আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলা চলচিত্রের সুরের যাদুকরেরা। (কিছু ছবি এবং গানের সংকলন)

সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল সামুতে লিখছি ৩ বছর ধরে। প্রতিবারই চেস্টা করি পাঠক, এবং সহব্লগারদের ঈদের শুভেচ্ছা স্বরুপ কিছু একটা দিতে। এর আগে বাংলা চলচিত্রের অভিনেতা অভিনেত্রি খল নায়ক নায়িকাদের নিয়ে পোষ্ট দিয়েছিলাম। পাঠকদের কাছে সমাদৃত হওয়াতে তাই এই ক্ষুদ্র নিবেদন। সবাই ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

ঈদ মোবারক। বাংলা চলচিত্রের স্বর্ণ যুগ বলতে ৬০ এর দশককেই বুঝায়। তখন যেমন মেধাবি পরিচালক ছিলেন, তেমনি তাদের মেধা বিকাশের জন্য তেমনি উপযুক্ত প্রযোজকের পৃষ্ঠপোষকতাও ছিল। ছিল দর্শকদের আগ্রহ। আর তাদের সঙ্গি ছিলেন একদল পরিশ্রমি অভিনয় শিল্পি আর চিত্রনাট্ট রচয়িতা।

আর তাদের সবার ঐকান্তিক চেস্টার ষোল কলাপুর্ণ হতো সুরের যাদুকরদের মাধ্যমেই। তাদেরকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। রবিণ ঘোষ বাংলা গানে পাশ্চাত্যের যন্ত্র সংগিতের ব্যাবহার করে চমৎকার মেলোডিয়াস সংগিতের জন্য ইনি এতটাই খ্যাতি লাভ করেছিলেন যে স্বাধীনতার উষালগ্নে পাকিস্থানিরা তাকে পাকিস্থানে নিয়ে যায়। বলা বাহুল্য যে এই বঙ্গসন্তান বহু বছর ললিউডে রাজত্ব করেছিলেন। খান আতাউর রহমান ইনাকে নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই।

একাধারে অভিনেতা, পরিচালক, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচয়িতা, গীতিকার, এবং অবশ্যই সংগিত পরিচালক। ইনার সমন্ধে বলতে গিয়ে সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছিলেন যে, খান আতা ভাইয়ের গান গাইতে একটুও কস্ট হয় না। অথচ গানগুলি হয় মেলোডিয়াস। আনোয়ার পারভেজ স্বাধীনতা পরবর্তি প্রায় ২০ বছর একের পর এক সুপারহিট রোমান্টিক গানের সুরের স্রস্টা ছিলেন ইনি। অথচ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুপথযাত্রি এই অসহায় মানুষটির প্রতি চলচিত্র পরিবারের অবজ্ঞা আর অবহেলা দেখে অভিমানে একসময় প্রায় নিভৃতেই হারিয়ে যান উনি।

এ লজ্জা জাতি হিসাবে আমাদের সবারই। আলম খান বাংলা ছবিতে হিট আর চটকদার গানের স্রস্টা বলা যায় ইনাকে। কিন্ত না, এককথা বলতে যেন ভাববেন না যে তিনি "ফাইট্টা যায়", অথবা "সোনাবন্ধু তুই আমারে কাইট্টালা" টাইপের গানে সুর করতেন। বানিজ্যিক ছবিতে সুর করলেও, ইনি নিজ স্বাতন্ত্র কোনমতেই বিসর্জন দেননি। সত্য সাহা শুরু স্বাধীনতার অনেক আগে।

স্বাধীনতার অনেকদিন পর্যন্ত বাংলা চলচিত্র জগতে যে নামটি শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হতো, সেটি হলো সত্য সাহা। তার সুর করা গানগুলি আজও শ্রোতাদের মনে দাগ কেটে যাবে। তিনি চলে গিয়েছেন। রেখে গিয়েছেন সুযোগ্য এক পুত্র ইমন সাহা। যিনি পিতার পদাংক অনুসরণ করেছেন।

আলাউদ্দিন আলি সঙ্গিত পরিবারের এই গুণি সুরকার এক সময় দোর্দন্ড প্রতাপে চলচিত্রে রাজত্ব করেছেন। রোমান্টিক আধুনিক গান থেকে শুরু করে সঙ্গিতের এমন ধারা নেই যেখানে তার বিচরণ নেই। তাই ৯০ এর দশকে তাকেই সঙ্গিত সম্রাটের উপাধি দেয়া যায় অনায়াসেই। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল অবক্ষয়ের হাতে বাংলা চলচিত্র ধবংস হলে, দর্শকদের সাথে সাথে অনেক গুণি নির্মাতাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সুরের যাদুরকরেরাও তেমনি কেউ হারিয়ে গিয়েছেন, কেউ স্বকীয়তা বর্জন করে হাওয়ায় গা ভাসিয়েছেন, কেউ কোনমতে টিকে আছেন।

বুলবুল এই টিকে থাকাদের মধ্যেই একজন। ইমন সাহা (গুগুল মামার কান্ড। ইমনের কোন ছবি পেলাম না) আগেই বলেছি, ইনি সত্য সাহার সুপুত্র। তাই পিতার সুনামের প্রতি সুবিচার করেছেন। তার অসংখ্য মেলোডিয়াস সঙ্গিতে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা চলচিত্র।

ফিউশনের যুগে তিনি বাংলা গানকে যোগ্যতার সাথেই যুক্ত করেছেন। অভিনন্দন ইমন সাহা। (সাম্প্রতিক কালে আমার শোনা এই গানটিই সবচেয়ে মেলোডিয়াস লেগেছে। ) বেশি করে গান শুনুন। গান আত্মাকে আনন্দ দেয়।

সবাইকে আবারও ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের মত ইতি। আর হ্যা, আমাকে ঈদের দাওয়াত দিলে আজকেই যোগাযোগ করুন, ঠিকানা ও ফোন নং সহ। খিক খিক। আনন্দে মাতুক সারা বিশ্ব। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.