আমি তোমারো বিরহে রহিব বিলীন তোমাতে করিব বাস, দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী দীর্ঘ বরস মাস গ্রাম্য সালিশে সমাজ্যচ্যুত হওয়ার সিদ্ধান্তের পরই হবিগঞ্জের ফেরদৌসী বেগম সন্তানসহ ট্রেনে ঝাঁপ দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
সোমবার সকালে চার সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন মাধবপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী জিলন মিয়ার স্ত্রী ফেরদৌসী। এতে তিনি, মেয়ে বন্যা (৮), জীবন (১২) মারা যান। আহত হয়েছে দুই মেয়ে শাওন (১০) ও ঝর্ণা (৪)।
রংপুরের বদরগঞ্জে সালিশের মাধ্যমে গৃহবধূ নির্যাতনে জড়িত থাকার ঘটনায় গত ৩১ জুলাই হাইকোর্ট বলেছে, এ ধরনের সালিশ-ব্যবসা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
গ্রাম্য সালিশ বন্ধ করতে ব্যর্থ হলে পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাইকোর্টের আদেশের ১৫ দিনের মাথায় হবিগঞ্জের এ ঘটনা ঘটলো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সেজামুরা গ্রামের ফজলুর রহমানের মেয়ে ফেরদৌসীর সঙ্গে ১৪ বছর আগে মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে জিলন মিয়ার বিয়ে হয়।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন বছর আগে জিলন দুবাই যাওয়ার পর থেকে তার চাচাতো ভাই আব্দুল ছাত্তারের ছেলে কাদির ওই পরিবারের বাজারঘাট করে দিচ্ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী বলেন, "কাদির এ জন্য প্রায়ই ফেরদৌসীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো।
এ নিয়ে গ্রামের কয়েকজন মাতাব্বর অপবাদ দেয়, কাদিরের সঙ্গে ফেরদৌসীর পরকীয়া চলছিলো। "
২৫ দিন আগে ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানের উপস্থিতিতে সুলতানপুরে এক সালিশ বৈঠকে ফেরদৌসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। কিন্তু কোনো প্রমাণ হাজির করতে না পরায় বিষয়টি চাপা পড়ে।
"ওই বৈঠকে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। "
কিন্তু একই বিষয়ে রোববার আবার সালিশ বসে সুলতানপুর গ্রামে।
গ্রামবাসী বলছে, বৈঠকে ফেরদৌসীকে একতরফাভাবে দোষী সাব্যস্ত করে সমাজচ্যুত করে গ্রাম থেকে চলে যাওয়ার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে ফেরদৌসী ৪ সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে।
দ্বিতীয় বৈঠকে ছিলেন না চেয়ারম্যান আতিকুর। তিনি বলেন, "গ্রাম্য মাতব্বররা সালিশ করে ফেরদৌসীকে সমাজচ্যুত করেছে বলে জিলনের ভাই করিম আমাকে টেলিফোন করে জানায়। তবে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
"
গ্রামের সালিশের উদ্যোক্তা হিসেবে মলাই মিয়া, মোহব্বত খা, আব্দুর রহিম, ফুরুক মিয়া, আব্দুর রহমান, মাহমুদ আলী, আবু তাহেরসহ কয়েক জনের নাম স্থানীয়দের কথায় উঠে এসেছে। তবে তাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
রেললাইনের পাশে লাশ থাকায় থানা পুলিশ এ লাশগুলো উদ্ধার করেনি। পরে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ এসে লাশ তিনটি ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।