আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁঠাল

Shams

বিকালে বন্ধুদের সাথে বাজারে ঘুরতে-ঘুরতে বড়-বড় কাঁঠাল দেখে কৃপন বাবুর খুব কাঁঠাল খেতে ইচ্ছা করে। কিন্তু নিজে না কিনে তার বন্ধুদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে চাইলো। সে জন্য সে মনে-মনে একটা বুদ্ধি আটলো। বন্ধুদের কাঁঠাল খাওয়ার কথা বলে। সবাই রাজি হলে মস্ত বড় একটা পাঁকা কাঁঠাল কিনে।

খাওয়ার ঠিক আগে বাবু বলে- ‘সবাই তো আর সমান কাঁঠাল খেতে পারবে না। কেও বেশী খাবে, কেও কম খাবে। কিন্তু সবাইকে সমান টাকা দিতে হবে-এটা তো ঠিক না। সব চেয়ে ভালো হবে যে যতটুকু খাবে ততটুকুর টাকা দিবে। ’ সবাই বাবুর কথায় একমত হয় : কিন্তু খাবার সময় কে হিসাব রাখবে কে ক’টা কাঁঠালকোয়া খেলো।

বাবু এটার সমাধান দেয় বলে- ‘ কাঁঠালকোয়া খাওয়ার পরে যে যার কাঁঠালের বিচিগুলো আলাদা করে রাখবে তার পর সেগুলো গুনে হিসাব করে যার ভাগে যত টাকা হবে সে তত টাকা দিবে। ’ সবাই শুনে খুব খুশি হয় এ জন্য যে কৃপন বাবু’র পরের পয়সায় বেশী খাবার অভ্যাস আছে। কাঁঠাল খাওয় শুরু হলে বাবু তার পরিকল্পনা মাফিক বেশী ভাগ কাঁঠালকোয়া বিঁচি সহ খেয়ে নিলো। ফলে খাওয়া শেষে বাবুর কাঁঠালের বিচি কম হয়। তাই, বিচি গুনে হিসাবে তাকে সব চেয়ে কম টাকা দিতে হলো।

রাত হলে যে যার বাড়ীর পথ ধরে। কম টাকা দিয়ে অনেক বেশী কাঁঠাল খেতে পাবার আনন্দ নিয়ে বাবু শিস বাজাতে-বাজাতে বাড়ী’র দিকে রওনা দেয়। কিন্তু পথে প্রকৃতি’র প্রচন্ড ডাকে আর সাড়া না দিয়ে থাকতে পারে না। দৈড়ে বাড়ী পর্যন্ত পৌছতে পারলেও ভেতরে ঢুকার সময় থাকে না; তাই তাদের বাগানের বড় আম গাছটার নিচে প্রকৃতিক কর্মটি সেরে নেয়। এমন সময় প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হলে আর দেরি না করে বাড়ীর ভেতরে ঢুকে যায়।

সকালে বাবুর বৌ তাকে বলে বাজার যেতে বলে, কিন্তু বাবু প্রচন্ড অনিহা বাজার করতে। সে বৌকে একটু এদিক ওদিক করে চালিয়ে নিতে বলে কাজে চলে যায়। রাতে বাড়ী ফিরে খেতে বসে বুড় বাবু দেখে বৌ কিসের যেন ভর্তা করেছে। ভর্তাটা মুখে দিতেই স্বাদটা জিহ্বায় ধরে যায়। অন্য দিনের চেয়ে একটু বেশী ভাত খেয়ে নেয়- সচারাচ বাবু নিজের বাড়ীতে বেশী ভাত খায়না, আজ খেলো।

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বুড় বাবু বৌকে জিঙ্গে করে কিসের ভর্তা দিয়ে ভাত খোলো্ বৌ বলে, ‘কাঁঠলের বিচি’র‌’ বাবু আবাক হয়ে যায় কারণ সে তো এই মৌসুমে কাঁঠাল-ই কিনেনি; তা হলে কি কেও বাড়ীতে কাঁঠাল দিয়ে গেছিলো আর বৌ সেগুলো তাকে না দিয়ে একা একা খেয়ে নিয়েছে! বৌকে জিঙ্গেস করে-‘কে কাঁঠাল দিয়ে গেছে?’ বাবুর বৌ বাবুর মনের অবস্থা আচ করতে পেরে বলে- না, না কেও কাঁঠাল দিয়ে যায়নি। কচুর শাক তুলতে গিয়ে দেখি বাগানে বিচিগুলো পড়ে ছিলো। ’ ‘বাবু হকচকিয়ে যায়-‘বাগনে কোথায় পড়ে ছিলো?’ ‘বড় আম গাছটার নিচে। ’ কথাটা যে বাজ হয়ে বাবু’র মাথা পড়ে। ওয়াক-ওয়ক করে বমি করতে থাকে।

বৌ বুঝতে পারে না গত রাতের বৃষ্টিতে প্রকৃতিক কর্মটির সব ধুয়ে গেলেও বাবুর গিলে নেওয়া কাঁঠালের বিচিগুলো সেখানে পড়ে থেকে যায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.