চতুর্থ ওভারের শেষ বলটা খেলতে যখন ক্রিজে এলেন, শ্রীলঙ্কার রান ১ উইকেটে ২৩। ৪৯ ওভারে ফাঙ্গিসোর করা পঞ্চম বলে ডুমিনির হাতে ক্যাচ দিয়ে যখন ফিরছেন, স্কোরবোর্ডে ৫ উইকেটে ৩০৩। কুমার সাঙ্গাকারার নামের পাশে ১৬৯! ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার তৃতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস।
মাঝের এই সময়টা দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের নিয়ে নিছক ছেলেখেলাই করলেন সাঙ্গাকারা। কখনো পিটারসনকে লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারছেন, কখনো মরিস-ম্যাকলারেনদের বল গড়িয়ে যাচ্ছে মিড অন-ফাইন লেগ দিয়ে।
ছক্কা খেয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকাচ্ছেন ফাঙ্গিসো!
শেষ পর্যন্ত সাঙ্গাকারা থামলেন। কিন্তু ততক্ষণে রেকর্ড বইয়ের অনেক কিছু বদলে গেছে। দেশের মাটিতে এত দিন ওয়ানডের সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক অরবিন্দ ডি সিলভার (১৪৫, কান্ডি, ১৯৯৬) নাম পেছনে পড়ে গেছে। ওয়ানডেতে নিজের আগের সর্বোচ্চ ইনিংসটাও (অপরাজিত ১৩৮) হয়ে গেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ! এখন পর্যন্ত ৬৮০ রান নিয়ে এ বছর এক দিনের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যানের তালিকা থেকে ইয়ান বেলকে সরিয়ে উঠে এসেছেন দুইয়ে (সবার ওপরে মিসবাহ-উল হক, ৬৯২)।
এতকিছুর পরও এই ম্যাচে জিততে হলে দক্ষিণ আফ্রিকার কাউকে ‘প্রায় সাঙ্গাকারা’ হওয়া লাগত।
হাশিম আমলা ছিলেন না। ইনগ্রাম, ডুমিনি বা ডি ভিলিয়ার্সদের কেউ সেটা পারেননি। লঙ্কানদের ৩২১ তাড়া করতে নেমে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা তাই থেমে গেল ১৪০ রানে। ১৮০ রানের জয় নিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০-তে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। ৩৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমে এর চেয়ে ভালো আর কী উপহার চাইতে পারতেন শ্রীলঙ্কান উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান!
সাঙ্গাকারার এই তাণ্ডবে তাঁর মতো আগ্রাসী না হলেও নীরবে সঙ্গ দিয়ে গেছেন উপুল থারাঙ্গা (৪৩) ও মাহেলা জয়াবর্ধনে (৪২)।
তবে চোটে জর্জরিত দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং লাইনআপকে বাগে পেয়ে এদিন এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন সাঙ্গাকারা, তাঁর পাশে বাকি সবাই ম্লান। ঝড়টা সবচেয়ে বেশি গেছে ডানহাতি দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ক্রিস মরিসের ওপর দিয়ে। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নামা মরিস ৯ ওভারে রান দিয়েছেন ৮০, সম্বল কেবল তিলকরত্নে দিলশানের উইকেটটি। ৪৫তম ওভারের শেষ বলে ম্যাকলারেনের বলে একবার বোল্ড হয়েছিলেন সাঙ্গাকারা, কিন্তু নিয়ম ভেঙে ৩০ গজের বাইরে ৫ জন ফিল্ডার থাকায় সেই বলে ‘নো’ ডাকেন আম্পায়ার। সেই মুহূর্তে ১৩৫ রানে থাকা সাঙ্গাকারা পরে যোগ করেছেন আরও ৩৪ রান! ক্রিকইনফো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ৩২০/৫ (সাঙ্গাকারা ১৬৯, থারাঙ্গা ৪৩, জয়াবর্ধনে ৪২; মরকেল ২/৩৪)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩১.৫ ওভারে ১৪০ (পিটারসেন ২৯, পিটারসন ২৯; হেরাথ ৩/২৫, পেরেরা ৩/৩১)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ১৮০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কুমার সাঙ্গাকারা।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে সেরা ৫
১৮৯ সনাৎ জয়াসুরিয়া ভারত শারজা ২০০০
১৭৪* উপুল থারাঙ্গা ভারত কিংস্টন ২০১৩
১৬৯ কুমার সাঙ্গাকারা দক্ষিণ আফ্রিকা কলম্বো ২০১৩
১৬০* তিলকরত্নে দিলশান ভারত হোবার্ট ২০১২
১৬০ তিলকরত্নে দিলশান ভারত রাজকোট ২০০৯।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।