আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি"--শাহাদাত দিবসকে স্মরণ

ভাই এইটা আমার কথা নয়। কথাটি বলেছেন কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো। পুকুরের জলকে চাইলে খাল ধারণ করতে পারে। খালের জলকে নদী, নদীর জলকে সাগর আবার সাগরের জলকে মহাসাগর। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে_মহাসাগরের জলকে ধারণ করবে কে? ধারণ করার মতো আধারই বা কী! মহাসাগরের মতো বিস্তৃতি অর্থাৎ পৃথিবীর নিপীড়িত মানুষের বিপ্লবী কণ্ঠস্বর কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো যাঁকে দেখে বলেছিলেন," আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি" অথচ আজ এই স্বাধীন বাংলায় কত আজেবাজে আলোচনা,কত ব্লগ।

অথচ এই বাংলার মানুষের সাথে ছিল কত আপন সম্পর্ক। কবির ভাষায়: 'মুজিব মানে আর কিছু না মুজিব মানে মুক্তি/পিতার সাথে সন্তানের না লেখা প্রেম চুক্তি'। আজ আমরা সেই সন্তানদের প্রতিদান দেখছি। মনে হয় পাকিস্থান থেকে স্বাধীনতা লাভ ছিল সবথেকে ভুল বিষয়। এইতো কিছুদিন আগে বিবিসি-র এক জরিপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি রূপে।

আমরা তখন রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখের কথা ভুলে যাইনি। ১৯৭১-এর ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে মেজর জিয়ার কন্ঠেও বাংলাদেশের স্বাধীনতার একটি ঘোষণা প্রচারিত হয়। ইংরেজিতে সে ঘোষণাটি ছিল নিম্নরূপ: “On behalf of our great national leader, the supreme commander of Bangladesh, Sheikh Mujibur Rahman, I hereby proclaim the independence of Bangladesh. The government headed by Sheikh Mujibur Rahman has already been formed. It is further proclaimed that Sheikh Mujibur Rahman is the sole leader of the elected representatives of 7.5 million people of Bangladesh and the government people of the independent sovereign state of Bangladesh which is legally and constitutionally formed and worthy of being recognized by all the governments of the world. May Allah help us. Joi Bangla.” আমরা জানি যে-কোন একক ব্যক্তি তার একার চেষ্টার পরাধীনতা বা ঔপনিবেশিকতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে একটা নতুন রাষ্ট্রের জন্ম দেন না। বহু সময় জুড়ে সেই সংগ্রাম চলে, বহু মানুষ সেই সংগ্রামে অংশ নেয়, বহু লোক তাতে আত্মাহুতি দেয়। তবু একথাও আমরা জানি যে, যে ইতিহাসের কোনো কোনো পর্বে কোথাও কোথাও একক ব্যক্তি এত বড় ভূমিকা পালন করেন, তাঁর অবদান এত কেন্দ্রীয় ও চূড়ান্ত হয়ে ওঠে এবং তাঁর কর্মকান্ড এত ফলপ্রসূ হয় যে মানুষ স্বত:প্রণোদিত হযে তাঁর মাথায় জাতির পিতার শিরোপা পরিয়ে দেয়।

বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্রষ্টা হবার কৃতিত্বের পাশে অন্য যে-কোন মহৎ মানুষের মহান কীর্তি ম্লান হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু একাজটিই করেছেন এবং এর মধ্য দিয়েই তিনি হয়ে উঠেছেন জাতির জনক, গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। যে মানুষটি এদেশের মানুষকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করত সেই মানুষটিকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে। রেহায় পায়নি শিশু রাসেল সহ বাড়ীর মহিলারাও। জগতে এমন নজির কি আছে যে, শিশু আর নারী হত্যার পর কেউ সদর্পে ঘোষণা করে?আমরা বাঙালীরা তাও করে দেখেয়েছি।

দেশ শাসনে কিছু ভুল হতেই পারে,তাই বলে শিশু আর নারীরাও হত্যা হবে। ধিক সেই কাপুরুষদের। মুজিব হত্যার বিচার চলছে,কয়েক নরপশুর ফাসি হয়েছে। আর বাকিরাও আশা করি ফাসির দড়িতে ঝুলবে। জাতির পিতার সাথে সাথে নারী আর শিশু হত্যার যে কালিমা আমাদের কপালে রয়েছে তা থেকে আমরা মুক্তি পাব।

যাইহোক যারা যা বলুক তাতে হিমালয় সমান মানুষটির কিছুই যায় আসেনা। প্রতিদিন কত ধূলাবালি হিমালয় ছুয়ে যায়,তাতে কি হিমালয়ের বিশালতা নষ্ট হয়। ? আজ জাতির জনকের শাহাদাতবার্ষিকিতে তার আত্নার শান্তি কামনা করছি আর নতুন প্রজন্মের একজন হিসাবে এটুকু বলতে পারি: অন্নদাশঙ্কর রায়ের ভাষায়: যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরী যমুনা বহমান ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান। ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।