আসুন সত্য বলি সকল প্রশংসা জগতসমুহের প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার জন্য, যিনি পরিপূর্ণ দ্বীন হিসেবে আমাদের ইসলাম দান করেছেন, যে দ্বীনে মানুষের পক্ষ থেকে কোন সংযোজন বা বিয়োজনের প্রয়োজন হয় না। সালাত ও সালাম তাঁরই রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি, যিনি আল্লাহর দ্বীনের রিসালতের দায়িত্ব পূর্ণাঙ্গভাবে আদায় করেছেন, কোথাও কোন কার্পণ্য করেননি।
ইসলাম কি শুধু নারীদেরকেই হিজাব করতে বলে? পুরুষরা কি মুক্ত,স্বাধীন? না। ইসলামে পুরুষদের জন্যও রয়েছে হিজাব যা একটি সুন্দর সমাজের অপরিহার্য অংশ। এই সংকলনটি সালাত আদায়কারী ভাইদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ।
আশা রাখি অন্তত তারা এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে এবং এর বাস্তবায়ন করবে ইনশা আল্লাহ। এখানে স্বাভাবিক আবস্থা বিবেচনা করা হয়েছে।
আসুন প্রথমেই নিচের আয়াতগুলো লক্ষ্য করি
চক্ষুর অপব্যবহার ও অন্তরে যা গোপন আছে সে সম্বন্ধে তিনি অবহিত।
-সূরাহ মু’মিনঃ ১৯
নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।
-সূরাহ বনী ইসরাইলঃ ৩৬
নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সময়ের প্রতিক্ষায় থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখেন।
-সূরাহ ফাজরঃ ১৪
ভাই একটু চিন্তা করি। আল্লাহর দেয়া সুন্দর চোখ দুটো কি আমাদের সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিৎ নয়?
আল্লাহ কুরআনে আমাদের আদেশ করছেন দৃষ্টিকে নিচু রাখবার জন্যঃ
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। ” -সূরাহ আন নূরঃ ৩০
যেহেতু দৃষ্টি নিচু রাখা লজ্জাস্থান হেফাযত করার ভিত্তি এটাকে প্রথমে উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ চোখকে করেছেন হৃদয়ের প্রতিফলন সরূপ , যদি একজন পুরুষ তার দৃষ্টিকে নিচু রাখে তাতে তার হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষা হ্রাস পাবে। কিন্তু সে যদি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে এটা তার হৃদয়ের আকাংখাকে উদ্দিপ্ত করবে।
নিঃসন্দেহে জিনা বা ব্যাভিচার ইসলামের দৃষ্টিতে একটি জঘন্য অপরাধ আর দৃষ্টিকে সংযত না রাখাই এই বিপদসংকুল পথে প্রথম পদক্ষেপ ।
সহীহ বূখারী, মুসলিম, আবু দাউদ এবং আহমাদে দেখা যাচ্ছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেনঃ
“নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা আদম সন্তানের জন্য ব্যাভিচারের অংশ লিখে দিয়েছেন; যা সে অবশ্যই পাবে। সুতরাং চক্ষুদ্বয়ের ব্যাভিচার (সকাম অবৈধ) দর্শন।
কর্ণদ্বয়ের ব্যাভিচার (অবৈধ যৌনকথা) শ্রবণ, জিভের ব্যাভিচার (সকাম অবৈধ) কথন, হাতের ব্যাভিচার (সকাম অবৈধ) স্পর্শ এবং পায়ের ব্যাভিচার (সকাম অবৈধ পথে) গমন। আর হৃদয় কামনা ও বাসনা করে এবং জননেন্দ্রিয় তা সত্য বা মিথ্যায় পরিণত করে। ”
তিনি শুরু করলেন চোখ দিয়ে কারণ এটা থেকেই হাত, পা, হৃদয় এবং লজ্জাস্থানের জিনা শুরু। জিভের জিনা উল্লেখ করে তিনি বোঝালেন যে মুখ তার কথার দ্বারা জিনা করতে পারে। আর লজ্জাস্থান জিনাকে বাস্তবে রূপ দেয় আথবা এই প্রলভনে আত্মসমর্পণ করা থেকে বিরত থাকে।
এই হাদিছটি পরিশকারভাবে ইংগিত করে যে চোখ পাপকাজ করতে পারে এবং এটাই তার জিনা। এটা তাদের কথাকে অস্বীকার করে যারা বলে সকল পরিস্থিতিতেই তাকানো অনুমোদনযোগ্য।
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রা) থেকে বর্ণিত, ফযল ইবনে আব্বাস (রা) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পিছনে সাওয়ারীর উপর উপবিষ্ট ছিল। এমন সময় খাস’আম গোত্রের এক মহিলা তাঁর কাছে ফতওয়া জিজ্ঞেস করার জন্য আসলেন। ফযল (রা) তার দিকে তাকাল এবং মহিলাও ফযলের দিকে তাকাতে লাগলেন ।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফযলের(রা) চেহারা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন।
