মাটি ও মানুষ
রহস্যামোদীদের কাছে চিলির ইস্টার দ্বীপ খুবই সমাদৃত নাম। আপনাদের অনেকের পিসিতেই হয়তো ইস্টার দ্বীপের বিখ্যাত পাথুরে মূর্তিগুলো আছে। এই মূর্তিগুলো নিয়ে একসময় প্রচুর রহস্য সৃষ্টি করা হয়েছে এবং কিছুটা এখনও আছে।
অবস্থান, গঠন ও নামকরণ
ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ ঘোষিত এই দ্বীপটি বর্তমানে চিলির একটি অঙ্গরাজ্য। দ্বীপটি দক্ষিণ-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৭ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে অবস্থিত।
চিলির উপকূল থেকে ৩৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপের সবচেয়ে কাছের মানুষ বসবাসকারী দ্বীপ হলো ‘পিটকেয়ার্ন দ্বীপ’, তাও আবার ২০৭৫ কিলোমিটার দূরে। দ্বীপটিকে পৃথিবীর অন্যতম নিঃসঙ্গ দ্বীপ বলা হয়।
১৭২২ সালের ৫ এপ্রিল ইস্টার সানডের দিন ডাচ ক্যাপ্টেন ‘জ্যাকব রগেভিন’ এই দ্বীপ আবিষ্কার করেন। জ্যাকব দ্বীপটির নাম দেন ইস্টার দ্বীপ। দ্বীপটির পলিনেশীয় নাম হলো ‘রাপা নুই’।
আর এর অফিশিয়াল স্প্যানিশ নাম হল ‘ইজলা ডে পাসকুয়া’। এছাড়া দ্বীপটির প্রাচীন বাসিন্দারা একে ‘নভাল অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ ও ‘আইস লুকিং অ্যাট হেভেন’ নামেও ডাকত।
লক্ষাধিক বছর আগে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাতে ত্রিভুজাকৃতির এ দ্বীপ সৃষ্টি হয়। দ্বীপটির তিন কোণে রয়েছে তিনটি মৃত আগ্নেয়গিরি। এটি লম্বায় ২৪.৬ কিলোমিটার এবং সবচেয়ে প্রশস্ত অংশটির দৈর্ঘ্য ১২.৩ কিলোমিটার।
মোট আয়তন ১৬৩.৬ বর্গ কিলোমিটার। সবচেয়ে উঁচু অংশটির উচ্চতা ১৬৬৩ ফুট।
প্রথম বসতি স্থাপন ও বাসিন্দা
এই দ্বীপটিতে প্রথম কখন বসতি স্থাপন করা হয় তা নিয়ে রয়েছে বেশ বিতর্ক। একেক মতবাদ অনুযায়ী ৩০০-১২০০ খিস্টাব্দের মধ্যে প্রথম বসবাস শুরু হয়। তবে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ধারণা হলোম ৩০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে একদল সমুদ্রগামী যাত্রী পথ হারিয়ে বা ঝড়ের কবলে পড়ে এই দ্বীপে হাজির হয় এবং আশ্রয় নেয়া দলটি ওখানেই বসবাস শুরু করে দেয়।
যদিও কোনো কোনো গবেষক মনে করেন, এই দ্বীপে বসবাস করার জন্য পরিকল্পিত অভিযান চালানো হয়েছে সাউথ আমেরিকা বা পলিনেশীয় অন্য কোনো দ্বীপ থেকে। তবে ধারণাটি বিশ্বাসযোগ্য নয়, কারণ তাহলে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থেকে যেত যার কোনো প্রমাণই নেই।
এই দ্বীপের আদি বাসিন্দারা দক্ষিণ আমেরিকান, এমন ধারণা পোষণ করতেন নরওয়েন অভিযাত্রী থর হেয়ারডেলসহ অনেকেই। বর্তমানে দ্বীপের আদি বাসিন্দাদের ডিএনএ টেস্ট, পালিত মুরগি, ভাষা এসব থেকে সবাই নিশ্চিত—এই দ্বীপের আদি বাসিন্দারা পলিনেশীয় কোনো দ্বীপ থেকেই এসেছিল এবং খুব সম্ভবত তা ছিল ইস্টার দ্বীপ থেকে ৩২০০ কিলোমিটার দূরের মার্কেসাস দ্বীপ।
ইস্টার দ্বীপের মূর্তি এবং প্লাটফর্ম
এই দ্বীপটি সারা দুনিয়ায় খ্যাতি লাভ করেছে তার পাথুরে বিশালাকার মূর্তিগুলোর জন্য।
