আম্পায়ারের বিতর্কিত বা সংশয়পূর্ণ সিদ্ধান্ত যেন ম্যাচের ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব রাখতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতেই চালু হয়েছিল ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস)। কিন্তু অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টের পর এই রিভিউ পদ্ধতিই ‘রিভিউ’ করার জোরালো দাবি উঠেছে ক্রিকেট অঙ্গনে। রোমাঞ্চকর ম্যাচটির ফল নির্ধারণে যে ব্যাপক প্রভাব রেখেছে আইসিসির প্রযুক্তিভিত্তিক এই পদ্ধতিটি!
গতকাল প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিনে জয় থেকে মাত্র ১৪ রান দূরে ছিল সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। অ্যান্ডারসনের বলে হাডিনের ক্যাচের আবেদনে প্রথমে সাড়া দেননি আম্পায়ার আলিম দার। অ্যালিস্টার কুক রিভিউর আবেদন করার সময়ও হয়তো খুব বেশি আশাবাদী ছিলেন না আউটটি নিয়ে।
অন্য কোনো সময় হলে হয়তো এটার জন্য মহামূল্যবান একটি রিভিউর সুযোগ নষ্ট করতেন না ইংলিশ অধিনায়ক। কিন্তু চূড়ান্ত মুহূর্তে এই রিভিউ দিয়েই বাজিমাত করল ইংল্যান্ড। থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সাজঘরে ফিরতে হলো হাডিনকে। জয়ের আনন্দে মেতে উঠলেন ইংলিশ ক্রিকেটাররা।
অথচ এই টেস্টের তৃতীয় দিনে একেবারেই বিপরীত ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে।
অ্যাশটন অ্যাগারের বলে নিশ্চিত আউটের হাত থেকে বেঁচে গেছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে গিয়েছিল স্লিপে দাঁড়ানো মাইকেল ক্লার্কের হাতে। নিশ্চিত এই আউটের আবেদনেও সাড়া দেননি আম্পায়ার আলিম দার। কিন্তু এক ইনিংসে দুটি রিভিউর সুযোগ আগেই কাজে লাগিয়ে ফেলায় সিদ্ধান্তটি পুনর্মূল্যায়নেরও কোনো সুযোগ ছিল না অস্ট্রেলিয়ার। সেই ব্রড তারপর উইকেটে ছিলেন আরও লম্বা সময়।
শেষ পর্যন্ত তাঁর ৬৫ রানের ইনিংসটিই ভূমিকা রেখেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের বড় সংগ্রহের পেছনে।
পুরোপুরি বিপরীতধর্মী এই দুই ঘটনার পর আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে ডিআরএস। অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমে বেশ ভালোই সমালোচিত হয়েছে প্রযুক্তিভিত্তিক এই পদ্ধতিটি। সিডনির ‘ডেইলি টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় ক্রিকেটলেখক ম্যালকম কন লিখেছেন, ‘এটা মোটেই ঠিক নয়। মাঠের আম্পায়ারের সংশয়পূর্ণ সিদ্ধান্ত এড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই চালু হয়েছিল ডিআরএস।
কিন্তু সেই জিনিসটা এখনো এড়ানো যাচ্ছে না। প্রযুক্তি যদি আরও সঠিকভাবে ব্যবহার করা না যায়, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। ’
তবে এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত নন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। ডিআরএসের সঠিক ব্যবহার করতে পারাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি, ‘অধিনায়ককে অবশ্যই অনেক সতর্ক হতে হবে। বোলাররা অনেক আউটের ব্যাপারে একেবারে নিশ্চিতই থাকতে পারেন, কিন্তু তাদের কথা শুনে আপনি ডিআরএসের সুযোগটা নষ্ট করতে পারেন না।
আমার মনে হয়, ডিআরএস ব্যবহার করার মধ্যেও দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন আছে। আর এ ক্ষেত্রে মানবীয় বোধ-বিবেচনা কাজে লাগিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ’
২০০৯ সালে প্রযুক্তিভিত্তিক এই ডিআরএস পদ্ধতি চালু করে আইসিসি। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি ইনিংসে মাত্র দুবার মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ পায় প্রতিটি দল। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।