সহীহ বুখারীর আরেক বর্ণনায় দেখা যাচ্ছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরবানির দিন ফযল ইবনে আব্বাস (রা) কে নিজের পিছনে সাওয়ারীর পিঠে বসালেন। ফযল (রা) ছিলেন একজন সুদর্শন পুরুষ। নবী লোকদেরকে মাসালা-মাসায়েল বলে দেয়ার জন্য থামলে খাস’আম গোত্রের সুন্দরী এক মহিলা তাঁর কাছে মাসালা জিজ্ঞেস করার জন্য আসলো। তখন ফযল সেই মহিলার দিকে বারবার তাকাতে থাকলো এবং তার সৌন্দর্য তাকে মোহিত করলো।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফযলের দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখলেন যে, সে বারবার মহিলার প্রতি দৃষ্টিপাত করছে। নবী নিজের হাত পেছনের দিকে নিয়ে ফযলের থুতনি ধরে মহিলার দিক থেকে তার মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন।
এই ঘটনা থেকে আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাজের দ্বারা প্রতিরোধ ও নিষেধাজ্ঞা দেখতে পাচ্ছি ,কারণ যদি তাকিয়ে থাকা অনুমোদনযোগ্য হত তাহলে তিনি ফযল(রা)এর এই কাজকে অনুমোদন করতেন।
জারির (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বললেন,আচমকা দৃষ্টি সম্পর্কে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, “তুমি তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নাও”।
-মুসলিম, তিরমিযি, আবু দাউদ, আহমাদ, দারেমী
ইমাম নববি এই হাদিছের বর্ণনায় বলেনঃ “এটা যখন তোমার দৃষ্টি অপ্রত্যাশিতভাবে, কোন রকম ইচ্ছা ছাড়া কোন আযনাবিয়াহ (যে মহিলা একজন পুরুষের জন্য মাহরাম নয়) এর দিকে পড়বে। এই প্রথম দর্শনে কোন গুনাহ নেই কিন্তু তাকে অবশ্যই অবিলম্বে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে হবে। যদি সে তা করে তবে তার কোন গুনাহ হবে না, কিন্তু সে যদি দৃষ্টিকে দীর্ঘায়িত করে তাহলে এই হাদিছের বর্ণনা অনুযায়ী সে গুনাহে পতিত হবে। ”
বুরাইদা ইবন আলহুসাইব থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলীকে বললেনঃ “আলী, দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দিয়ো না , কারণ প্রথমবার তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয়বার নয়। ”
-তিরমিযি, আবু দাউদ (আলবানীর মতে হাসান)
এই হাদিছ সম্পর্কে আল-মুবারকপুরি বলেছেনঃ “দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দিয়ো না- মানে প্রথম দৃষ্টির পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না।
প্রথমবার তোমাকে ক্ষমা করা হবে- মানে তোমাকে ক্ষমা করা হবে যদি প্রথম দৃষ্টি অনিচ্ছাকৃত হয় এবং কিন্তু দ্বিতীয়বার নয়- মানে যেহেতু দ্বিতীয় দৃষ্টি ইচ্ছাকৃত তাই সেটা তোমার বিরুদ্ধে গোণা হবে। ”
একটি তীর শিকারের উপর যে প্রভাব ফেলে, দৃষ্টি হৃদয়ের উপর তেমনি প্রভাব ফেলে। এটা তাকে হত্যা না করলেও আহত করবে। এটা যেন শুকনো ঘাসে আগুনের ফুলকি; সবটুকু পোড়াতে না পারলেও কিছুটা পোড়াবে। পূর্ববর্তী সৎকর্মশীলগণ অবৈধ দৃষ্টির ঝুঁকি সম্পর্কে ভালোভাবে সতর্ক ছিলেন।
তারা বলতেন, দৃষ্টি যেন শয়তানের বিষাক্ত তীরসমূহের মধ্য থেকে একটি তীর।
আজকের দিনে এই কথাগুলো কতই না সত্য যখন ইন্টারনেট, টি.ভি. (এমন কি সংবাদেও) আর পত্রিকায় বিপরীত লিঙ্গের ছবির প্রাচুর্যের কারণে অবৈধভাবে তাকানো বিশেষভাবে বিপদজনক হয়ে উঠেছে। অধিকন্তু,অনেক তরুণ মুসলিমরা পাশ্চাত্যে বেড়ে উঠছে এবং তাদেরকে লিঙ্গ নির্বিশেষে মানুষের সাথে কথা বলার সময় চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।
আর এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে পর্ণগ্রাফি এবং অন্যান্য অশ্লীল ছবির জোয়ার সারা পৃথিবীতেই এমনকি মুসলিম সমাজেও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা খুবই বেদনাদায়ক যে মুসলিমদেরও এখন ‘Boyfriends’ বা ‘Girlfriends’ থাকে।
