বাংলায় মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বাংলা ব্লগারদের সাথে মত বিনিয়ের উদ্দেশ্যে এই প্রোফাইলটি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে। আপনার ভালো লাগা, খারাপ লাগা জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে সামিল হোন।
আইরম শর্মিলা মনিপুর রাজ্যে সশস্ত্র বাহিনী (বিশেষ ক্ষমতা) আইন, ১৯৫৮ (এএফএসপিএ) আরোপের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নভেম্বর মাস থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেন। অনশন শুরুর পরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৩০৯ ধারায় আত্মহত্যার প্রচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। ইরম শর্মিলা গত ৯ বছর ধরে আদালতের হেফাজতে রয়েছেন।
বর্তমানে তাকে মনিপুরের রাজধানী ইম্ফলে অবস্থিত জওয়াহেরুলাল নেহেরু হাসপাতালের নিরাপত্তা ওয়ার্ডে আটক রাখা হয়েছে, সেখানে তাকে নাক দিয়ে তরল খাবার দেয়া হচ্ছে।
যদিও ৩০৯ ধারা জামিনযোগ্য অপরাধ কিন্তু শর্মিলা জামিন-নামায় স্বাক্ষর করতে রাজী না হয়ে বরং তিনি তার অপরাধ না করার যে দাবী তা বহাল রেখেছেন এবং জামিনের পরিবর্তে তার বিরুদ্ধে আনীত ফৌজদারি মামলাগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। তাকে কখনো বিচারের সম্মুখীন করা হয়নি। কিন্তু যেহেতু ৩০৯ ধারার অধীনে অপরাধের সাজা সর্বোচ্চ এক বছর মাত্র সেকারণে এক বছর অন্তর তাকে আদালতের হেফাজত থেকে যথারীতি মুক্তি দেয়া হয় এবং মুক্তি দেয়ার কিছু সময়ের মধ্যে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়, কারণ তিনি অনশন অব্যাহত রাখেন।
আইরম শর্মিলা এএফএসপিএ-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ অনশন শুরু করেন।
ব্রিটিশ মেডিকেল এসোসিয়েশন, ওয়ার্ল্ড মেডিকেল এসোসিয়েশনকে দেয়া এক ব্যাখ্যায় জানিয়েছে যে, “অনশন করা আত্মহত্যার সমতুল্য নয়। অনশনকারী ব্যক্তিরা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এমন কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজটি করেন এবং তারা সাধারণত বেঁচে থাকার আশা ও ইচ্ছা পোষন করেন। ” অনশনকারী সম্পর্কিত মাল্টা ঘোষণাপত্রে ওয়ার্ল্ড মেডিকেল এসোসিয়েশন অনশনকারী ব্যক্তিদের সম্পর্কে এই অবস্থান নির্দিষ্ট করে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আইরম শর্মিলাকে মুক্তি দিতে এবং তার বিরুদ্ধে আইপিসির ৩০৯ ধারায় আনীত চলমান ফৌজদারি কার্যক্রম প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়াও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এএফএসপিএ বিলোপের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে যে, যেহেতু এই আইন বিচার-বহির্ভূত হত্যাকান্ড, জোরপূর্বক অন্তর্ধান, ধর্ষণ ও নির্যাতনসহ মারাত্মক ধরনের মানবাধিকার লংঘনকারীদের সুরক্ষা দেয় তাই এই আইন বাতিল করা উচিত।
পটভূমি
গত ২০০০ সালের নভেম্বরে মনিপুরের রাজধানী ইম্ফলের মালমে আসাম রাইফেলস (আধা-সামরিক বাহিনী) কর্তৃক ১০ জন মনিপুরীকে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে আইরম শর্মিলা চানু অনশন ধর্মঘট শুরু করেন। তিনি মনিপুর থেকে এএফএসপিএ প্রত্যাহারের দাবী জানান। এএফএসপিএ সরকার চিহ্নিত অস্থিতিশীল এলাকাগুলোতে কর্মরত সৈন্যদের “জনশৃংখলা বজায় রাখার স্বার্থে” “পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত” আইন ভঙ্গকারী যেকারো বিরুদ্ধে প্রাণসংহারি শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি সম্পদ বিনষ্ট করা, পরওয়ানা ছাড়াই যেকোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি করা এবং গ্রেফতার করার অনুমতি দিয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি ব্যতীত কোনো আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা থেকে সৈন্যদের সুরক্ষা প্রদান করা হয়েছে।
ইতোপূর্বে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এএফএসপিএ বিলোপের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল।
এছাড়াও এই আইন বিলোপের জন্যে একাধিক জাতীয় কমিটি সুপারিশ করেছে যাদের মধ্যে দ্বিতীয় প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন (সেকেন্ড এডমিনিস্ট্রেটিভ রিফর্মস কমিশন), জীবন রেড্ডি কমিশন এবং জম্মু ও কাশ্মীরে আস্থা-তৈরি সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর ওয়ার্কিং গ্রুপ (প্রাইম মিনিস্টার’স ওয়ার্কিং গ্রুপ অন কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন জম্মু এন্ড কাশ্মীর)।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।