লেখাটি বিডিনিউজ থেকে নেওয়া:
শর্মিলা বসু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের একজন গবেষক। তার দাবী- তিনি ১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধের ওপর বিস্তারিত গবেষণা করেছেন। নিরপেক্ষভাবে তার কাজ পর্যালোচনা করলেও পাকিস্তান দেশটির প্রতি অন্ধ আনুগত্য টের পাওয়া যায়। তিনি মূলত শোষকের অত্যাচারের পক্ষে কলম ধরেন, সাফাই গান। তাদের অত্যাচার ও গণহত্যার পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য একপেশে তথ্য হাজির করে তত্ত্ব প্রকাশ করেন।
একাত্তরের যুদ্ধের গায়ে তিনি গৃহযুদ্ধের তকমা লাগান, যুদ্ধের মধ্যে পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতা খুঁজে পান না, ধর্ষণ আদৌ কোনো পাকিস্তানি সৈন্য করেছে কিনা সেই ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেন। একাত্তরের যুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের দায় পাকিস্তানিদের দিক থেকে সরিয়ে তথাকথিত বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের দিকে তাক করাই তার গবেষণাকর্মের মূল উদ্দেশ্য।
শর্মিলা বসু(১) আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় মাঝে সাঝে প্রবন্ধ লিখেন। এছাড়া তার বেশিরভাগ কাজ ইংরেজিতে। গুজরাট দাঙ্গার সময় কলকাতার ‘দা টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় তিনি বেশ কিছু কলাম লিখেছেন।
তার গবেষণার একটা প্রধান আগ্রহ ১৯৭১ সালের যুদ্ধ; তবে ইতিহাসের অনুগত না থেকে ইতিহাস বিকৃতির নির্লজ্জ কাজ ধারাবাহিকভাবে করে যাচ্ছেন হার্ভাডের ডিগ্রী আর অক্সফোর্ডের চাকুরির ওজন দিয়ে। ভারতীয় জার্নাল ইকোনোমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলিতে প্রকাশিত তার দুটি গবেষণাপত্রের সীমাহীন মিথ্যাচার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রথমটি প্রকাশিত হয় ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে। প্রবন্ধের শিরোনাম: ‘অ্যানাটমি অফ ভায়োলেন্স: অ্যানালাইসিস অফ সিভিল ওয়ার ইন ইস্ট পাকিস্তান ইন ১৯৭১’; পরের গবেষণাপত্রের নাম: ‘লুজিং দা ভিক্টিমস্: প্রবলেমস্ অফ ইউজিং উইম্যান অ্যাস্ ওয়েপানস্ ইন রিকাউন্টিং দা বাংলাদেশ ওয়ার’; এটি প্রকাশিত হয় একই জার্নালে (সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে)।
শর্মিলা বসুর গবেষণা একটি বিশেষ উপপাদ্যকে আগে স্থির করে পরে সেটিকে প্রমাণ করতে এগিয়েছে।
মূল উপপাদ্যটি হলো: ১৯৭১ সালের যুদ্ধ-পূর্ববর্তী পূর্ব পাকিস্তানিদের বাঙালি জাতীয়তাবাদ ছিল সশস্ত্র ও উগ্র এবং এদের অবাঙালি হত্যাকাণ্ড পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদী গুণ্ডারাই প্রথম করেছে বলে সেটা দমন করতে পাকিস্তান সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়। মূল উপপাদ্যকে ঘিরে তার আরো কিছু বক্তব্য আছে। জাতিবৈরিতায় পাকিস্তানিদের চেয়ে বাংলাদেশের জনগণ এগিয়ে ছিল। গণহত্যা ও ধর্ষণের সংখ্যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যে অনেকগুণ বাড়িয়ে বর্ণিত আছে। ১৯৭১ সালে অবাঙালি হত্যাকাণ্ড পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি হত্যাকাণ্ডের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিল না।
তিনি তার প্রথমদিকের গবেষণাতে এই উপপাদ্য ও অন্যান্য বক্তব্য সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত তার বই ‘ডেড রেকনিং: মেমোরিজ অফ দা ১৯৭১ বাংলাদেশ ওয়ার’- এ তার যাবতীয় অনুসিদ্ধান্ত নানারকম পক্ষপাতদুষ্ট বরাত টেনে পাকিস্তানের পক্ষে যায় এমন উপসংহারে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে।
বিস্তারিত পড়তে:View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।