আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরিপূর্ণ জীবনবিধান ইসলাম ।

ভাবতে ভালো লাগে আজকাল ইসলাম কয়েকটি ধর্মীয় আচার সর্বস্ব ব্যাপার হয়ে পড়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, রমযানের রজা রাখা,হজ্জ করা,লম্বা জামা ও টুপী পরা এবং জুম্মাবারে নামাজ ইত্যাদিকেই কেবলমাত্র ইসলামিক বিধি বিধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমাদের প্রাত্যহিক কাজকর্মের সাথে ইসলামের খুব একটা সম্পর্ক নেই। আমদের জীবনের লক্ষ ও উদ্দেশ্য, পছন্দ অপছন্দ ইসলামের পুরো বিপরীত। টাকা,ফুরতি এবং স্থুল কামনা বাসনা পূরণ করাই এখন বেশিরভাগের জীবনের প্রধান লক্ষ ও উদ্দেশ্য।

ইসলাম প্রচলিত অন্যান্য ধর্মের মত নয়। এটা মানবজাতির জন্য ব্যাবহারিক ও সামগ্রিক জীবন বিধান। আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন ও জীবন যাপনের নিয়ম কানুন তিনিই প্রদান করেছেন। আল্লাহ্‌ তায়ালা সূরা মায়িদার ৩নং আয়াতে বলেন- “আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম,তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবনবিধান হিসেবে মনোনীত করলাম। ” ইসলাম জীবন যাপন উপযোগী ব্যাপক সমাধান ও আইন প্রণয়ন করেছে।

আপনার ব্যক্তি জীবনে কি করবেন,কিভাবে চলবেন,কি কাপড় পরবেন,কার সাথে কিভাবে কথা বলবেন, এমনকি ভাত কিভাবে খাবেন তা পর্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ইসলামে দেয়া আছে। আল্লাহ্‌ তার সাথে আমাদের সম্পর্কের পদ্ধতি প্রদান করেছেন, জেমন-নামাজ, রোযা, হজ্জ ইত্যাদি, আবার ব্যক্তির নিজের সাথে নিজের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও পদ্ধতি প্রদান করেছেন, যেমন-মানুষ যা খায় বা পরে সে সম্পর্কীয় বিধান। এছাড়াও আল্লাহ্‌ সমাজে মানুষ অন্য মানুষের সাথে কিভাবে সম্পর্ক স্থাপন করবে তা নিয়ন্ত্রন করার জন্যও বিধান প্রনয়ন করেছেন; যেমন-কিভাবে শাসন ও বিচারকাজ চলবে, কিভাবে ব্যবসা করবে এমনকি কিভাবে বিপরিত লিঙ্গের সাথে আচরণ করতে হবে। সূরা আন-নহল এ আল্লাহ্‌ বলেন- “এবং আমি আপনার নিকট এমন এক কিতাব নাযিল করেছি যাতে সকল বিষয় সবিস্তরে বর্ণনা আছে। “ সুতরাং যদি কেউ কুরানের বাইরে থেকে সমাধান নেয় তাহলে সে কুফর থেকে সমাধান নিচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে সূরা বাকারার ৮৫ নং আয়াতে আছে “তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশ প্রত্যাখ্যান কর? অতএব তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের একমাত্র প্রতিফল পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা আর কিয়ামতের দিন এরা কঠিন শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে। ” আমাদের মধ্যে অনেকে মনে করে আমি তো আল্লাহ্‌কে বিশ্বাস করি মনেপ্রাণে আর মৃত্যুর আগে আল্লাহ্‌র কাছে মাফ চেয়ে নিলেই হয়। এ প্রসঙ্গে সূরা আনকাবুত এর ২নং আয়াতে আছে- “মানুষ কি মনে করে, তারা একথা বললেই পার পেয়ে যাবে যে আমরা বিশ্বাস করি আর তাদেরকে পরীক্ষা করা হবেনা?” এর পরের আয়াতেই আল্লাহ্‌ এর সমাধান দিয়েছেন, “আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি যারা তাদের পূর্বে ছিল। এবং আল্লাহ্‌ অবশ্যই জেনে নিবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নিবেন মিত্থ্যুকদেরক” যেহেতু আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে হতে আল্লাহ্‌র মনোনীত দ্বীন ইসলামকে পরিত্যাগ করেছি, সেহেতু আমাদের জীবনে ধ্বংস, বিশৃঙ্খলা ও হতাশা ভয়ঙ্কর রুপে দেখা দিয়েছে। মানুষের উদ্ভাবিত আইনকানুন ও ধারণা আমাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে বার বার ব্যর্থ হয়েছে।

আমরা যতই পশ্চিমা চিন্তাধারনা, জীবনযাপন পদ্ধতি গ্রহন করছি ততই আমরা ধর্ষণ, ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছি। আজ খুব কম পিতামাতাই তার সন্তানকে ঘরের বাইরে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। আমাদের নিজেদেরকে প্রশ্ন করা উচিত আমরা কি পারব আমাদের বোন ,মা কে পরপুরুষের সাথে দেখতে?আমরা কি পারব তাদের ধর্ষণ, ইভটিজিংয়ের শিকার হতে?যেই পশ্চিমা পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে অনুকরণ করছি, সেটা কিন্তু আমাদের এটাই শেখায়। তাই এখনই সময় এসেছে ইসলামকে আচার সর্বস্ব ধর্ম হিসেবে গ্রহণ না করে পরিপূর্ণ জীবনবিধান হিসেবে গ্রহন করার। আমাদের উচিত রাষ্ট্র থেকে ব্যক্তি সবজায়গায় ইসলামকে প্রয়োগ করার যাতে করে আমরা ইহকাল ও পরকাল উভয় জায়গায় সফল হতে পারি।

আল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে হেদায়াত দান করুক। আমিন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.