মূর্তিগুলোকে ডাকা হয় ‘মোয়াই’ নামে এবং মূর্তিগুলোকে পাথরের তৈরি প্লাটফর্মে দাঁড় করানো হয়েছে, যেগুলোকে ডাকা হয় ‘আহু’ নামে। প্রতিটি আহু এবং মোয়াই’র আবার আলাদা নাম আছে। দ্বীপজুড়ে রয়েছে ৩১৩টি আহু যার মধ্যে ১২৫টিতে মোয়াই স্থাপন করা হয়েছে। দ্বীপের পরিধিজুড়ে প্রতি দেড় কিলোমিটার পরপর রাখা আছে আহু। আহু দ্বারা প্রায় পুরো দ্বীপকেই আবর্তিত করা হয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ববিদ ভেন টিলবার্গ ১৯৮৯ সালে দ্বীপজুড়ে এক জরিপ চালান। তার জরিপে দ্বীপটিতে মোট ৮৮৭টি মোয়াই পাওয়া যায়। প্রাপ্ত মোয়াই’র মাঝে ২৮৮টিকে বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত আহুতে দাঁড় করানো অবস্থায় দেখা যায়। বেশিরভাগ মোয়াই যে খনি থেকে তৈরি করা হয়েছিল তার নাম ‘রানু রারাকু’। রানু রারাকুতে নির্মিত বা নির্মাণাধীন অবস্থায় পাওয়া যায় ৩৯৭টি মোয়াই।
৯২টি মোয়াই রানু রারাকু থেকে বিভিন্ন আহুতে স্থানান্তরিত করা অবস্থায় রাস্তায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকি আহুগুলো মিউজিয়াম ও দ্বীপের অন্যান্য স্থানে পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ মূর্তিরই মাথা পুরো মূর্তিটির ৫ ভাগের ৩ ভাগ।
সবচেয়ে বড় মোয়াই যা রানো রারাকু কারখানাতেই রয়ে গেছে তার নাম ‘এল জিগান্টি’। এর উচ্চতা ৭১.৯৩ ফুট এবং ওজন আনুমানিক ১৬৫ টন।
আহুতে দাঁড় করানো মোয়াই’র মাঝে সবচেয়ে বড়টি হলো ‘পারু’ যার উচ্চতা ৩২.৬৩ ফুট এবং আনুমানিক ওজন ৮২ টন। অবশ্য ‘আহু হাঙ্গা টে তেঙ্গা’তে ৩৩.১০ ফুট উঁচু একটি মোয়াই ইস্টারবাসী নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু দাঁড় করানোর সময় এটি পড়ে যায়। সবচেয়ে ছোট মোয়াইটি আছে ‘পুইক’-এ। এটির উচ্চতা ৩.৭৬ ফুট।
গড়পড়তা প্রতিটি মোয়াই’র উচ্চতা ১৩.২৯ ফুট, তলের প্রস্থতা ৫.২৫ ফুট, মাথার প্রস্থতা ৪.৮৬ ফুট, মোয়াই’র মাঝামাঝি স্থানের গভীরতা ৩.০২ ফুট এবং ওজন ১৩.৭৮ টন।
৮৮৭টি মোয়াই’র মাঝে ৮৩৪টি আগ্নেয়শিলা ‘টাফ’ পাথর থেকে খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে। ১৩টি খোদাই করা হয়েছে ‘ব্যাসল্ট’ পাথর থেকে। ২২টি খোদাই করা হয়েছে ট্র্যাচাইট পাথর থেকে এবং ১৭টি লাল স্কোরিয়া পাথর থেকে। কিছু মোয়াই’র মাথায় লাল রঙের টুপি বা হ্যাট পরানো আছে। বিশ্বাসযোগ্য ধারণা হলো, এই লাল টুপি সর্দারদের মাথার প্রতীক বোঝায়।
লাল রং পলিনেশীয় সভ্যতায় একটি বহুল সমাদৃত রং। এই টুপিকে বলা হয় পুকাও এবং তা লাল স্কোরিয়া পাথর খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে। সার্জিও রাপু হেওয়ার নেতৃত্বে একদল প্রত্নতত্ত্ববিদ ১৯৭৯ সালে একটি আহুর কাছে মাটি খুঁড়ে কিছু বিশালাকায় চোখের সন্ধান পান। চোখগুলো সাদা প্রবাল দিয়ে তৈরি ছিল এবং মণি বানানো হয়েছিল লাল স্কোরিয়া পাথর দিয়ে। গবেষকদের ধারণা, ইস্টারবাসী প্রথমে মোয়াইগুলো বানাত, তারপর এগুলোকে আহুতে দাঁড় করাত তারপর চূড়ান্ত পর্যায়ে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মোয়াই এ চোখগুলো বসাত।
ইস্টারবাসী প্রথম কখন মোয়াই নির্মাণ শুরু করে তার সঠিক কোনো তথ্য নেই।
পলিনেশীয় প্রায় সব দ্বীপেই পবিত্র মূর্তি রাখার জন্য আহু তৈরি করা হয়, যার নাম মারায়ে। তবে ইস্টার দ্বীপের মতো এত বিশালাকৃতির নয়। আহু মূলত আয়তক্ষেত্রাকার প্লাটফর্ম। তৈরি করা হয়েছে ব্যাসল্ট পাথর দ্বারা, মাঝে রাখা হয়েছে নুড়ি পাথর।
