আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুলিশের বুটের তলে চলে যাচ্ছে মানবাধিকার

হট নিউজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পুলিশ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ইহাদের লালায় বিষ আছে। পুলিশকে এই বিষ থেকে মুক্ত করে, সুস্থ করে, পুলিশের মানসিকতার মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে, মানবাধিকার নিশ্চিত করে, মানবাধিকারের প্রতি পুলিশকে শ্রদ্ধাশীল করে, একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী করে তাদের গড়েপিটে তোলার জন্যই জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) গ্রহণ করে পুলিশ সংস্কার কর্মসূচি। পুলিশ বীরদর্পে বুক ফুলিয়ে জাহির করেছে, তাদের হাতে লাঠি চুমু খাওয়ার জন্য নয়। সেহেতু বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর চালিয়েছে নির্মম নির্যাতন। বহু জায়গায় হাড়-হাড্ডি ভেঙে দিয়েছে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের।

অপহরণ বাণিজ্যে নাম লিখিয়ে কোথাও কোথাও হয়ে উঠেছে ধর্ষক। মিথ্যা মামলা দেয়ার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই তারা। ৬০/৭০ দিনের রিমান্ড চাওয়াও হয়ে পড়েছে ডাল-ভাত। দেখা যাচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে পুলিশ এখন অনেক বেশি আগ্রাসী এবং মারমুখী। প্রতিদিন একটু একটু করে তাদের বুটের তলে চলে যাচ্ছে মানবাধিকার।

এই অবস্থায় দেশের মানবাধিকার সংগঠন, কর্মী ও বুদ্ধিজীবীরা পিআরপির মানবাধিকার ইস্যুটি স্রেফ বুলিসর্বস্ব বলে মনে করছেন। অর্থাত্ প্রকল্প চালু হওয়ার ৬ বছর পর এখন অনেকেই বলছেন এই প্রকল্প মূল লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে এর যৌক্তিকতা নিয়ে। সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশ এখন চলছে নৃশংসতার মহামারী। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে গত আড়াই বছরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র্যাব-পুলিশের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৪১৯ জন।

আর নিছক সন্দেহে অথবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে নৃশংস গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে ৩৩৬ জন মানুষ। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন শত শত নারী। বখাটে সন্ত্রাসীদের হিংস্র ছোবল থেকে বাঁচার জন্য আত্মহত্যা করে প্রাণ ধারণের গ্লানি জুড়িয়েছেন ডজন ডজন মেয়ে। যে কাউকে অপরাধী দাবি করে হত্যা করাই যেন এখন প্রচলিত রীতি। সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে পদে পদে।

কান পাতলেই এখন দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে শোনা যায় ফ্যাসিবাদের নগ্ন পদধ্বনি। এই রকম উদ্বেগাকুল, আতঙ্কিত পরিবেশে পুলিশকে মানুষ করে তোলার কাজটি সত্যি জরুরি ছিল। ঔপনিবেশিক আমলের মতো পুলিশ হিংস্র নয়। পুলিশও মানুষকে শ্রদ্ধা করে। মানবাধিকার রক্ষার জন্য বুক টান করে দাঁড়ায়।

ইউএনডিপি এই লক্ষ্যেই ২০০৫ সালে গ্রহণ করে পুলিশ সংস্কার প্রকল্প (পিআরপি)। প্রথম পর্বে ব্যয় (২০০৯ পর্যন্ত) ছিল ১২৫ কোটি টাকা। দ্বিতীয় পর্বে চলছে ২১৭ কোটি টাকার বাজেটে ভর দিয়ে। এটা চলবে ২০১৪ পর্যন্ত কিন্তু পুলিশ যথা পূর্বং তথা পরং। যে পুলিশকে প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, মানবাধিকার সুরক্ষা, ন্যায় বিচার প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি করে আইনের শাসনকে সমুন্নত রাখুন, যাদের বলা হচ্ছে আইনের শাসনের ওপর ভিত্তি করে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করুন, রাজনীতি প্রভাবমুক্ত হয়ে নিজেদের সত্যিকারের ‘জন-বান্ধব’ ভাবমূর্তি গড়ে তুলুন, সেই পুলিশ ট্রেনিং ক্লাস থেকে বেরিয়ে এসেই লাঠিসোটা নিয়ে হামলে পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.