আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি পরিপূর্ণ আজাইরা পোস্ট!

এই নিকটা সেইফ। তারমানে আমি কিছু পোস্ট করলে সেটা প্রথম পাতার কিছু জায়গা দখল করবে। কিছুটা খুশী হবার কথা থাকলেও আমি খুশী হতে পারছি না। কারণ প্রথম পাতায় আমার একটি অখাদ্য টাইপের লেখার জায়গা দেয়া মানে অন্য আরো একটি ভালো লিখা প্রথম পাতা থেকে সরে যাওয়া। তাই বিজ্ঞ ব্লগারদের কাছে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

ব্লগার বিষয়ে আমার ধারণা হলো, "প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয় কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না"র মত। নিক থাকলেই ব্লগার হওয়া যায় না। ঘটে কিছু মালও থাকতে হয়। আফসুস আমার ঘট এখনো ব্রান্ড নিউ। প্রচুর স্পেস খালি আছে।

ভাড়া দেয়ার ব্যবস্থা থাকলে দিতাম। সে ব্যবস্থা যেহেতু নাই তাই আমি আবারও লজ্জিত। এতক্ষন ধরে একটা ভূমিকা লিখার কারণ হল আপনাদের জানানো যে আমি সেইফ! বইমেলায় যখন প্রথম যাই তখন ২০০৮ সাল। আমি ঢাকায় আসার পরে এটা তৃতীয় বইমেলা। কিছুক্ষন ঠেলাঠেলি করে তারপর চলে গিয়েছিলাম।

ভীড় মারাত্মক বেশী। একটু তাড়াহুড়াও ছিল। একটা ফ্রেন্ডকে উত্তরায় পৌছে দিতে হবে। মেয়েটাকে ফ্রেন্ড বলা উচিত হচ্ছে না। লতায়পাতায় ফ্রেন্ড।

সন্ধ্যায় শাহবাগ থেকে বাসে করে গেলাম উত্তরা। অনেক সময় লেগেছিল যেতে। আশ্চর্য! এই সময়টার মধ্যে মেয়েটা আমার সাথে একটা কথাও বলল না। কি জঘন্য অবস্থা। শুধু বাস থেকে নামার আগে বলল এখানে নামব।

আমি হতাশ চোখে কেবল একবার তাকালাম। -তুমি যে কথা বলতে পারো সেটাতো ভুলেই গেসিলাম! একটু হালকা রসিকতা করলাম আরকি। করেই বুঝলাম, বিরাট ভুল করে ফেলেছি। কিছু মানুষের রসিকতা ধরার শক্তিও হয়তো থাকে না। উত্তরায় একটা ওম্যানস মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজ আছে।

তার গন্তব্য সেখানেই। -রিকশা ঠিক করে দেব? নাকি আমিও যেতে হবে? -যাওয়া লাগবে না। এটুকু বলেই মেয়েটা গটগট করে হেটে চলে গেল। আমার হাতটা অটোমাটিক পকেটে ঢুকে গেল। লাইটারটা যে কোন পকেটে রাখসি? ডানদিকে নাকি বামদিকে? কোনটাতেই নাই।

বুকপকেটে ছিল। সিগারেটটা শেষ হওয়া পর্যন্ত দাড়িয়ে মেয়েটার চলে যাওয়ার রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। নিজেকে ইতর শ্রেনীর কোন প্রাণী মনে হচ্ছে। ধুর নির্ঝরের কথা শুনাটাই উচিত হয় নাই। তার অনুরোধেই মেয়েটাকে এখানে পৌছাতে এসেছি।

হারামজাদারে কইষ্যা দুইটা ঝাড়ি মারতে হবে। এই ঘটনা ফেব্রুয়ারি মাসের। ঐটাই ছিল আমার ঢাকাবাসের শেষ মাস। তল্পিতল্পা গুটিয়ে নিজ বাড়িতে চলে আসলাম। কোথাও চান্স পাই নাই।