সামনের প্রাচীর বরাবর লাল স্কোরিয়া পাথরের বেল্ট তৈরি করা হয়েছে। ভেতরের অংশ ক্রমান্বয়ে ঢালু। একেকটি আহুতে এক থেকে সর্বোচ্চ ১৫টি পর্যন্ত মোয়াই স্থাপন করা হয়েছে। ইস্টার দ্বীপে জাতিগত দ্বন্দ্বে বা অন্যান্য কারণে উপচেপড়া একাধিক মোয়াই পরবর্তী সময়ে একাধিক প্রত্নতত্ত্ববিদের দ্বারা আবার আহুতে দাঁড় করানো হয়েছে। একটি ব্যাপার খুবই উল্লেখযোগ্য, শুধু আহু ‘আকিবি’তে স্থাপিত ৭টি মোয়াই ছাড়া বাকি সব মোয়াই দ্বীপের দিকে তাকানো।
আহু আকিবির মোয়াইগুলো সমুদ্রের দিকে তাকানো।
ইস্টারবাসীর আরও কিছু শিল্পকর্ম
পলিনেশীয় কিছু দ্বীপেই পাথরের গায়ে খোদাই করে ছবি আঁকার নমুনা দেখা যায়, যাকে বলে পেট্রগ্লিপস। তবে এই সংস্কৃতির সবচেয়ে সমৃদ্ধ সংগ্রহ আছে ইস্টার দ্বীপে। প্রায় ১০০০টি স্থানে ৪০০০-এর মতো পেট্রগ্লিপসের নমুনা আছে দ্বীপটিতে। এখানে উল্লেখ্য, মার্কেসাস দ্বীপেও পেট্রগ্লিপসের প্রচুর নমুনা পাওয়া যায়।
ইস্টারবাসী রঙ্গোরঙ্গো নামে এক ধরনের লিখিত ভাষা আবিষ্কার করেছিল বাইরের কারও সাহায্য ছাড়াই। তাছাড়া তারা কাঠ খোদাই করে সুন্দর মূর্তি বানাতে পারত, যা বর্তমানে পৃথিবীর নানা জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
ইস্টার দ্বীপ নিয়ে যত রহস্য
ক্যাপ্টেন রগেভিন ইস্টারে নেমে দ্বীপে স্থাপিত বিশালাকায় পাথুরে মূর্তিগুলো দেখে অবাক হয়ে যান। কারণ তিনি দ্বীপটি প্রায় বৃক্ষশূন্য অবস্থায় দেখতে পান। হাজারদুয়েক রুগ্ন মানুষ আর তাদের তৈরি একদম হালকা ধাঁচের কিছু মাছ ধরার নৌকা দেখেন তিনি।
তিনি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না এরকম একটি অনগ্রসর দ্বীপবাসীর পক্ষে পাথর খোদাই করে কী করে এত বিশাল মূর্তি বানানো সম্ভব হয়েছিল। ইস্টারবাসীর ছিল না পাথর কাটার কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি যা দ্বারা তারা এত বিশাল পাথর খোদাই করতে পারবে, ছিল না কোনো আধুনিক যান যা দ্বারা তারা রানু রারাকু কারখানা থেকে মোয়াইগুলো নানা স্থানে স্থাপিত আহুতে নিয়ে যাবে বা ছিল না কোনো ক্রেন যা দ্বারা তারা আহুতে মোয়াই স্থাপন করবে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ চালানোর জন্য যত মানুষ দরকার এবং খাবারের দরকার তা তো ছিল না ইস্টারে। ছিল না কোনো বড় গাছ। তাহলে কারা কীভাবে এই মূর্তি বানাল? আর কেনই বা এত বড় মূর্তি বানাল? তাছাড়া পরিস্থিতিটা আরও রহস্যাভৃত করেছিল ইস্টারের আদি বাসিন্দারা।
তাদের কথা অনুযায়ী, পাথর খোদাই করার পর পুরোহিতরা ‘মানা’ নামে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার বলে মোয়াইকে হেঁটে আহুতে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিত এবং তারা চলেও যেত। এছাড়া দ্বীপটির প্রাচীন নাম নেভাল অব দ্য ওয়ার্ল্ড ও আই’স লুকিং অ্যাট হেভেন অনেক প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ইতিহাসবিদের অন্য রকম গবেষণায় নিয়ে যায়। তাদের মতে, দ্বীপটি অনেক আগেই বসবাসযোগ্য ছিল এবং প্রাচীন কোনো উন্নত সভ্যতা যারা পরে হারিয়ে গিয়েছিল তারা দ্বীপটিতে বসবাস করত। কোনো একসময় এটি পৃথিবীর জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এরিখ ভন দানিকেনসহ কিছু শৌখিন প্রত্নতত্ত্ববিদ এসব কর্মকাণ্ডকে ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের কাজ বলে ঘোষণা দিয়ে রহস্য আরও বাড়িয়ে তুললেন।
