আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁঠাল পাতার হাট

আমি একজন সাধারণ ব্লগার কাঁঠাল পাতার হাট, শুনতেই কেমন খটকা লাগছে। শুনতে যেমনই লাগুক এটাই সত্যি। ছাগলের 'প্রিয়' খাবার কাঁঠাল পাতা নিয়ে প্রতিদিন রীতিমতো বাজার বসছে দিনাজপুর শহরে। আর এই বাজারের বিক্রেতাদের অধিকাংশই নারী। শুধু কাঁঠাল পাতা বিক্রি করে জীবকা নির্বাহ করছে অনেক নারী।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে শহরের বাহাদুর বাজার টিএন্ডটি সড়কে গিয়ে দেখা যায়, বেশ সরগরম এই 'কাঁঠাল পাতার হাট'। সড়কের দুপাশে পাতা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। এদিক ওদিক থেকে শোনা গেল নারী কণ্ঠের আহ্বান- 'পাতা লাগে পাতা'... 'নেন ভাই পাতা নেন, দাম কম'। বাজার ঘুরে দেখা যায়, 'কাঁঠাল পাতার আঁটি' বিক্রি হচ্ছে পাঁচ টাকা ও দশ টাকায়। তবে পাঁচ টাকার আঁটির চাহিদাই বেশি বলে বিক্রেতারা জানালেন।

শহরের কাঞ্চন কলোনির বাসিন্দা ও বিক্রেতা রাশেদা (৩৮) জানান, দেখতে ভালো হলে ক্রেতারা একটু বেশি দিতে আপত্তি করেন না। তাই অনেকেই ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে হাটে আনেন কাঁঠাল পাতা। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি এই বিকিকিনি চলে বলে জানালেন তিনি। আরেক পাতা বিক্রেতা পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার হাড়িভাসা গ্রামের মোহসিনা (৫২) জানান, এসব পাতা তারা গ্রাম থেকে কিনে আনেন। মূলত কেনা হয় কাঁঠাল গাছের ডাল।

তারপর ডাল থেকে পাতাগুলো আলাদা করে নিয়ে আসা হয় এই বাজারে। আর ডাল থেকে যায় জ্বালানি হিসেবে। ফলে পাতা-ডাল দুটোই বিক্রি করা যায়। বিক্রেতারা অধিকাংশই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কাঁঠাল পাতা সংগ্রহ করে বাজারে আনেন। তবে মোহসিনা নিজে পাতা আনেন পঞ্চগড় থেকে।

রাতের ট্রেনে দিনাজপুর চলে আসেন। স্টেশানে একটু বিশ্রাম নিয়ে সকালে বসেন হাটে। আসা-যাওয়া আর খাবার খরচ বাদ দিলে প্রতিদিন তার গড়ে দেড় থেকে দুইশ টাকা থাকে। "সব ব্যবসারই মৌসুম থাকে। কাঁঠাল পাতার মৌসুম হলো কোরবানীর ঈদ।

ওই সময় পাতার চাহিদা থাকে বেশি, ফলে উপার্জনও হয় ভাল", যোগ করেন মোহসিনা। পাতা বিক্রেতা ও বোচাগঞ্জ উপজেলার সাতইল গ্রামের করিমন বেওয়া (৫০) জানান, ১৬/১৭ জন নারী প্রতিদিনই এই হাটে কাঁঠাল পাতা নিয়ে বসেন। বছর বিশেক ধরেই চলছে এ ব্যবসা। শহর ও আশপাশ থেকে গড়ে প্রতিদিন প্রায় শ'চারেক ক্রেতা এসে পোষা ছাগলের জন্য পাতা কিনে নিয়ে যান। তিনি জানান, বছরের একটা সময় কাঁঠাল গাছের মালিকরা ডাল ছাঁটাই করেন।

পাতা বিক্রেতারা সেটা কিনে নেন। আটশ' টাকা দিয়ে একটি গাছের ডাল কিনলে মোটামুটি তিনশ' থেকে সাড়ে তিনশ' টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে। পাতা কিনতে আসা শহরের রামনগর এলাকার মোখলেস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "শহরে ছাগলের খাওয়ার জন্য কোথাও কোনো ঘাস কিংবা পাতা পাওয়া যায় না। এই বাজার থাকায় কিছুটা সুবিধা হয়েছে। "  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.