আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্লাস টেস্ট

তেরোর ব্লগ মানেই হাবিজাবি !! ক্লাস টেস্ট পিছানো আমাদের ছোটখাটো আর্ট বলা যায়। আরো মজার বেপার হলো যে আমি যেই স্কুল কলেজে ভার্সিটিতেই গেলাম সেখানকার সবারো একই রোগ। ক্লাস টেস্ট পিছানো। আমার স্কুলে ভালো করে জ্ঞান হয় ক্লাস এইটে থাকতে। না মানে এর আগে আমি বেশি ভালো ছিলাম কিনা?!! বোকাসোকা ভালো ভালো মানুষ।

এইটে গিয়ে বদমাইশি জীবনের হাতেখড়ি। তখন থেকেই ঠিক সময়ে পরীক্ষা দিবো না। কত সংগ্রাম কত লজিক এইসব দিয়ে আমরা স্যার ম্যাডামকে পটানোর আপ্রান চেষ্টা চালাতাম। এক ম্যাডামকে অবশ্য বললেই হইতো যে ম্যাডাম আপনি কত্ত সুন্দর। আজকে তো আরো সুন্দর লাগছে।

শাড়িটা কিন্তু সেই রকম। সাথে ম্যাচিং লিপস্টিক। মারহাবা মারহাবা। অবশ্য ম্যাডাম কেনো জানি আমাদেরকে আলাদা ভালো নজরে দেখতো। দরকার হলে মাইর খাবো তাও পরীক্ষা দিবো না।

এমন অনেক বার হয়েছে যে আমরা হাত বাড়ায় বসে আছি। দরকার হলে স্কেল নিয়ে চলে আসছি। স্যার আপনাকে কোনো কষ্ট করতে হবে না। তাও পরীক্ষা দিবো না। এরপর প্রমিজ স্যার নেক্সট যেদিন বলবেন অইদিনই দিবো।

তবে প্রমিজ অনেকসময়ই টিকতো না। দেখা যেতো আমাদের প্রিপেরশন অনেক ভালো ছিলো তাও ক্লাসের কেউ কেউ বলছে পরীক্ষা দিবো না। আমাদের পায় কে। আমরাই আগে লাফাইতাম। না !! এক্সাম অফ।

দিবো না। একবার এক কেমেস্ট্রি পরীক্ষা । আমরা বললাম স্যার দিবো না। বদলে না হয় জনে ২টা স্কেলের বাড়িই খাইলাম। এই প্রসঙ্গে বলে রাখলাম স্কুলে মাইর কম খাই নাই।

আর মাইর খাইতে খাইতেও বেকুবের মত কেলায় কম হাসি নাই। কিন্তু এক ফ্রেন্ড বাগড়া দিলো। সে পরীক্ষা দিবে। আমাদের সে কি রাগ !! যদিও এখনো সেই ফ্রেন্ড আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। স্যার তার পরীক্ষা নিলো আর আমাদের দিলো স্কেলের বাড়ি।

স্যার শেষের দিকে বললো যে আমি ৫ মিনিট আগে গেলাম। তোমরা ওর খাতা নিয়ে আমাকে জমা দিয়ে আইসো। স্যার যাইতে না যাইতেই আমার আরেক ফ্রেন্ড ওর খাতা নিয়া টানাটানি। তোমার পরীক্ষার টাইম শেষ। খবরদার আর লেখবা না।

একলা একলা এক্সাম দেয়ার প্রতিশোধ নিলো আর কি। তেমনি এক খুব বৃষ্টির পরের দিন। আমাদের আলোচনা শেষ। পরীক্ষা পিছানো হবে। একজনকে জিজ্ঞাসা করলো,"কি ব্যাপার আপনি এক্সাম দিবেন না কেনো?" "স্যার যা বৃষ্টি।

বাসায় পানি ই উইঠা গেছে। বই এর পাতা যে কোথায় ভাইসা গেছে জানি না। " আমাকে্‌, "স্যার কাজিনের বাসায় পানি উঠছে। সব আমাদের বাসায় চলে আসছে। পড়া হয় নাই।

" "তা ওরা আসছে। আপনি তো যা্ন নাই। আপনি পড়েন নাই কেন?" স্যারের জিজ্ঞাসা। "স্যার কি যে বলেন। কাজিন আসছে গল্প করবো না?" আরেকজনকে, "স্যার আমাদের বাসায় রাস্তায় হাটু পানি।

" কিন্তু সে ভুলে গেছে স্যার ও ঐ এলাকাতেই থাকে। ঐখানে পানি উঠে নাই। "ঐ আপনি না জজ সাহেবের বাড়িতে থাকেন। ঐখানে তো জীবনেও পানি উঠে না। " "না মানে......" আবার বায়োলজী স্যার।

তার দেয়া কোনো তারিখে আমরা পরীক্ষা দিয়েছিলাম কিনা আমার মনে নাই। ও হ্যা একদিন নিয়েছিলো। সালোকসংশ্লেষনের সংজ্ঞা আর ধাপসমূহ। আমি শুধু সুন্দর করে সংজ্ঞা লেখছিলাম। ফলাফল নাম্বার ১-২ আর ২টা টাটকা স্টিলের স্কেলের বাড়ি।

উনি আমাদের কখনো মারেন নাই। আমাদের অতিরিক্ত বাঁদরামীতে অসহ্য হয়ে এই ফলাফল। কলেজে ক্লাস টেস্ট হইতোই না। আহা সুখের জীবন ছিলো একটা। কিন্তু ভার্সিটিতে গিয়ে আমার মেজাজ এত খিঁচড়ায় গেলো আর কি বলবো।

সব দোষ বিটিভির নাটকের। আহা !! কি দেখাইতো। ভার্সিটিতে পড়তে হয় না। সারাদিন শুধু টি.এস.সি তে আড্ডা দেয়া যায়। আর আইসা দেখি ক্লাস আর ক্লাস।

ল্যাব আর ল্যাব। ক্লাস টেস্ট আর ক্লাস টেস্ট। তাও আমরা ক্লাস টেস্ট পিছানোর নানান ধান্দা করেই যেতে লাগলাম এবং এখনো করেই যাচ্ছি। স্যার রা ভুলে কোনো সরকারী ছুটির দিনে পরীক্ষার তারিখ দিলে আমরা এমন ভাব করি যে আমরা তো জানিই না। বলি জ্বী স্যার দেন দেন।

এই তো কয়েকদিন আগেই, এক ছুটিতে ভুলে স্যার পরীক্ষার তারিখ দিলো। পরে সেটা পিছায় দেয়া হইলো বৃহস্পতিবার, পরে ঐটাও আমরা নানান লজিক দিয়ে পিছায় দিলাম শনিবারে। এরপর বললাম শনিবার বলে বি.এন.পি এর বিক্ষোভ সমাবেশ। তাই আমাদের যাতায়াতে অনেক সমস্যা হবে। স্যারকে পরীক্ষার আগের রাতে ১১ টার দিকে ফোন দিয়ে পোলাপান পটায় ফেললো।

ঐদিন ও হইলো না। ফলাফল এখনো ঐ পরীক্ষা ঝুলছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.