তাদের কথা হলো, একদল আটকেপড়া ভিনগ্রহবাসী এসব মূর্তি বানানো শুরু করেছিল, পরে যখন তাদের উদ্ধার করতে আসা হয় তখন মূর্তি নির্মাণ অসমাপ্ত রেখেই তারা চলে যায়।
রহস্য উন্মোচন
দ্বীপটির প্রধান মূর্তি তৈরির কারখানা রানু রারাকুতে প্রচুর ব্যাসল্ট পাথরের তৈরি ছেনা, বাটালি পাওয়া গেছে। পাথর খোদাই করতে হলে আধুনিক যন্ত্র লাগবে এমন কিছু নয়, প্রাচীন এসব যন্ত্রপাতি দিয়েও পাথর খোদাই করা সম্ভব তবে দরকার প্রচুর লোক। কিন্তু এত লোক দ্বীপবাসী পেল কোথায়? যদিও রগেভিন যখন দ্বীপটিতে নামেন তখন খুব বেশি লোক ছিল না, কিন্তু সাম্প্রতিককালে গবেষণায় দেখা যায় ইস্টার এক সময় গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ ছিল। ছিল প্রচুর পাখির বাস এবং তারা মাছ ধরার নৌকা চালানোতে ছিল পটু।
কারণ দ্বীপে মাটি খুঁড়ে ডলফিনের কঙ্কালও পাওয়া গেছে। প্রতিটি মূর্তি আকারভেদে ৫০-১৫০ জন লোকের পাথর কেটে তৈরি করতে খুব বেশি দিন লাগার কথা নয়। মূর্তিগুলো পরিবহনে ওয়াই আকৃতির স্লেজ নির্মাণ করা হয়েছিল এই পাম দিয়ে। ইস্টারে থাকা হাও-হাও নামক এক ধরনের গাছের ছাল ব্যবহার করা হয়েছে দড়ির কাজে। মোয়াই’র আকারভেদে ১৮০-২৫০ জন মানুষ টানতে হয়েছে স্লেজ গাড়িকে।
তবে সবচেয়ে বড় মোয়াই পারুকে টানতে এর ৫-৬ গুণ বেশি লোক লেগেছে। একসঙ্গে সবাই সমান গতিতে টানলে সবচেয়ে দূরের আহুতেও সর্বোচ্চ সপ্তাহখানেক লেগেছিল। এরপর ধাঁধা হলো আহুতে মূর্তিগুলো কীভাবে স্থাপন করা হলো তা নিয়ে।
এরও ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। প্রথম মোয়াই’র নিচের দিকটা আহুর ঢালু অংশে টেনে তোলা হয়েছিল।
তারপর কাঠ দিয়ে মোয়াই’র মাথা আস্তে আস্তে উপরে উঠানো হয়। ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য একাধিক মানুষ দড়ি ব্যবহার করত। সবচেয়ে বড় কথা হলো, সাম্প্রতিক সময়ে কোনো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার না করেই থর হেয়েরডালসহ একাধিক প্রত্নতাত্ত্বিক কিছু মোয়াইকে প্রাচীন উপায়ে আবার আহুতে স্থাপন করেছেন।
মূর্তি বানানোর এই কালচার পলিনেশীয় অন্যান্য দ্বীপেও পাওয়া যায়, তবে এত বড় আকারের নয়। মূর্তিগুলো তাদের পূর্বপুরুষের প্রতিনিধিত্ব করে এবং এগুলো তাদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ক্ষমতা ও কৃতিত্বের প্রতীক বহন করে।
তবে এত বিশাল মূর্তি বানানোর ক্ষেত্রে সম্ভবত প্রতিযোগী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছিল। ইস্টারে ১১টির মতো গোষ্ঠী ছিল যারা হয়তো একজন আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ছিল। মূর্তি অসমাপ্ত রাখার কারণ হলো, ততদিনে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যাওয়া এবং এই বিশাল কর্মযজ্ঞ চালাতে গিয়ে দ্বীপের বৃক্ষ ও খাদ্যভাণ্ডার শেষ করে ফেলা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।