না পাওয়ার হাত ধরে.. হেটে এসেছি বহু দুরে... চাইনা আর কিছুই জীবনের কাছে... সাদা-কালো এই জন্জালের ভীড়ে...
বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা ইনভেস্টিগেশন ক্যাটাগরিতে “Excellence in Performance Award” অর্জন করেছেন।
ছবি: আল-বেলী আফিফা , বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
আল-বেলী আফিফাই প্রথম বাংলাদেশি নারী পুলিশ অফিসার যিনি ইনভেস্টিগেশন ক্যাটাগরিতে এশীয় অঞ্চলে এই সম্মানজনক পুরস্কারটি পেয়েছেন।
গত ২২ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান শহরের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত “ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ উইমেন্স পুলিশ”-এর ৫১তম বার্ষিক সম্মেলনে পুরস্কারটি প্রদান হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আফিফাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশ্বের মোট ৪৭টি দেশ থেকে প্রায় ১৩শ জন ডেলিগেট অংশগ্রহণ করেন।
আল-বেলী আফিফা এর আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ, রিজার্ভ অফিস, ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
জাতিসংঘ শান্তি মিশনে সেনাবাহিনীর পরই পুলিশ --
বাংলাদেশ পুলিশ সেনাবাহিনীর পরের বছরই ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে যোগ দেয়। গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত ইউএন পুলিশ ম্যাগাজিনের দশম সংখ্যার তথ্য অনুযায়ী শান্তি মিশনে বাংলাদেশের পুলিশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের এক হাজার ৮২৫ জন পুলিশ সদস্য শান্তি মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। এক হাজার ৮৬৪ জন সদস্য নিয়ে প্রথম অবস্থানে ছিল জর্ডান।
এক হাজার ২৪ জন পুলিশ নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ভারত। এর আগের বছর জানুয়ারির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ছিল শীর্ষে। ওই সময় বাংলাদেশের মোট দুই হাজার ৮৩ জন পুলিশ সদস্য শান্তি রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন। এক হাজার ৯২৭ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল জর্দান এবং ভারত ছিল এক হাজার ১০ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে। পুলিশের নারী ইউনিটের ক্ষেত্রেও প্রথম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
বর্তমানে বাংলাদেশের ১৯৬ জন নারী পুলিশ সদস্য শান্তি মিশনে কর্মরত আছেন। ১৩৮ জন পাঠিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রুয়ান্ডা এবং ১১৪ জন পাঠিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বর্তমানে ১১৬টি দেশের ৯২ হাজার ৪০৭ জন শান্তিরক্ষী বিভিন্ন বিরোধপূর্ণ দেশে নিয়োজিত রয়েছেন। শান্তিমিশনে অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব প্রদান এবং দায়িত্বের অতিরিক্ত সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে বাংলাদেশি সদস্যরা ১১৬টি দেশের মধ্যে ঈর্ষণীয় অবস্থানে রয়েছেন।
সার্জেন্ট ইউসুফের সাহসিকতা:
আরও একবার বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতা দেখালেন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট ইউসুফ আলী চৌধুরী।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে ছিনতাইকালে বিপু নামে এক দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারীকে দাবড়ে ধরেন তিনি। উদ্ধার করে দেন এক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার হাত থেকে ছিনতাই হওয়া দামি মুঠোফোন সেট। পরে তাকে থানায় সোপর্দ করেন তিনি। এ ঘটনার পর ওই দিন মতিঝিলে সার্জেন্ট ইউসুফকে ঘিরে উৎসুক জনতা ভিড় করেন। তারা ওই সময় মন্তব্য করেন, কী পুলিশ, কী সাধারণ মানুষ, বর্তমান সময়ে কেউই ঝুঁকি নিয়ে ছিনতাইকারীদের ধরতে যায় না।
সেখানে সার্জেন্ট ইউসুফের এই কৃতিত্ব কর্মনিষ্ঠা ও সাহসিকতারই প্রতিফলন।
চিত্র : সার্জেন্ট ইউসুফ
তিনি মঙ্গলবার মতিঝিলে ডিউটিতে ছিলেন। ওই দিন দুপুরে সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সামনে দাঁড়ানো উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন খানের কাছ থেকে নারায়ণগঞ্জ বন্দর এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী বিপু দামি একটি মুঠোফোন সেট ছিনতাই করে। সাখাওয়াত চিৎকার দিতে থাকলে বিপু দৌড়ে পালাতে থাকে। এ সময় ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে সার্জেন্ট ইউসুফ ছিনতাইকারী বিপুর পেছন পেছন দৌড়াতে থাকেন।
একপর্যায়ে বিপুকে মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে গিয়ে ধরে ফেলেন তিনি। তার কাছ থেকে মুঠোফোনটি উদ্ধার করে তা সাখাওয়াতকে ফিরিয়ে দেন। এরপর মতিঝিল থানায় বিপুকে সোপর্দ করেন। সেখানে সাখাওয়াত বাদী হয়ে একটি মামলাও করেন। এ ছাড়া একই দিন সন্ধ্যায় মতিঝিলেই হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালানোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকালে একটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করেন সার্জেন্ট ইউসুফ।
