্বপ্নযাত্রার দিনে মারলন স্যামুয়েলসের জন্য বরাদ্দ থাকছে বড়জোর সান্ত্বনা। ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও তাই উঠেছে ম্যাচ জেতানো মুশফিকুর রহিমের হাতে। ওপরে গিয়ে অন সাইডে খেলার জায়গা বানিয়ে নেন মুশফিক।

পজিশন নিয়েই একটু ওপরে আসা বলে টোয়েন্টি টোয়েন্টির মানানসই স্লগ করেই দুই হাত ওপরে তুলে উল্লসিত বাংলাদেশ অধিনায়ক। ব্যাটে-বলের আওয়াজেই বলের গন্তব্য সম্পর্কে মুশফিকের নিশ্চিত হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সে বলটা উড়ে গিয়ে পড়ে ভিআইপি গ্যালারিতে জয়ের আনন্দে উন্মাতাল দর্শকের ওপর। যে উৎসব চার বছর ২৮ দিন পর আবারও টোয়েন্টি টোয়েন্টি জয়ের। প্রতিপক্ষ সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

যে দলের বিপক্ষে শেষবার এ ফরম্যাটে জিতেছিল বাংলাদেশ। যে দলের কাছে ছয় মাস আগে এ মাঠেই ৫৮ রানে বিধ্বস্ত হয়েছিল প্রিয় দল। উৎসবের আবহটা অবশ্য তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররাই। একেবারে দর্জির দোকানে মাপ দিয়ে বানিয়ে আনা উইকেট। টসভাগ্যও সহায় মুশফিকের।

উইকেট যতই চেনা থাক, অভিজ্ঞতায় মাইলখানেক এগিয়ে থাকা ক্যারিবীয় ইনিংসের দৈর্ঘ্য দেখে নেওয়াকেই যৌক্তিক মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। যদি নাগালের মধ্যে আটকে রাখা যায় প্রতিপক্ষকে। ম্যাচের প্রথম ওভারে সে রকম ইঙ্গিতই দেন আবদুর রাজ্জাক। রুবেল হোসেনের ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারটি (১৭ রান) বাদ দিলে নৈপুণ্যের পুরস্কার হিসেবে বোলারদের সম্মানে একটা 'ডিনার' দিয়েই দিতে পারেন মুশফিক। ধীরগতির উইকেটে বড্ড অসহায় মনে হয়েছে ক্যারিবীয়দের।

একমাত্র ব্যতিক্রম প্রস্তুতি ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মারলন স্যামুয়েলস। ৪২ বলে ২ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় তাঁর ৫৮ রানই ক্যারিবীয় ইনিংসের প্রাণ। অফস্পিনে মাত্র ১৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে সেই স্যামুয়েলসই ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। অধিনায়ক মুশফিকের স্বপ্নযাত্রার দিনে মারলন স্যামুয়েলসের জন্য বরাদ্দ থাকছে বড়জোর সান্ত্বনা। ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও তাই উঠেছে ম্যাচ জেতানো মুশফিকুর রহিমের হাতে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.