কী আর কমু, হেহ্...!! ছোট সোনামনিদের ”বায়োডাইভার্সিটি ও জেনেটিক্স”
অনেকেই মনে করেন বিবর্তনবাদ ও ধর্ম একসাথে যায় না। আমি পুরো ধর্মে বিশ্বাসী হলেও বিবর্তনবাদের তত্ত্ব ফেলে দিতে পারিনা। যারা, বিবর্তনবাদ নিয়ে অল্পবিস্তর হলেও ঘেটেছেন, বুঝতে পারবেন যে, বিজ্ঞানীরা নিরলস পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে তত্ত্বগুলো দাড় করিয়েছেন। আর দশটা বাস্তবে দৃষ্ট বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষনের মতই, প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নেওয়া সিদ্ধান্ত এই
বিবর্তনবাদ। অলস মস্তিষ্কের উদ্ভট চিন্তার ফসল তো নয় ই।
এখানে বিবর্তন নিয়ে কথা বলা মোটামুটি অপ্রাসঙ্গিক। একটু নির্যাস নিতে হবে তাই টানলাম।
পৃথিবীতে জীবনের অগ্রযাত্রার পরিক্রমায় প্রতিটি প্রজাতিকেই আন্তঃ ও অন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে হয়। একটি প্রজাতি অন্য একটিকে খাদ্য হিসেবে গ্রহন করে। স্বাভাবিক নিয়ম এটা হলেও প্রাণ থাকতে কেউ অন্যের খাদ্য হতে চায় না।
তারা টিকে থাকার জন্য যা করা সম্ভব তা ই করে। প্রকৃতির সাধারন নিয়মে সন্তানের জন্ম দিয়ে তারা প্রধান কাজটি করে ফেলে। অর্থাৎ, খাও দাও, কূল বাঁচাও।
বংশগতির এই ধারায়, পৃথিবীর জীব-প্রজাতি সমূহ কিছু অনন্য বৈশিষ্ট লাভ করেছে। আত্নরক্ষার প্রয়োজনে কেউ সরঞ্জাম পেয়েছে, কেউ সুগঠিত দেহ পেয়েছে, কেউ পেয়েছে কৌশল।
শুধু তাই নয়, বিরূপ পরিবেশে অভিযোজনের জন্যও একই প্রজাতি, ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন বৈশিষ্টপ্রাপ্ত হয়েছে।
এই প্রাপ্তি সমুহ কারোর দয়ার দান নয়, বরং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যথেষ্ট প্রচেষ্টার বিনিময়ে অর্জিত। তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যায়, আত্নরক্ষার উপাদানগুলো ঈশ্বরই দিয়েছেন, চাহিদা ও শ্রমের বিনিময়স্বরূপ।
এবার মূল বিষয়ে চলে আসি। .....................
আমরা, মানুষেরা, শত্রু পক্ষকে ধোকা বা ফাকি দেওয়ার জন্য ছদ্মবেশ নিয়ে থাকি।
এটি যুদ্ধের একটি পুরোনো কৌশল। আমাদের পাশাপাশি অন্যান্য প্রাণি, উদ্ভিদ ও অনুজীব সমূহের মাঝেও এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। যেমন ক্যামেলিয়ন রং পরিবর্তনের মাধ্যমে আশেপাশের জড়বস্তুর মাঝে নিজেকে শিকারীর হাত থেকে আড়াল করে। এক ধরনের অক্টোপাসও একই কৌশল অবলম্বন করে।
প্রজাপতির মধ্যে এই বিষয়টি বিশেষ ভাবে অনন্য।
ওদের উপর সাম্প্রতিক একটি গবেষনার ফল দেখে আসি। বলা হচ্ছে Heliconius numata এর কথা যারা গডি ব্রাউন ব্রাজিলিয়ান বাটারফ্লাই নামে পরিচিত। এ প্রজাতির সদস্যরা Melinaea গণের বিভিন্ন প্রজাতির অনুরূপ বেশ ধারন করে, ডানার রং পরিবর্তনের মাধ্যমে। (উল্লেখ্য যে এরা সবাই বিষাক্ত, তবে গবষরহধবধ র শরীরে টক্সিন এর পরিমান অনেক বেশি। ) সাধারন অবজারবেশনে তখন Heliconius numata দের কে Melinaea এর সদস্য ভেবে ভূল করা হয়।
গবেষনায় দেখা গেল, হেলিকোনিয়াসের ডানার রং নিয়ন্ত্রন করে আটারোটি জিনের একটি গুচ্ছ, যা সুপারজিন নামে পরিচিত। সুপারজিনটি সিঙ্গেল ইউনিট হিসেবে জনুক্রমে বাহিত হয়। পিতা-মাতার জিনের প্রকটতা অনুসারে সন্তানের ডানার বর্ণবিন্যাস নির্দিষ্ট হয়। সুপার জিনটিতে তিন ধরনের DNA sequence থাকে। একটি অর্ডিনারী, অপরদুটি ভিন্ন এই অর্থে যে জিনের নির্দিষ্ট কয়েকটি অংশে DNA sequence রিভার্স অর্ডারে থাকে।
এ কারনে সুপারজিন সাধারন বংশগতি থেকে বিচ্যুত হয়।
উপরের ছবিটিতে ডানদিকের কলামে প্রজাপতি গুলো Melinaea গণের বিভিন্ন প্রজাতি। বামপাশে রয়েছে Heliconius numata প্রজাতির বিভিন্ন মিমিক(ছদ্মবেশী),, যেগুলো ডানের একেকটি প্রজাতির অনুরূপ বর্ণবিশিষ্ট।
আমাদের প্রশ্ন কেন এই ছদ্মবেশ? উত্তর নেই। ........