আর তাদের যেভাবেই দেখা হোক না কেন অবৈধ সম্পর্কের শুরুটা হয় এমন দৃষ্টি বিনিময় থেকে যা অবৈধ। অবাধ মেলামেশার সমস্যাটির ব্যাপকতার কারণেই আমরা এই সংকলনে এই ব্যাধির পরিবর্তে ব্যাধির পিছনে প্রথম প্রত্যক্ষ কারণটিকে চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আলোচিত দলীল প্রমাণ থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, মাহরাম নয় এমন কোন মেয়ের দিকে ইচ্ছাকৃতভাবে তাকানো এবং প্রথমবার আকস্মিক ভাবে নজর পড়ে যাওয়ার পর তাকিয়ে থাকা হারাম, আর তার শরীরের কোন অঙ্গের দিকে তাকানোও নিষিদ্ধ (কিছু নিতান্তই প্রয়োজনের ক্ষেত্র ছাড়া) মেয়েটি সুন্দরী হোক বা না হোক, যৌনাকাঙ্খার উদ্রেক করুক বা না করুক,মনে কোন খারাপ চিন্তা আসুক বা না আসুক এবং সেই অবৈধ দৃষ্টি অনৈতিক কাজের পথে পরিচালিত করুক আর নাই করুক। এক্ষেত্রে কোন মহিলাকে বাস্তবে দেখা আথবা টিভি, পত্রিকায় তার ছবি দেখা একইরকম।
এবার আমাদের পক্ষ থেকে মুসলিম ভাইদের কিছু টিপস দিচ্ছি , আশা রাখি তা দৃষ্টি নত রাখতে সাহায্য করবে ইনশা আল্লাহঃ
-যে সকল জায়গায় গেলে বিপরীত লিঙ্গের দিকে তাকানোর আশঙ্কা রয়েছে এমন জায়গা এড়িয়ে চলা।
প্রয়োজন ব্যতীত বাজার অথবা শপিং মল এবং রাস্তার পাশে বসে থাকা এড়িয়ে চলা (বিশেষ করে পাশ্চাত্যের দেশ গুলোতে)।
আবু সাইদ খুদরী(রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা রাস্তায় বসা ছেড়ে দাও”। সাহাবিগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! রাস্তায় বসা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। আমরা সেখানে প্রয়োজনীয় আলাপ আলোচনা করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “যদি তোমরা বসতেই চাও, তাহলে রাস্তার হক আদায় কর”।
সাহাবিগণ আরজ করলেন, রাস্তার হক কি? তিনি বললেনঃ “দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট না দেয়া, সালামের জবাব দেয়া,ভাল কাজের আদেশ করা এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখা। ”
-বূখারী, মুসলিম, আবু দাউদ
উপলব্ধি করুন, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আবেগ, আকাঙ্খা, প্রলোভন অথবা খারাপ কাজ করার বাসনা যেমনই হোক না কেন এই বিষয়ে আর কোন বিকল্প নেই, আমাদের অবশ্যই সব সময় এবং সব জায়গায় দৃষ্টি সংযত করতে হবে এবং হারাম জিনিসের দিকে তাকানো থেকে বিরত থাকতে হবে। কেউ এমন অজুহাত দেখাতে পারবেনা যে ‘পরিবেশ খারাপ হয়ে গেছে’ অথবা ‘আশেপাশে প্রলোভন অনেক বেশি’। আল্লাহ বলেন,
“আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন বিষয়ে আদেশ দিলে, কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু’মিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন কোন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।
”
-সূরাহ আহযাবঃ ৩৬
- দৃষ্টিকে উদ্দেশ্যহীনভাবে না ঘোরান। এটা হারাম জিনিসের উপর নজর পড়া থেকে চোখকে রক্ষা করবে (এমনকি দুর্ঘটনাবশতও)।
- বাসাতে টিভি এড়িয়ে চলা যদি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব না হয়।
টেলিভিশন হচ্ছে আমাদের ঘরে ঘরে অশ্লীলতা, নগ্নতা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি উপকরণ মাত্র। আমাদের এবং আমাদের পরিবারকে এর ক্ষতি থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমাদের এটা পরিত্যাগ করা উচিত, বিশেষভাবে অবৈধ দৃষ্টি থেকে দূরে থাকার ক্ষেত্রে।
আর এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে একজন মুসলিমের সবসময়ই উচিত তার সময়কে বিচক্ষণ ভাবে ব্যয় করা যেহেতু আল্লাহ্র রাসূল(সঃ) বলেছেন:
“যা কিছু একজন মানুষকে আনন্দিত করে তার সবই বৃথা তিনটি ব্যতিতঃ তার অশ্বকে প্রশিক্ষণ দেয়া, তার স্ত্রী সঙ্গে খেলা এবং তার তীর নিক্ষেপ করা। ”
-আবু দাউদ
তিনি আরও বলেনঃ
“কিয়ামতের দিন বান্দার পা দু’খানি সরবে না। (অর্থাৎ আল্লাহর দরবার থেকে তাকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। ) যতক্ষণ না তাকে প্রশ্ন করা হবে তার আয়ু সম্পর্কে, সে তা কিসে ক্ষয় করেছে...”
