তবু হাতড়ে খুজে ফিরি আলো বারবার সে আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছে ফেসবুকে। সেগুলো আমি দেখি মাসখানেক পর পর, ফেসবুকের সাথে আমার সম্পর্কই এতটা হালকা। কিন্তু তাকে এক্সসেপ্ট করছি না। না করার পেছনে কাজ করছে ভয়। আর এদিকে সে আমাকে মেসেজের পর, মেসেজ পাঠাচ্ছে।
আমি জানি, আমার ফ্রেন্ড হলে সে কি করবে। অসংখ্য প্রশ্নের সামনে পড়তে হবে আমাকে। তপু ভাইয়া, এই মেয়েটার সাথে আপনার কি?
বাহ, এত ক্লোজ হল কবে থেকে আপনার সাথে?
একসাথে ঘুরতে গিয়েছিলেন?
আর সাথে তার বিখ্যাত মিচকি হাসি তো ফ্রি।
ইতিহাস বড় করুন, আমার জন্য কিংবা তার জন্য। আমি যখন জাস্ট কলেজে ভর্তি হয়েছি, তখন সে আমাকে প্রেম পত্র পাঠালো।
তাও আমার ছোট বোনকে দিয়ে। হিন্দি একটা গান বাংলায় লেখা ছিল তাতে।
দূঃখের বিষয় হলেও সত্য আমি তখন হিন্দিতে একেবারে বকলম। হিন্দি মুভি দেখতে বসলে, ছোটবোনের কাছ থেকে তার ট্রান্সলেশন করে নিতে হয়।
আমি কাগজটা পড়লাম।
গম্ভীর মুখে বললাম, তিয়া এইসব কি?
তিয়া বলল, তুই বুঝিস না? এইটা বৃষ্টি আপু দিছে।
মানে কি?
মানে তুমি বুঝবা। পড় ভালো করে।
আমি বুঝিনা।
বৃষ্টি আপু তোমারে পছন্দ করে।
আমার মাথায় বজ্রাঘাত। এই মেয়ে! আমার কাজিন! কইদিন আগে উপদেশ দিলাম ক্লাস নাইনে উঠার সময়, সায়েন্স নেওয়ার জন্য। বলে কি? পিচ্চির মাথায় কি ভুত চাপলো নাকি?
আমি গম্ভীর মুখে বললাম, তিয়া ওরে গিয়া বল, গাধা পৃথিবীতে একটা দুইটা না। অনেক। ও একটা গাধা।
তিয়া তাকে কি বলেছিল আমার মনে নাই।
ইতিহাসের দুই নম্বর পাতায় হল তার ভার্সিটিতে ভর্তি হতে আসার কাহিনী। আমার ভার্সিটি তে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসছে। মনে মনে দোয়া করছি চান্স যাতে না পায়। পরীক্ষার আগের দিন বলল, আমি অরিন আপুর সাথে দেখা করব।
আমি আকাশ থেকে মাটিতে পড়ার হওয়ার ভান করে বললাম, অরিন আপুটা কে?
ঐ যে আপনাকে প্রায়ই কল দেয়, এসএমএস পাঠায়।
আরে ধুর।
না আমি দেখা করবই। কোন হলে কত নাম্বার রুমে থাকে বলেন।
চাপাচাপির ঠেলায় বলতে হল।
এটাও বলে দিলাম, বেশী ফাজলামো করবা না। তার সাথে আমার সম্পর্ক ফর্মাল।
আচ্ছা।
সে হাসি হাসি মুখে অরিনের সাথে দেখা করতে গেল। আর আমি আল্লার কাছে প্রার্থনা করতে লাগলাম।
আল্লাহ মাঝে মাঝে পাপীদের প্রার্থনাও রাখেন। বৃষ্টি চান্স পেলো না। তবে অরিনও হারিয়ে গেল। কাছে থেকেও দূরে। অবশ্য অরিন আমার জীবনে বন্ধু ছাড়া আর কিছু ছিল কি না, সেইটা নিয়ে দ্বিমত থাকতেই পারে।
যাই হোক, বৃষ্টি ভর্তি হল প্রাইভেট ভার্সিটিতে। তার সাথে প্রায়ই পারিবারিক অকেশানে দেখা সাক্ষাত হচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, আমার কেন প্রেম হচ্ছে না এইটা নিয়া তার ব্যাপক কৌতুহল।
বুঝলেন তপু ভাইয়া, প্রেম করতে হলে আপনাকে কয়েকটা টিপস নিতে হবে আমার কাছ থেকে।
কি রকম?
প্রথম কথা হচ্ছে মেয়েদের সাথে ফ্লার্টিং করতে হবে।
মেয়েরা বিষয়গুলো যদিও ধরে ফেলে তারপর তারা এইগুলো পছন্দ করে।
আমি হা করে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষন। বুঝতে পারলাম পিচ্চি আর পিচ্চি নাই। পুরাই পাকনা হয়ে গেছে। এর কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে।
এর পর শুরু করল আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো। আমি উকি মেরে দেখি তার ফ্রেন্ড লিস্টে একগাদা ভার্সিটির ছেলেপেলে। থাক বাবা দরকার নাই।
পুরাতন প্রবাদটা মনে পড়ে, তিনটা ডাব্লিউ (W) কে কখনো বিশ্বাস করতে নাই, wine, weather, আর woman.
কাজেই এক্সসেপ্ট না করাই ভালো, কখন কি কাহিনী ঘটায় কে জানে!
(বৃষ্টির দিনে লিখতে ভালোই লাগে, কিন্তু নেট স্পিডের অবস্থা এত খারাপ যে বলার না। সামুতে ঢুকতেই খবর হয়ে গেল)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।