এছাড়া নির্যাতনের পর বন্দিদের শরীর থেকে রক্ত নেয়ার এবং অনেক বন্দীকে হত্যার কথাও জানান প্রসিকিউশনের ষষ্ঠ সাক্ষী।
রোববার বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মোবারকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন প্রসিকিউশনের সাক্ষী আব্দুল মালেক।
বাহ্মণবাড়িয়ার খড়মপুর গ্রামের কৃষক মালেক জানান, মুক্তিযুদ্ধে শুরুর এক মাস পর প্রশিক্ষণ নিতে ভারতের আগরতলায় চলে যান তিনি। সেখান থেকে ফিরে আঞ্চলিক কমান্ডার আবুল বাসারের নির্দেশে ভারত থেকে প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। শরণার্থীদের ভারতে পৌঁছে দিতেন।
তার সঙ্গে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়া, খাদেম হোসেন ও নূর মিয়াও একই দায়িত্ব পালন করতেন বলে জানান তিনি।
১৯৭১ সালে আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী মালেক বলেন, ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের ২৮/২৯ তারিখে এইভাবে দায়িত্ব পালনের সময় আরো রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মোবারক তার বাড়িতে আসে। তারা তাকে ও পাশের বাড়ির সিরাজ মিয়াকে পিছমোড়া করে বেঁধে লঞ্চে তুলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় নিয়ে যায়।
“পরের দিন সকাল ৮/৯টার দিকে পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকার মোবারকসহ আমাকে গাড়িতে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রেখে মারপিট শুরু করে। ”
ওই কক্ষটিতে মানুষজনকে ধরে এনে নির্যাতন করা হতো বলে জানান তিনি।
মালেক বলেন, “আমাদেরকে ওই রুমের মধ্যে বিদ্যুতের তার দিয়ে পেঁচিয়ে মারতে থাকে। কতোক্ষণ পর্যন্ত মারে আমি জানি না, আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফেরার পরে দেখি আমি ও সিরাজ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলখানার ভেতরে আটক আছি। ”
তিন-চারদিন পরে তিনিসহ প্রায় ত্রিশজনকে গাড়িতে উঠিয়ে মেড্ডা টিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান তিনি।
সেখানে তাদের রক্ত পরীক্ষা শেষে তারসহ আটজনের রক্ত নেয়ার পর তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলখানায় নিয়ে যায় তারা।
অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে নিয়ে হত্যা করার বর্ণনা দেন তিনি।
তিনি বলেন, “দুই/তিনদিন পর সিরাজ মিয়াসহ ২০/২৫ জনকে একটি গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই গাড়িতে জায়গা না হওয়ায় আমাকে রেখে যায়। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি যে ওই ২০/২৫ জনকে কুল্লিয়ার খালে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ”
সাক্ষ্য দেয়া শেষ হলে আসামিপক্ষের আইনজীবী এএইচএম আহসানুল হক হেনা সাক্ষীকে জেরা করেন।
পরে জেরা অসমাপ্ত রেখে আগামী ১৬ জুলাই পরবর্তী দিন ঠিক করে আদালত মুলতবি ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।