-তিরমিযি (হাসান সূত্রে)
“দুটো নিয়ামত রয়েছে যা অনেক মানুষ হারিয়ে ফেলেঃ সুস্থতা এবং অবসর সময়। ”
-সহীহ বূখারী
- সম্ভব হলে বিয়ে করে ফেলা।
এটি সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর মধ্যে একটি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “হে যুব সমাজ, তোমাদের মধ্যে যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য আছে তারা যেন বিয়ে করে কারণ তা চোখকে সর্বাপেক্ষা বেশি আনতকারী এবং লজ্জাস্থানের অধিক হেফাজতকারী। আর যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই তাদের কর্তব্য রোজা রাখা। কারণ এটিই তার যৌন প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে রাখার হাতিয়ার। ”
-সহীহ বূখারী ও মুসলিম
–রোযা রাখা।
কারণ উপরোক্ত হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে কথাই বলেছেন। যদিও তিনি তরুণদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে তবে তরুণীদের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য।
–ন্যায়পরায়ণ মুসলিমদের সঙ্গে থাকা। একজন মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই যাদের সাথে মেলামেশা করে তাদের চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়। এবং এটা তো সর্বজনবিদিত যে একজন মানুষ তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পথই অনুসরণ করে।
এবং এই কথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদিছেও এসেছেঃ “একজন মানুষ তার বন্ধুর দ্বীনকে অনুসরণ করে। অতএব তোমাদের প্রত্যেককে দেখা উচিৎ যে, সে কার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে। ”
-আবু দাউদ, তিরমিযি (বিশুদ্ধ সূত্রে)
- অপ্রয়োজনীয় পত্রিকা (যেমন ফ্যাশান ম্যাগাজিন) পড়া বা দেখা থকে বিরত থাকা। এই পত্রিকা গুলোতে কোন উপকারী কিছু তো থাকেইনা বরং এতে থাকা স্বল্প বসনাদের ছবি আমাদের হৃদয়ে শুধু কলুষতাই প্রবেশ করাতে পারে। তাই এইসব পত্রিকা এড়িয়ে চলাই ভাল।
- আল্লাহ্র স্মরণে থাকা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিভিন্ন সহীহ দুআ শেখা এবং দিনের বিভিন্ন সময়ে সেগুলো পাঠ করার অভ্যাস করার মাধ্যমে তা করা যায়। ইনশা আল্লাহ, এটা আমাদের হৃদয় কে পরিচ্ছন্ন রাখবে, আমাদের ঈমান বৃদ্ধি করবে এবং আমাদের অবৈধ ভাবে তাকিয়ে থাকার প্রবণতা কমিয়ে আনবে।
হে আল্লাহ, এই সংকলনে কোন ভুলত্রুটি হলে আমাদের ক্ষমা কর।
হে আল্লাহ, তোমার কাছে আশ্রয় চাই আপারগতা, অলসতা, কাপুরুষতা, আসহায়তা, সেই জ্ঞান যা উপকারে আসে না, সেই হৃদয় যা তোমাকে ভয় পায় না, সেই আত্মা যা তুষ্ট নয়, সেই দুআ যা গ্রহিত হয় না এইসব থেকে।
হে আল্লাহ, আমাদের তাদের অন্তর্ভুক্ত করে দাও যারা তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ, মনযোগী, তোমার আনুগত্যে নিষ্ঠাবান, প্রতিনিয়ত তোমার কাছে তাওবাকারী।
হে আল্লাহ, আমাদের রক্ষা কর কবর এবং জাহান্নামের আযাব থেকে আর আমাদের ধন্য কর জান্নাত দিয়ে।
islamQA এবং Fatwah Concerning Looking অবলম্বনে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।