আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজকন্যা, আখেরী খায়েশ ও একটি রাজ্যের গল্প

এক রাজ্যে ছিল এক রাজকন্যা। তার নাম ? তার নাম ...............। তার বাবা ছিলেন বি-শা-ল মাপের মানুষ, কিন্তু রাজকন্যা তার বাবার ভালো গুনসমুহের ধারে কাছেও নেই বরং বাবার প্রসঙ্গ টেনে ছোট্ট রাজ্যটির গরীবে-দুঃখী জনতাকে বারবার আবেগের ফাদে ফেলে তাদের সরলতাকে পুজি বানিয়ে ধোকা দিতে সে খুব ওস্তাদ। কখনও তসবীহ (জপমালা), কখনও মাথায় পট্টি বেধে , আবার কখনও ছলনার নোনা জলে সিক্ত হয়ে আর কখনও বা মিথ্যা আশার বাণী শুনিয়ে, রঙ্গিন স্বপ্ন দেখিয়ে পাবলিককে ধোকা দিয়েই যাচ্ছে। মিথ্যা কথা বলায় সে (রাজকন্যা) দারুন পটু।

একটা বইতে পড়েছিলাম আমাদের রাজকন্যা নাকি ২টি জিনিস খুব বেশি পছন্দ করেন ১) টাকা এবং ২) রক্ত। “নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গ” এই নাটকটি উনি খুব মসৃণ ভাবে মঞ্চায়ন করতে পারেন। তার আরও কিছু পছন্দের জিনিসের তালিকা হয়ত পুর্বে উল্লেখিত লেখক তার বইতে উল্লেখ করেননি,অথবা এগুলো তার নব্য জেগে উঠা বাসনাও হতে পারে কিংবা পুর্বে থাকলেও তা ছিল সুপ্ত। সংশ্লিষ্ট দেশ কিংবা সংস্থাকে তৈলমর্দন করে নামি-বেনামি ডিগ্রী অর্জনে উনার খুব খায়েশ। ইদানিং উনি আবার “শান্তির নতুন মডেল” ফেরি করে বেড়াচ্ছেন।

যার রাজ্যে শান্তি নেই, মানুষের পেটে ভাত নেই, ক্ষিধের যন্ত্রণা সইতে সন্তান সহ মায়ের আত্নাহুতি, স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে পিতার আত্নহত্যা। ক্ষিধের যন্ত্রনা সইতে না পেরে গর্ভধারীনি মায়ের সন্তান বিক্রী। হাসপাতালের বেডে শুয়ে নূন্যতম চিকিৎসা পাবার অধিকার নেই আমজনতার। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। শিক্ষাঙ্গন গুলোতে অরাজকতা।

আইন-শৃঙ্খলা বাহীনিকে পক্ষপাতদুষ্ট করে বিরোধী দলকে দমন পীড়ন। রাস্তায় দাবী আদায়ে মিছিল কারী সাধারন নাগরিকের বুকের উপর বুট সহ উটে পুলিশ বাহীনির নৃত্য উল্লাস, বিরোধী দলীয় নেতা কর্মীদের পিঠিয়ে গরুমরা করে রাস্তায় ফেলে রাখার মত দৃষ্টতা কোন স্বাধীন দেশে হয়েছে বলে আমার মনে হয়না, এটা কোন ধরনের বর্বরতা, পাশবিকতা। এটা পাঠকের কাছে প্রশ্ন রইল ? ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ নানা রকম নেশাদ্রব্যে দেশ সয়লাব আর আক্রান্ত যুব সমাজ। নাবালগ শিশু পর্যন্ত জড়িয়ে আছে চোরাচালানে। অহরহ পাচার হচ্ছে শিশু ও যুবতি।

সীমান্তে চলছে নীরব গণহত্যা, এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র ও সরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে দায়ীদের নিকট নূন্যতম প্রতিবাদ করার হিম্মত নেই। ছিনতাই, খুন, অপহরন, চাঁদাবাজি চলছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। রাস্তা-ঘাটে প্রতিদিন দূর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। যানজটে অতিষ্ট নগরবাসী। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে বাজারে আগুন, যার আগুনে প্রতিনিয়ত পুড়ে ছাই হচ্ছে সীমিত আয়ের পিতার হৃদয় যা সন্তানের আবদারে টইটম্বুর।