সরকারী কলেজে ডিগ্রীতে ভর্তি হয়েছি। একদিনও কলেজে যাই নাই। কবে ক্লাস হয় কোন খবরই রাখলাম না। মোটামুটি শীতনিদ্রা টাইপের একটা অবস্থায় আছি। কিভাবে যে একটা বছর কেটে গেল সেটা অন্য কোন পোস্টে লিখে রাখব।

বইমেলা ২০০৯ শুরু হল যথানিয়মে। যথানিয়মে আমার পকেটও খালি। আমাদের এখান থেকে ঢাকা যেতে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘন্টা সময় লাগে তাই সকালে বা দুপুরে গিয়ে রাতের মধ্যে চলে আসা কোন ব্যাপারই না। কিন্তু ব্যাপার হল বাসভাড়া। বাসভাড়ার কোন ব্যবস্থা নাই।

আর বাসভাড়া দিয়ে গেলে বই কিনার ব্যবস্থা নাই। এই সমস্যার একটা ইউনিক সমাধান হল। ইউনিক না বলে সিল্ক লাইন সমাধান বলা ভালো। এক পরিচিত বড় ভাই সিল্ক লাইন বাসের সুপারভাইজর। তার সাথে কন্টাক করা হল।

সে একটা টাইম দিবে। আর বাসটা চিটাং থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে কোন এক জায়গায় থামিয়ে আমাদের দুইজনকে পিক করবে। আমরা দুই ফ্রেন্ড যাচ্ছিলাম। আহ নিশ্চিন্ত। যাওয়ার ভাড়া বেচে গেল।

বইমেলায় যখন পৌছলাম তখন বোধহয় পাচটারমত বাজে। ঠিক মনে নাই সময়টা। আমার তেমন বই পড়ার অভ্যাস নাই। অল্প কয়েকটা বই কিনলাম। এর মধ্যে হুমায়ূন স্যারেরই ছিল তিনটা।

ছোট ভাইয়ের জন্য আরো দুই একটা কিনলাম। বাজেট শর্ট হলে যা হয় আরকি। ঢাকায় যাওয়ার পরে আবার আরেক ফ্রেন্ডের সাথে মিট করলাম। মেলায় ঘুরাঘুরি করতে করতে সময় শেষ। আবারতো ফিরে যেতে হবে।

তিনজনের পকেটে সব মিলিয়ে বোধহয় একশ টাকাও আর নেই। তবে আমরা সেটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত না। কারণ ফিরে যাওয়ার ফ্রি ব্যবস্থাও করাই ছিল। লিখতে ভুলেই গেসি। বইমেলায় যাবো আর লেখকদের অটোগ্রাফ না নিয়ে চলে আসব তাতো হয় না।

ঐদিন মেলায় কোন কারণে লেখকের আকাল দেখা গিয়ে ছিল। সন্ধ্যার কিছু আগে আনিসুল হক আসলেন। বলপয়েন্ট বইটাতে উনার একটা অটোগ্রাফ নিয়ে আসলাম। ঐটাই ছিল আমার শেষ বইমেলা দর্শন। তারপরে আর কখনোই যাওয়ার সুযোগ হয় নি।

প্রতিবছর জানুয়ারির ত্রিশ অথবা একত্রিশের দিকে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়। আর এখন যে জায়গাটাতে থাকি এখান থেকে দিনে গিয়ে দিনেই ঢাকা থেকে ফেরত আসা প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। তাই আর যাওয়াও হয় নাই। এইবারও বোধহয় যাওয়া হবে না। পোস্ট শেষ! লেখা পড়ে যদি কেউ বিরক্তবোধ করেন তাহলে অতি অবশ্যই গালি দিয়ে যাবেন।

মাইন্ড করব না। আমি ডোন্ট মাইন্ড টাইপের লোক। কষ্ট করে পড়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.