তবে হাইপোথিসিস আছে।
দুটো কারন থাকতে পারে। একটি হল পৃডেটর বার্ড দের হেলিকোনিয়াসরা বুঝাতে চায়Ñ ”আই এম নট এ ডেলিসিয়াস ফুড ফর ইউ”, তাদের দুর্বলতা সবলের চাদর দিয়ে ঢেকে দেয়।
আরেকটি কারন হতে পারে, যেটা একটু সফিস্টিকেটেড। হেলিকোনিয়াস প্রজাতিটি যেহেতু বিভিন্ন প্রজন্মে বিভিন্ন রূপ ধারন করতে পারে, তারা মেলিনিয়াদেরকে সংখায় (আপাত) বাড়িয়ে কোন কম্বাইন্ড মেসেজ তৈরি করতে পারে। এতে ইন্টার-স্পেসিফিক কমিউনিকেশনের একটা ব্যাপার চলে আসে।
সেক্ষেত্রে ওদের কর্মপদ্ধতি আমাদেও চে’ সুপিরিয়র মেনে নিতে হবে। পাঠক, আপনি কি রাজি হবেন, এহেন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে? পারবেন না। কারন ধর্ম শিখিয়েছে, আমরা সৃষ্টির সেরা জীব।
বাকী অংশটুকু ধনী সম্প্রদায়ের জন্য............................................।
ধনী সম্প্রদায়, যারা পৃথিবীটাকে স্বর্গের মত উপভোগ করেন,
যারা, মর্ত্যরে পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ করতে চান।
চলুন দেখে আসি অমরত্বের কৌশল।
সব ঠিকঠাক থাকলে যে কারনে কোন জীবের মৃত্যু হয় সেটি হচ্ছে কোষ বিভাজন বন্ধ হয়ে যাওয়া। যারা বিজ্ঞান মোটামুটি পড়েছেন তারা জানেন যে, জীবকোষের প্রধান উপাদান নিউক্লাসের ক্রোমোসোম। এই ক্রোমোসোমের একটি অংশ হল টেলোমিয়ার। এই যে দেখছেন নিচে.....
একটি কোষ যত বিভাজিত হয়.... টেলোমিয়ার ততই ক্রোমোসোমের প্রান্তের দিকে সরে আসে।
যখন টেলোমিয়ার একেবারে শেষ প্রান্তে সরে আসে তখন কোষ বিভাজন বন্ধ হয়ে যায়।
টেলোমিয়ারেজ নামের একটি এনজাইম টেলোমিয়ারের অবস্থান সরিয়ে এনে কোষ বিভাজন চালু রাখতে পারে।
তাহলে তো টেলোমিয়ারেজ নিলেই হয়ে গেল সারা। কিন্তু না,
টেলোমিয়ারেজ গ্রহন করলে ক্যান্সার হবে নিশ্চিত। দেখি সায়েন্স কোন সুরাহা দিতে পারে কিনা।
অপবিজ্ঞান, যাকে বাচ্চারা সায়েন্স ফিকশন নামে চালিয়ে দেয় (আর মা বাবারা ভাবে- আমার সন্তান বিজ্ঞান পড়ে জ্ঞানী হচ্ছে !!), পেরেছে সমাধান দিতে। বিশুদ্ধ বিজ্ঞান এখনো পারেনি।
তবু বস্তুবাদীরা আশায় আছে, অমরত্ব লাভের পদ্ধতি আবিষ্কার করে, ঈশ্বরের ধারনা নিশ্চিহ্ন করতে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।