এ ঘটনায়ও তিনি মতিঝিল থানায় মামলা করেছেন। ট্রাফিক পুলিশের একাধিক সূত্র জানান, গত বছর মৌচাক মার্কেটের সামনে থেকে ছিনতাইকৃত স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারে সার্জেন্ট ইউসুফ একইভাবে সাহসিকতার পরিচয় দেন। এরপর স্বর্ণ উদ্ধারসহ তিন ছিনতাইকারীকে ধরে থানায় হস্তান্তর করেন তিনি। ওই ঘটনায় সার্জেন্ট ইউসুফকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল।
সবশেষে আমেরিকার কৌতুহল আমাদের পুলিশ বিভাগের উপর :
মাত্র ১ লাখ ৪১ হাজার পুলিশ দিয়ে ১৬ কোটি মানুষের নিরাপত্তা বিধান কীভাবে সম্ভব হচ্ছে- এ ভাবনা থেকেই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এ কে এম শহিদুল হককে নিউজার্সির পুলিশ বিশেষ সম্মান প্রদান করেছে।
একইভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও বাংলাদেশ পুলিশের অবিস্মরণীয় ভূমিকার কথাও আলোচনায় আসছে নিউইয়র্ক অঞ্চলে মার্কিন প্রশাসনে। মাত্র ৩ দিনের এক ঝটিকা সফরে নিউইয়র্কে এসেছিলেন এআইজি শহিদুল হক। এ স্বল্প সময়েই তিনি মার্কিন পুলিশ বাহিনীর হৃদয় জয় করেছেন।
চিত্র : বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এ কে এম শহিদুল হক
শত প্রতিবন্ধকতা সত্বেও বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সদা তৎপর একটি বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে নিউজার্সির পুলিশের পক্ষ থেকে শহিদুল হককে লাল গালিচা সংবর্ধনার পাশাপাশি কম্যুনিটির সর্বস্তরের মানুষের সামনে তাকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এ সময় নিউজার্সি পুলিশের অধিকর্তারা উল্লেখ করেন, বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।
মানুষের মাথাপিছু আয়ও অনেক কম। অভাবগ্রস্থ মানুষের হানাহানিতে লিপ্ত থাকার কথা। কিন্তু সেটি হচ্ছে না পুলিশের তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের মত উন্নত দেশে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত পুলিশ বাহিনী দায়িত্ব পালন সত্বেও দৈনিক যে হারে খুন-ছিনতাই-অপরাধ ঘটছে, সে তুলনায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনেক ভাল। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা এ সময় আরো উল্লেখ করেন, তৃতীয় বিশ্বের আরো অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সুনাম বেশী এবং এর পরিধি বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করেছে।
বাংলাদেশের মহিলা পুলিশ অফিসাররাও আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুনাম অর্জন করে চলেছেন। নিউইয়র্ক সিটির কাছে নিউজার্সির ওয়েস্ট নিউইয়র্ক সিটি অফিস প্রাঙ্গনে মার্চের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শহিদুল হককে বর্ণাঢ্য আয়োজনে এ সংবর্ধনা প্রদানের সময় মূলত: বাংলাদেশের প্রতি আমেরিকানদের সকৃতজ্ঞ শ্রদ্ধার বহি:প্রকাশ ঘটে।
বিপুলভাবে অভ্যর্থনা জ্ঞাপনের ওই অনুষ্ঠানে ওয়েস্ট নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের ডাইরেক্টর মাইকেল এ্যাংরি ও মেয়র ফ্যালিক্স এ. রকি কম্যুনিটি পুলিশিং ও জনগণের সাথে পুলিশের সেতু বন্ধনের জন্য শহিদুল হককে ক্রেস্ট প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সিটি মেয়র ফ্যালিক্স এ. রকি শুভেচ্ছা বক্তব্যে সন্ত্রাস দমন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা ও শহিদুল হকের বর্ণাঢ্য কর্ম জীবনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সিটি মেয়র বাংলাদেশের পুলিশের কর্মকান্ড পরিচালনায় বিভিন্নভাবে সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে আমরা সব সময় কাজ করতে আগ্রহী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কোন অঙ্গরাজ্য অথবা সিটি প্রশাসনের বাংলাদেশ পুলিশের উর্ধতন কোন কর্মকর্তাকে এভাবে অভ্যর্থনা প্রদানের ঘটনা এটিই প্রথম।
ফলে বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসীদের মধ্যেও সাড়া জাগিয়েছে। শহিদুল হক যতক্ষণ নিউজার্সি এবং নিউইয়র্কে অবস্থান করেছেন- এ সময় যাদের সাথে মিশেছেন তারা সবাই অভিভূত।
শহিদুল হক বাংলাদেশ সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিউজার্সির মেয়র ও পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং তাদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শহিদুল হক তার বক্তব্যে সন্ত্রাস দমন, জঙ্গিবাদ নির্মূল থেকে শুরু করে দেশ ও বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। নিউইয়র্ক সিটি থেকে শহিদুল হককে ওয়েস্ট নিউইয়র্ক সিটিতে নেয়ার সময় পুরো রাস্তায় ছিল নিরাপত্তা কর্ডন এবং আগে ও পেছনে ছিল পুলিশের স্কট।
সিটি হলে পৌঁছার পর স্কুল ছাত্রদের একটি দল যন্ত্র সংগীতের মাধ্যমে অতিথিকে অভ্যর্থনা জানায়। এ সময় সেখানে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার নূরনবী, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী,ওয়েস্ট নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরীর ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসরিন আলম (রিতা), শামীম চৌধুরী প্রমুখ।
এ সময় বাংলাদেশিদের বক্তব্য ছিল- বাংলাদেশ পুলিশকে সম্মান জানানোর অর্থ হচ্ছে বাংলাদেশের আপাময় জনতার প্রতি সম্মান জানানো। একইভাবে প্রবাসীরাও এ সম্মানের অংশীদার।
তথ্যসূত্র : গুগল
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।