আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুত্তা সমাচার

১)বাংলাদেশে বুড়া বা বয়স্ক শ্রেনীর লোকজন হয় ছেলের সাথে থাকে নতুবা মেয়ের সাথে থাকে নতুবা একা থাকে কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে বুড়া বুড়িরা থাকে তাদের কুত্তা বিলাই এর সাথে ছেলে মেয়েরা ফাদারস ডে মাদারস ডে আর ইস্টার ক্রিসমাসে কার্ড আর গিফট ভাউচার পাঠিয়েই দায়িত্ব শেষ। বুড়াদের সাথে পথে ঘাটে দেখা হলে তিন দিন হ্যালো হাউ আর ইউ শেষ করে চতুর্থ দিনে এসে বলবে আমি এই এলাকায় বারো বছর ধরে থাকি তুমি বুঝি নতুন এসেছো , আমার বাসা ৫ নম্বরে , আই লিভ উইথ মাই ডগ/পাপী'স/ক্যাট। এইসব কুত্তাদের জন্য এই দেশে আবার স্কুল আছে ,ডাক্তার আছে, হোটেল আছে। যাদের জোড়া কুত্তা/বিলাই থাকে মানে মাম এন্ড ড্যাড কুত্তা থাকে তাদের আবার জন্ম নিয়ন্ত্রনের ব্যাবস্থাও আছে এইসব ক্ষেত্রে সাধারনত ড্যাড কুত্তা মশায় ডাক্তারের কাচির নিচে পড়ে স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহন করতে বাধ্য হয়। কুকুর বিড়ালদের জামা কাপড় খাবার দাবারের জন্য শপিং সেন্টারগুলিতে পেট শপ নামের দোকান আছে আর বড় চেইন শপ গুলিতে একটা দুইটা আইল বরাদ্দ থাকে পেট দের জন্য।

আর এদেরকে সকাল সন্ধায় হাটতে বা বেড়াতে নিয়ে যেতে হয়। বেড়াতে যাবার বা রাস্তায় কুত্তা নিয়ে হাটার একটা তরীকা আছে এই দেশে সেটা হলো এক হাতে আপনার কুত্তা রাখবেন আরেক হাতে একটা ব্যাগ রাখবেন যাতে কিছু পলিথিন ব্যাগ থাকবে কুত্তা যায়গায় যায়গায় বড় কাজ সারলে পিলিথিন ব্যাগে ভরে নিজের ব্যাগে নিয়ে নিবেন পরে ডগ পু ডাম্প করার যেই বিন থাকে সেখানে ডাম্প করে দিবেন। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে এটা চরম হাসির বিষয় হলেও এইখানে কুত্তা বড় কাজ সারলে এবং আপনি সেটা না উঠালে কাউন্সিল ভেদে টিনের বাক্সে মিনিমাম একশ ডলার থেকে পাচ'শ ডলার জরিমানা সেই সাথে কাউন্সিলের পরিচালিত ডগ স্কুলে আপনার বেয়াদব কুকুরকে আদব শেখানোর জন্য তিন দিন সারাদিন হাজিরা দিতে হবে সেখানে আপনার কুকুর ফেল করলে আরো দুই দিন হাজিরা বাড়বে। পাবলিক বিচে কুকুরের জন্য টয়েলট এবং শাওয়ার এর ব্যাবস্থা আছে। আর হ্যা বাড়িতেও কুকুর বেড়ালের জন্য টয়েলট আছে এবং তারা সেখানে ছাড়া অন্য কোথাও কাজ সারে না।

