হট নিউজ
এই আচরণ কি কোন সভ্যদেশের পুলিশের কাজ হতে পারে। পুলিশ হল জনগনের বন্ধু। আর এই বন্ধুর আচরণ যদি এরকম হয়, জনগনের অবস্থা কি তা আর বলার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের পুলিশের উপর বিশ্ববাসীর ধিক্কার। এরা পুলিশ নয়, এরা জানোয়ার।
বাংলাদেশ সরকারের পেটুয়া বাহিনী হিসেবে পুলিশ নিজেদের কাজ করে। কিন্তু এত নিষ্টুরতা দেখা যায়নি, এভাবে ঠান্ডা মাথায় বিরোধীদলের কর্মীর বুকের উপর বুটের চাপা। এই চাপা শুধু বাংলাদেশের একজন মানুষের বুকের নয়, দেশের ষোল্ল কোটি মানুষের বুকের উপর চাপা।
এই দৃশ্যশি প্রায় সকল জাতীয় পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। দৃশ্যটি শুধু দেশীয় মিডিয়ায় নয়; বিশ্বব্যাপী ঝড় তুলেছে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েছে সেই নির্মম চিত্র। ফেসবুকে শত শত ইউজার ছবিটি আপলোড করেছেন। সহস্র মন্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে মানুষের ক্ষোভ। সবাই স্তম্ভিত। আলোচনা, সমালোচনা আর পর্যালোচনা চলছে সবখানে।
এ দৃশ্য অবলোকন করে বিবেকবান সমাজ মর্মাহত। আপামর জনতা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। পুলিশ প্রশাসনের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় বইছে। কিন্তু আওয়ামিলীগের কোন নেতা-কর্মীর বুকে একটুও ঝড় তুলেছে বলে পত্র-পত্রিকায় বা মিডিয়ায় কোন খবর পাওয়া যায়নি। মনে হয় তারা বাহবা ই দিয়েছেন।
দৃশ্যটি মতিঝিল এলাকার। হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি অগ্রসর হলে পুলিশের মুখোমুখি হয়। কিছু পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। হরতাল সমর্থকরা দৌঁড়ে পালায়।
কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান একজন হরতাল সমর্থক। সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত সেই ব্যক্তি বিপাকে পড়েন। শুরু হয় পুলিশী অ্যাকশন। মতিঝিল এলাকার পেট্রোল ইন্সপেক্টর হাজ্জাজ ঐ ব্যক্তির ওপর চড়াও হন। আঘাতের পর আঘাত করতে থাকেন।
তার আঘাতে হরতাল সমর্থক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঠিক তখনই সেই অবতারণা। ইন্সপেক্টর হাজ্জাজ এক পা দিয়ে সেই ব্যক্তির বুকের ওপর চাপ দেন। অসহায় হরতাল সমর্থকের আশ্রয় তখন বুটের নিচে। দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দী করেন অসংখ্য ফটো সাংবাদিক।
ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ভেসে ওঠে সেই করুণ দৃশ্য।
সাধারণ মানুষের কন্ঠ আজ স্তব্ধ। বাক স্বাধীনতা থাকলেও প্রকাশ্যে কথা বলতে সবাই ভয় পান। প্রতিবাদের ভাষা যেন নীরবে নিভৃতে কাঁদছে। যারা সাহস করে একটু প্রতিবাদ করেন, তারা অনেক সমস্যায় পড়ছেন।
যারা সমালোচনা করতে উদ্ধত হচ্ছেন, তারা অজানা শঙ্কায় প্রহর গুণছেন।
হরতাল নিয়ে মতানৈক্য আছে, বিতর্ক থাকাটা স্বাভাবিক। কেউ বলছেন, হরতাল জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করে। কেউ বলছেন, হরতাল চাইনা, বিকল্প আন্দোলন অনুসন্ধান করুন। আবার কেউ বলছেন, পরিস্থিতি হরতালে বাধ্য করছে।
কেউ মনে করেন, স্থায়ী দুর্ভোগ দূরীকরণে হরতাল অপরিহার্য। সরকারি দল হরতালের চরম বিরোধী।
যদিও চারদলীয় ঐক্যজোট সরকারের আমলে তেত্রিশ মাসে তারা তেত্রিশ দিন হরতাল করেছিলেন। যেখানে তেত্রিশ মাসে বর্তমান বিরোধী দল মাত্র আটটি হরতাল করেছে। বর্তমান বিরোধীদলের নেতারা মনে করেন, হরতালের বিকল্প নেই।
তারা বলছেন, সার্বিক দিক বিবেচনায় সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। তারা বলছেন, সরকারের জুলুম নির্যাতন মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। মানববন্ধনের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও সরকার বাধা দিচ্ছে। সরকার পল্টন কিংবা মুক্তাঙ্গন ব্যবহার করতে দিচ্ছেনা।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার সহনশীল আচরণ করবে।
অন্যদিকে বিরোধী দল হরতাল আহবান করার সাথে সাথে সরকারি দল সমাবেশ করে হরতাল প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেন। হরতালে রাজধানীসহ প্রায় সারাদেশ ছিল পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের দখলে। সরকারি দলের প্রতিহত করার হুঙ্কার দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।