আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লিবিয়া জীবন: ৯

এ লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আমার যুদ্ধাপরাধ রাত ৩টায় পাকিস্তান এয়ারলাইন্সের বিমানটি জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের রানওয়ে ছুঁলো। এরশাদ সবেমাত্র ক্ষমতায় এসেছেন। সামরিক শাসন চলছে। আর ৬ বছর বয়সে আমার প্রথম বাংলাদেশে আসা। গভীর রাত বলে বাবা-মা বের হতে রাজি হলেন না।

হিন্দি সিনেমার বদৌলতে ডাকাত সম্পর্কে আগে থেকেই ধারণা ছিল। এবার ডাকাতির ভয় পেলাম। রাতে এয়ারপোর্টের এমাথা-ওমাথা দৌড়ে বেড়াচ্ছি আমরা দুই ভাই। হঠাৎ কাচের দরজার বাইরে চোখ দিয়েই চক্ষু ছানাবড়া হয়ে গেলো আমার ছোট ভাইয়ের। দৃশ্যটা দেখে আমিও নির্বাক, রাস্তায় একটা মানুষ ঘুমিয়ে আছে।

মাথার নিচে ইট। সেকি! মানুষ রাস্তায় ঘুমায় কেন? ঘরবাড়ি নাই! নানা প্রশ্ন উকি দিচ্ছে মনে। ছোট ভাই দৌড়ে গেলেন বাবা-মাকে ডাকতে। মনে পড়ছে, লিবিয়ায় বেদুইনদের ধরে ধরে, তাবু থেকে টেনে হিচড়ে বহুতল ফ্ল্যাটে উঠিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। আর এখানে রাস্তায় ঘুমিয়ে থাকে মানুষ।

এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে যতোই বাংলাদেশ দেখছি, ততোই অবাক হচ্ছি আমরা। বাসায় বাবা লুঙ্গি পড়তেন। আর দেশে ঘরে-বাইরে সব জায়গায়ই মানুষ লুঙ্গি পড়ে। লিবিয়ার ফিলিস্তিনিদের মতো দেশজুড়ে ভিক্ষা করছে লাখ লাখ মানুষ। ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে বাবাকে দেখলাম স্টিমারের টিকেটের জন্য বাড়তি কিছু টাকা দিচ্ছেন।

জানলাম, ওটা ঘুষ। আরও মজার ব্যাপার ঘটলো নদী দেখে। ছোট ভাই বলতে লাগলো, পিচ্চি সমুদ্র। বাবা বললেন, পানি খেয়ে দেখ। একটুও নোনতা না।

আমিতো পানি খেয়ে অবাক। নীল নদের চেয়ে অনেক মিষ্টি কীর্তনখোলার জল। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।