আর ঘুমানোর জন্য আছে আলাদা বিছানা। আমার এক বন্ধু পলের এক কুকুর আছে যে কিনা পল বাসায় না থাকলে তার বিছানায় উঠে শুয়ে থাকে আর পল বাসায় আসার সাথে সাথে সে এক দৌড়ে গেইটের কাছে যেয়ে লেজ নাড়তে থাকে আর ভাবখানা এমন যেনো হ্যালো আমি তোমার সামনেই আছি তোমার বিছানার আশে পাশেই যাই নি। আর ওইদিকে বিছানা ভরতি কুকুরের লোমে। সপ্তাহ কয়েক আগে এক ফ্রাইডে নাইটে ক্লাবে মদ খেয়ে চুড় হয়ে বাসায় যেয়ে কাপড় না চেঞ্জ করেই সটান বিছানায় পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে ফ্রিজে খাবার দাবার কিচ্ছু নাই এমনকি নাস্তা করার জন্য দুধ বা ডিম কিছুই নাই ত সাথে সাথে পল গাড়ীর চাবি নিয়ে পাশে ক্যালটেক্স এর পাম্প এ গেলো দুধ ডিম আর ব্রেড কিনতে সেখানে কাউন্টারে টাকা দিতে যেয়ে খেয়াল করলো এটেন্ডেন্ট মেয়েটা তার দিকে যেনো কেমন কেমন করে তাকাচ্ছে তার তাকানো দেখে পল ভাবলো কালকে রাতে গাল বা ঘার লাল টাল করে দেয় নাই ত আবার , নাহ সেই সম্ভাবনা নাই তারপরে ভাবলো শনিবার দিন সাত সকালে পোস্ট অফিস খোলা নাতো আবার কিন্তু মেয়ের সামনে ওইদিকে হাত দিয়ে টেস্ট করতে গেলে মেয়ে না আবার ভেবে বসেযে তারেই আহবান করতেছে, নাহ তার চাইতে টয়লেটে গিয়ে দেখলেই হয় যেই ভাবা সেই কাজ করতে গিয়ে দেখে পল এর সারা শরীর কুকুরের লোমে ভরা আর পোস্ট অফিসের সামনেও এক দলা লোম লেগে আছে ভাবখানা এমন যে সে সারারাত কুত্তার সাথে কাটিয়েছে। ২) এই দেশের লোকদের এত কুকুর এত যত্ন আত্তি থাকা সত্ত্বেও অনেকেই আছেন যারা কুকুর পছন্দ করেন না।

আমাদের টম এমনই এক লোক যে কিনা রিতিমত ডগ হেইটার আর ডগিরাও কেমনে কেমনে জানি টমরে দেখলে বুঝে যায় যে সে এক কালে মিটার রিডার ছিলো আর সাথে সাথে শুরু হয় টম এন্ড জেরী। অতী সম্প্রতি এক শনিবারে পল ঠিক করলো সে টম এর এই বাজে ধারনা ভাংগাবে সেই হিসেবে সে তার শান্ত শিষ্ট বিচ জেনী কে নিয়ে আসলো কাজে আর টম এর সাথে জেনী কে পরিচয় করিয়ে দিলো টম যেদিকে যায় জেনী সেদিকে লেজ নাড়তে নাড়তে ছুটে যায় লাঞ্চ টাইম আসতে আসতে জেনী টমের কোলে আর টম তাকে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করছে এমন সময় আমাদের আরেক বন্ধু রব আসলো দেখতে আমরা কি করছি সে এসে গুডায় মায়ট বলতেই জেনী ঘেউ ঘেউ ঘেউ ঘেউ করে চিৎকার করে রব এর সামনে আক্রমনাত্মক পজিশন নিয়ে দাড়ীয়ে আর টম চেয়ার টেবিল উলটে ফাকেন ডিক হেড ডগ করতে করতে উলটা দিকে দৌড়। ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা কয়েক সেকেন্ড বাকহারা হয়ে পরে হাসতে হাসতে শ্যাষ। পল আমাদের হাসি শুনে এসে সেও যোগ দিলো। মূল ঘটনা হলো পল এর বউ নাই সে থাকে একা , বন্ধু বান্ধব কেউ এলে দরজায় নক করে গুডায় মায়ট বলে আর অপরিচিত লোক হিসেবে জেনী ঘেউ ঘেউ করে সামনে যেয়ে দাঁড়ায় পরিচিত হলে তেমন কিছু বলে না উলটা পলের কাছে যেয়ে ঘেউ ঘেউ করে।

সকালে জেনী আমাদের সাথে পরিচিত হলেও রব সেই সময় ছিলো না তাই সে তার কাছে অপরিচিত বা কমপ্লীট স্ট্রেঞ্জার সে এসে টমকে কিছু বলার সাথে সাথে জেনী ছুটে যায় টমকে রক্ষা করতে আর টম ভাবে উল্টাটা। যাই হোক এর পর থেকে টমকে দেখলেই আমরা সবাই গুডায় মায়ট বলি এমনকি ই-মেইলেও আমরা তাকে গুডায় মায়ট লিখি বিনিময়ে টম কিছু বিশেষ এডজেক্টিভ ব্যাবহার করে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।