আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘গন্তব্য- জাহান্নাম’

দল মত ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে আমরা আত্মসুদ্ধির মাধ্যমে প্রো-একটিভ সৎ সহনশীল উদার সমমর্মী সৃজনশীল কর্মঠ সময়ানুবর্তী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রয়োগে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তরিত হবো। দেশকে ভলোবাসবো। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দশ জাতির অন্তর্ভূক্ত হবো। সেদিন ভার্সিটিতে পড়ে এক ছেলের কথা শুনছিলাম: ঢাকায় একা থাকে। বাবা যে হাতখরচ পাঠান তার থেকে খুব বেশি বাঁচেনা বলে দুইটা টিউশনি করে।

এরপরও নাকি বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করতে হয়। কেন? কারণ তার ফোনের পেছনে মাসে খরচ হয় ২০০০ টাকা! আরও অবাক হলাম তার পরের কথাগুলো শুনে। সে বই-খাতা কিনছেনা টাকার অভাবে, কিন্তু মোবাইল-ইন্টারনেটে আগের মতই খরচ করছে! যখন বললাম এইসব ‘অলস কাজকারবার’ বাদ দিতে- একেবারে আকাশ থেকে পড়লো যেন, বললো, ‘আমি অলস!’ আসলেই তো সে কি অলস? সবাই ভাবি বিছানায় শুয়ে ‘কিছু না করাই’ বোধহয় আলস্য। কিন্তু এই যে অকাজে সময় নষ্ট করা, সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত হিন্দি সিরিয়াল দেখা, ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুকিং-ফোনে ‘আজাইরা প্যাঁচাল –এগুলো কি আলস্য নয়? ক্ষণিকের ভালোলাগায় গা ভাসিয়ে দেয়াটা কি দীর্ঘসূত্রিতা নয়? গান আছে না, দুনিয়াটা মস্ত বড়, খাও দাও ফূর্তি করো। আমরা মনে করি, পৃথিবীতে মানুষের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে কত আরাম আয়েশ করা যায়।

কিন্তু এটা বুঝিনা যে ভবিষ্যতের আরামের জন্য বর্তমানে কষ্ট করতে হয়। ছোট মাছটাই যদি ধরে বসে থাকি তো বড় মাছ তো চোখের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যাবেই! ঐ যে ইংরেজিতে বলে না, ‘ডেস্টিনেশন হেল’- আলস্যের গন্তব্য জাহান্নাম, তা তো আর এমনি এমনি না। সব ধরণের দীর্ঘসূত্রিতার পেছনেই তিনটি সাধারণ কারণ আছে: প্রথমত, আমরা বড় বড় কাজ করতে চাই কিন্তু সে লক্ষ্যে বাস্তবে কাজ করি না (মাস শেষে ঠিকই ইনক্রিমেন্ট চাই, বছর ঘুরতে না ঘুরতে প্রমোশন চাই- কিন্তু অফিসে বাড়তি এক ঘন্টা কাজ করতে আমরা নারাজ!); দ্বিতীয়ত, কাজ শুরু না করার ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে আমরা মেধাবী (যেরকম সারাদিন বাসায় থাকার পরও গৃহিণীরা কেন ঘরের কাজ শেষ করতে পারেন না? কারণ ‘ভাল্লাগছিলো না’ অথবা গা-হাত-পা ‘ম্যাজ-ম্যাজ’ করছিলো সেজন্যে!); এবং তৃতীয়ত, আমরা জানি যে আলস্যের কারণে ক্ষতি হচ্ছে, কিন্তু এই বোধ আমাদের আলস্যকে আরও বাড়িয়ে দেয় (যেরকম অনেক পড়া জমে গেছে বলে আমরা পড়তে বসতেই ভয় পাই!) অতএব সময় থাকতে সতর্ক হওয়া ভালো। আপনার শুরু করার জন্য কয়েকটি সহজ উপায় বলে দিতে পারি: # প্রয়োজনীয় কাজের একটা তালিকা করুন। একেবারে ঘণ্টা-মিনিট-সেকেন্ড বেঁধে রুটিন করবেন না বরং জরুরি কাজগুলো ১-২-৩- ... এভাবে লিখে যান।

এই তালিকাটি সবসময় পকেটে বা সঙ্গে রাখুন এবং সময় পেলেই একবার এতে চোখ বুলান। হয়ে গেলে ঐ কাজের পাশে একটি টিক চিহ্ন দিন। দিন শেষে অন্তত ৫ মিনিট ব্যয় করুন যে কাজগুলো করা হলো না সেগুলো চিহ্নিত করতে। # শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ বাড়ান। কাউকে পানি ঢেলে দিতে না বলে নিজে অপরকে পানি ঢেলে খাওয়ান।

লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। শরীর যত কাজে অভ্যস্ত হবে তত এর ক্লান্তি কমবে। আর যত এ আরামে থাকবে তত আপনার শ্রান্তি বাড়বে। মনে রাখবেন, ‘শরীরের নাম মহাশয়, যা সহাই তাই সয়!’ # অপ্রয়োজনীয় ফোন বা টিভি দেখা কমাতে এ কাজগুলো দাঁড়িয়ে করুন। পা ব্যথা হলে এমনিতেই সময়ের হিসেব পাবেন।

আর দিনে বিশেষ কোনো কাজ করার থাকলে ঐ সময়টাতে ফোন বা ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয় রাখবেন। এতে ভুলে যাবার সম্ভাবনা কমবে। # সবসময় বিশ্রাম খুঁজবেন না। একঘেয়েমি কমাতে একটানা কাজের ফাঁকে দু/একটি ছোটখাটো কাজ করুন। একবার বিশ্রাম নিতে গেলে দেখবেন গা ছেড়ে দিবে, কিছুক্ষণ আগের সেই উদ্যমটা আর পাবেন না।

তাই সবসময় কাজের মধ্যে থাকুন। # অপ্রেয়াজনীয় কাজে দৃড়তার সাথে ‘না’ বলতে শিখুন। আপনার প্রয়োজন না বুঝে কেউ যদি রাগারাগি বা অভিমান করে তবে তেমন সম্পর্কে অপকারই বেশি। # নিয়মিত মেডিটেশন করুন। জীবন থেকে যা চান সেই ছবিটাকে মেডিটেশন আপনার অবচেতনে গেঁথে দেবে।

কাজ করার জন্য তখন আর বাইরে থেকে আগ্রহ দিতে হবে না; ভেতর থেকেই অহর্নিশি তাগিদ পাবেন। সূত্র: কোয়ান্টাম মেথড http://quantummethod.org.bd ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।