তরুণের দেহে প্রাণ নেই। কিন্তু পুত্রশোকে মুষড়ে পড়া বাবার অনুভূতিতে এই বোধ কাজ করছে না। তিনি তখন ভাবছেন, আহা, ফাঁসিতে ঝুলে ছেলেটি কত কষ্ট পাচ্ছে! এই কষ্ট থেকে রেহাই দিতে ছেলের পা দুটি নিজের কাঁধে ঠেকান তিনি। অপেক্ষা করতে থাকেন কখন পুলিশ এসে উদ্ধার করবে লাশ।
গতকাল মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ শহরের মিয়াপাড়া পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে পুকুরপাড়ে গিয়ে এই দৃশ্যের অবতারণা হয়।
সেখানে গিয়ে একটি বেলগাছের ডালে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখা যায় পলাশ সাহা (২২) নামের তরুণকে। কাঁধে তাঁর পা ঠেকিয়ে নির্বাক দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর বাবা ব্যবসায়ী নির্মল সাহা। স্তব্ধ হয়ে এই দৃশ্য দেখছিল অনেক মানুষ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গতকাল ভোর রাতে ওই গাছের ডালে দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন পলাশ। পুলিশের ধারণাও একই।
নির্মল সাহার গ্রামের বাড়ি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাচুড়ি পুরুলিয়া গ্রামে। গোপালগঞ্জ শহরের সাহাপাড়ার ভাড়া বাড়িতে থেকে তিনি মাছের ব্যবসা করছেন। দুই মেয়ের পর তাঁর এই একমাত্র ছেলে ছিল পলাশ। এ জন্য তিনি ছিলেন ছেলেঅন্তপ্রাণ।
ছেলেকে নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা এভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন নির্মল সাহা।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় অনেকে ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন, ‘পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ যে কত ভারী, তা অনুভব করেছেন পলাশ সাহার বাবা। ’
নির্মল সাহার ভাষ্যমতে, ছেলে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন নির্মল সাহা। তবে এ ব্যাপারে তিনি সুনির্দিষ্ট কারণ বলতে পারেননি। তিনি জানান, চার বছর আগে এসএসসি পাস করে পলাশ।
এর পর আর্থিক কারণে পড়াশোনায় ছেদ পড়ে। সম্প্রতি একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয় সে।
নির্মল সাহা বলেন, পলাশের গলায় ফাঁস লাগানো নাইলনের যে মোটা দড়ি ছিল, এটি সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর ছেলেই কিনেছিল। এ জন্য খাবার কেনার কথা বলে মায়ের কাছ থেকে টাকা নেয় পলাশ। রাতে অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই ঘুমাতে যায় সে।
ভোরে স্থানীয় লোকজন পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ওই গাছে পলাশকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে তাদের খবর দেয়।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহানউদ্দিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যার হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা হয়েছে।
source: View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।