এত কিছুর পরেও আমাদের রাজকন্যার পদলেহনকারী (দেশী-বিদেশী নাগরিকসহ) একঝাক ইতর প্রাণী মিডিয়ার সামনে আসলে নির্ল্লজ্জ সহাস্য বদনে উপস্থিত হয়ে কেউ বলেন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খু-----ব ভালো , কেউ বলেন কম খান, কেউ বলেন বাজারে কম যান, কেউ বলেন দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে, কেউ বলেন যোগাযোগ ব্যাবস্থা খুব ভালো (যার কারনে ১৬ টি জেলায় একসাথে যোগাযোগ বন্ধ থাকে ), কেউ বলেন মিছিল কারীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিতে, জনসংখ্যা বিষয়ক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে কেউ বলেন সন্তান বেশী হওয়া ভালো কারন উনি উনার বাবা-মায়ের নবম সন্তান। মিডিয়ায় এসব নারকীয় কীটগুলোর বক্তব্য শুনে মাঝে মাঝে মনে হয় এইসব পদলেহনকারী গুলো কোন পাগলা গারদ পালিয়ে আসেনি তো ? আবার কেন জানি মনে হয় আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিকে শেষ করে দেয়ার জন্য এগুলো বাইরের কোন দেশের ষড়যন্ত্র নয়তো ? যার রাজ্যের চিত্র এই রকম সেই রাজকণ্যা আবার বড় বড় বৈঠকে শান্তির মডেল ফেরি করে বেড়াচ্ছেন, একথা শুনে হাসতে হাসতে মূর্ছা যাওয়ার অবস্থা। পাঠক একটি গল্প বলি, দয়া করে বিরক্ত হবেন না। আমি একটু পরেই লেখার ইতি টানব। আমাদের এলাকায় এক মস্তিস্ক বিকৃত লোক আছে।

যার নাম খোকন। সবাই বলত খোকন পাগলা। সবসময় বাজারে থাকত। বাজারের ব্যবসায়ীরা থাকে দিয়ে কুলির কাজ করাত। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা কোন ঋতুতে তার শরীরে একটি লুঙ্গি (তাও আবার উল্টা করে গিট দেয়া) ছাড়া অন্য কোন বস্ত্র কোনদিন কেঊ দেখেনি।

মানুষের কাছে ১ টাকা চাইত বিড়ি খাওয়ার জন্য। অন্য কোন খাদ্য দ্রব্য দিলে সে নিতনা খুব একটা, যেন শুধু বিড়ি খাওয়ার জন্য তার পৃথিবীতে আসা। যারা তার সম্পর্কে জানত প্রায় তারা সবাই তার সংগে একটা কমন মজা করত তা হল- তাকে যদি বলা হত যে “খোকন আমাদের ঘরে মেহমান আসবে অথবা ঘরে দাওয়াত আছে” তখন সে বলত- আমার নামে ২বস্তা চাল , মুরগি,গরুর মাংস নিয়ে যাও। সবাইকে আনন্দ দেয়ার জন্য খোকন ছিল মাধ্যম। পাঠক, রাজ্যের যে চিত্র উপরে তুলে ধরলাম তা শতভাগ সত্য।

যে রাজ্যের এমন দূরাবস্তা সে রাজ্যের রাজকণ্যা কোন যুক্তিতে অন্য দেশে গিয়ে শান্তির মডেল উপস্থাপন করে তা আমার বোধগম্য নয়। মডেলটা আমার রাজ্যে সফল করতে পারলে তার পর অন্য দেশের জন্য উপস্থাপন করলে বরং রাজকণ্যা শতভাগ সুস্থতার পরিচয় দিত। খোকন পাগলাতো মস্তিস্ক বিকৃত মানুষ কিন্তু আমাদের রাজকন্যার তো অনেক অনেক ডিগ্রী তিনি কেন খোকন পাগলার মত হাসির খোরাক হচ্ছেন? নাকি উনার অগোচরে, উনাকে পরিবেষ্টিত পদলেহনকারী উপদেষ্টারা বহির্বিশ্বের কারও এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য উনাকে বিশ্বনন্দিত (নিন্দিত) দের নিকট পাগল বলে সাব্যস্থ করতে চাচ্ছেন। আসলে উনি সর্বোচ্ছ একটি পুরস্কারের আশায় প্রায় পাগল হয়ে গেছেন বা কেউ হাওয়া দিয়ে পাগল বানিয়ে দিয়েছেন। রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট, প্রজা কষ্ট পায়।

সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কিংবা দেশের প্রতি আমাদের রাজ্যের ১৪ কোটি!(রাজকন্যার গণণা কারী দের হিসাব মতে) আপামর জনতার পক্ষ হতে অনুরোধ আমাদের রাজকণ্যার আখেরী খায়েশ পুরা করার জন্য একটি নোবেল প্রাইজ দেন , প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ। প্রয়োজনে উনি দেশের সব সম্পদ দিতে রাজী। নইলে ১৪ কোটি! জনতাকে উনার বিষাক্ত থাবা হতে কেউ বাঁচাতে পারবেনা। উনার অত্যাচারে পৃথিবী হতে হারিয়ে যাবে একটি সবুজ, শ্যামল একটি রাজ্য। (বানান ভুল হলে এবং কারো চরিত্রের সাথে মিলে গেলে ক্ষমাপ্রার্থী) লেখাঃ মু... ই...মা (রো) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।