চমৎকার কোন এক বিকালে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম নির্জন এক সমুদ্রপাড়ে। আমার চারপাশে কেবলিই স্রোত আর বাতাস। আমার হাতে একতোড়া সতেজ সুগন্ধি ফুল। সম্ভবত অপেক্ষা করছি কারও জন্য। তবে সেটা কে এই মূহুর্তে তা মনে পরছে না ।
হঠাৎ করেই কা কা কা শব্দে সামুদ্রিক নির্জনতা ভেঙ্গে গেল আমার।
দেখতে পেলাম, একটি দুধর্ষ কাউয়া গ্রুপ উড়ে উড়ে আমার দিকেই আসছে। আমার কোন আমলের পাপকর্মের সাজা দিতে কে ওদেরকে পাঠিয়েছে, বুঝতে না পারলেও এটা বুঝতে পারলাম এখন এই মূহুর্তে ঠিকমত দৌড় দিতে না পারলে সর্বনাশ হয়ে যাবে!
অতএব ছুট লাগালাম, পেছনে পেছনে দেখি কাউয়া বাহিনীও দৌড় মেরে উড়ে আসছে। এই সময় সামনে দেখতে পেলাম একটা চকচকে পঙ্খিরাজ ঘোড়া নির্বিকার মুখে ঘাস চিবুচ্ছে। আমি তাড়াহুড়ো করে গিয়ে লাফ বসে পড়লাম ডানাওয়ালা ঘোড়ার পিঠে।
তখনও ঘোড়াটার কোন পাত্তা নেই। এক হাত দিয়ে ঘোড়াটার মুখ ঘুড়িয়ে উড়ন্ত কাউয়াদের দেখিয়ে দেয়া মাত্র ঘোড়া মিয়া যা বোঝার বুঝে নিয়ে ডানা ঝাপটে উড়াল দিল সমুদ্রের দিকে। কিছুদূর উড়ে যাওয়ার পর ক্লান্ত হয়ে কাকেরা পিছু নেয়া বাদ দিয়ে চলে গেল।
এদিকে সমুদ্রের মাঝখানে আমার চোখে পড়লো চমৎকার এক দ্বীপ। দ্বীপের মাঝখানে এক বিশাল রাজপ্রাসাদ।
জমিদারের প্রাসাদও হতে পারে, বলা যায় না। পঙ্খিরাজকে বুঝিয়ে শুনিয়ে নেমে পড়লাম সেই প্রাসাদের ছাদে। ছাদে নামতেই দেখতে পেলোম এক অপূর্ব সুন্দরী রাজকন্যা সেখানে দাড়িয়ে আছে। রাজার প্রাসাদ হলে রাজকন্যা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
সে আমাকে দেখেই বিষন্ন কন্ঠে বললো, আমি সেই কখন থেকে তোমার প্রতীক্ষায়।
আর এই বুঝি তোমার আসার সময় হলো? আমি রাজকন্যার কথা শুনে একটু লাজুক হাসি হাসলাম। যেন দেরি হবার জন্য ভীষণ লজ্জা পাচ্ছি-এমন একটা ভাব ধরে বসলাম।
রাজকন্যা সেটা খুব একটা পাত্তা না দিয়ে বললো, ‘যাও তাড়াতাড়ি যাও। ঘরটা ভীষণ নোংরা হয়ে আছে। রাজকুমার ঘর ময়লা দেখলে মন খারাপ করতে পারে।
এতদিন পর ও আমার সাথে দেখা করতে আসছে। আজ যেন এতটুকু ময়লাও কোথাও না থাকে। ’
আমি হচকিত হয়ে তাকিয়ে দেখলাম, এতণ যেটাকে সজীব ফুলের তোড়া ভেবে হাতছাড়া করিনি সেটা আসলে একটা শলার ঝাড়ু ছাড়া আর কিছুই নয়!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।