এ লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আমার যুদ্ধাপরাধ কোরিয়ান হোক, আর চীনা-- নাকবোঁচা মঙ্গলীয় সবার চেহারাই এক রকম লাগতো আমার কাছে। লিবিয়ায় আসা এই নাকবোচাদের অধিকাংশই ছিল শ্রমিক। কোরিয়ান কন্ট্রাকশন ফার্মগুলোতে তখনো বাংলাদেশী শ্রমিকরা ঢোকেনি। ১৯৭৫-৮০ পর্যন্ত লিবিয়ায় বাংলাদেশী প্রবাসীদের মধ্যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ইংলিশ টিচারে মতো পেশাজীবীদেরই দাপট ছিল বেশি। ক্যুয়ের পর দেশছাড়া কর্নেল ফারুক-রশিদ থেকে শুরু করে ডেপুটেশনে যাওয়া উইং কমান্ডার রহিম-- সবুজ লিবিয়া গঠনে বাংলাদেশী সামরিকদেরও একটা অবদান আছে।
বাবা বলতেন, যখন বাংলাদেশ গড়ার সময়, তখন তিনি লিবিয়া নির্মাণে ব্যস্ত। এ নিয়ে খুব আক্ষেপও ছিল তার। শপিংমলগুলো কাজ করতো ফিলিপনো আর মিশরীয় মেয়েরা। অধিকাংশ নার্সই যুগোশ্লাভিয়ার-- দেশটা এখন ভেঙে গেছে।
মানচিত্র নিয়ে যে আমাদেরও ঝামেলা আছে, তা বুঝতাম ইলিয়াস আংকেলকে দেখে।
ভদ্রলোক আমার বাবার সঙ্গেই ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন। একই সঙ্গে একই কায়দায় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে ডেপুটেশনে মুসরাতা গেছেন। কিন্তু বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাওয়ার পর তার মনে হলো-- তার আসল দেশ ইন্ডিয়া। বর্ধমানে পৈত্রিক ভিটায় দালান করলেন, দোকান-পাট করলেন। আর বাংলাদেশের পাট চুকিয়ে ফেললেন।
যা হোক, আবারও সবুজ লিবিয়া ফিরে আসি। আমার বাবা যে পাওয়ার স্টেশনে কাজ করতেন, সেখানের শীর্ষ দুয়েকটি আর ছোট কয়েকটি পদ ছাড়া বাকি সবই বিদেশি। বেদুইন লিবিয়ানরা তখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে আর বিদেশীরা তাদের দেশটি গড়ে দিচ্ছে। অদ্ভুত এক দৃশ্য। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।